ঢাকা ১৮ই এপ্রিল, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৪৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৫, ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক
একেতো মেলার নামে অতীত ‘প্রতারণা’ ও ব্যবসায়ীদের টাকা লোপাট, অন্যদিকে গণক্ষোভ। তাই এবার জমছে না মেলা বাবলু’র মেলা ব্যবসা। বিক্রি হচ্ছে না স্টল। খালি থেকে যাচ্ছে নগরের উপশহরস্থ মেলার মাঠ। তাই নির্ধারিত তারিখে মেলার উদ্বোধন করতে পারেননি বাবলু। ব্যবসায়ীদের পানে চেয়ে অপেক্ষার প্রহর গুণতে হচ্ছে মেলা ব্যবসায়ী এসএম মঈন খান বাবলুকে। সিলেট নগরের ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকা শাহজালাল উপশহর ই-বøক সংলগ্ন খেলার মাঠে মাসব্যাপী ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প পণ্যের মেলা-২০২১ আয়োজন করেন বাবলু।
কাগজে কলমে মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান ‘তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটি (গ্রাসরুটস) হলেও পর্দার আড়ালে এ মেলার আয়োজক মঈন খান বাবলু। ‘তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটি (গ্রাসরুটস) একটি বাহন মাত্র। এর আগে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের মেলাসহ বিভিন্ন মেলা পরিচালনা নিয়ে বিতর্কিত হয়ে উঠেন বাবলু।
২০১৭ সালের ‘তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটি নামে শহরতলী লাক্কাতুরায় মেলার আয়োজন করেছিলেন বাবলু। স্টল বিক্রি করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা। কিন্তু মেলা জমে উঠেনি এবং ব্যবসাও হয়নি। মেলায় শুধু ‘দৈনিক প্রভাত সুরমা’ নাম দিয়ে র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠান নামে চালিয়েছিলেন রমরমা জুয়া। লটারী জুয়ার মাধ্যমে কাড়ি কাড়ি টাকা আয় করেছিলেন আয়োজক বাবলু। ফলে সেই মেলায় স্টল বরাদ্দ নিয়ে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয় বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। আর এ কারণে দীর্ঘপ্রায় ৫ বছর ধরে মেলা জগৎ থেকে বাইরে থাকেন বাবলু। এবার ‘তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটি নামে মেলার আয়োজন করে স্টল সাজিয়ে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠগুলোর মন জয় করতে চাইলেও সেই ৫ বছর আগের ক্ষতির কথা ভুলে যায়নি প্রতিষ্ঠানগুলো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যসা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ জানায়, বাবলুর আয়োজনের উপর আমাদের আস্তা নেই। তিনি মেলার নামে ব্যবসায়ীদের স্টল বরাদ্দ দিয়ে টিকেট বিক্রি, জুয়াসহ নানা অপকর্মের মাধ্যমে টাকা আয় করে থাকেন। আর ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
অন্যদিকে বৈশ্বিক মহামারি করোনা এবং পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে দুই মসজিদের মধ্যখানে মেলার নামে গানবাজনা ও জুয়ার আসর বসানোর প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন উপশহরবাসী। এতে সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্রমশ ক্ষোভ বেড়েই চলছে স্থানীয় জনতার। এ ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে যেতে পারে বহু অঘটন। এলাকাবাসী এ মেলার প্রতিবাদে মানববন্ধন-সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। মেলা বন্ধ না হলে আরো কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারী দিয়েছেন। এসব কারণে মেলার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে স্টল বরাদ্দ নিতে চাচ্ছে না অনেক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। ফলে গত ১২ মার্চ মেলা উদ্বোধনের কথা থাকলেও নির্ধারিত দিন ও তারিখে মেলার উদ্বোধন করতে পারেননি বিতর্কিত মেলা বাবলু।
এদিকে মেলা নিয়ে দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠে বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) “স্বাস্থবিধি চ্যালেঞ্জ করে উপশহরে বাবলু’র মেলা : জনমনে ক্ষোভ” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এ ব্যপারে মেলার আয়োজক মঈন খান বাবলু’র বক্তব্য ও প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি কোন বক্তব্য না দিয়ে এ প্রতিবেদককে মামলার হুমকি দেন। সব মিলিয়ে চরম হতাশ মেলার আয়োজক মঈন খান বাবলু ওরফে মেলা বাবলু।
মেলার ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেট চেম্বার অব কমার্স-এর সাবেক সভাপতি জুন্নুন খান মাহমুদ বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে যেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর সকল আয়োজন সরকারিভাবে সংকোচিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনার প্রকোপ থেকে দেশের মানুষকে রক্ষায় সবধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন এবং ব্যবসায়ীসহ ক্ষতিগ্রস্থ জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, সেখানে যারা মেলার আয়োজন করছে বা যারা মেলার অনুমতি দিচ্ছে, সকলেই সরকারের ভাবমূাির্ত ক্ষুণœ করার হীন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে বলে আমি মনে করি।
সম্পাদক ও প্রকাশক : জে.এ কাজল খান
Design and developed by syltech