ঢাকা ১লা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:২১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৯, ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলেটে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার নিরাজ কুমার জেসওয়াল বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র। আমাদের দুই দেশের জীবনধারা ও সংস্কৃতি যেমন এক, তেমনি দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য সম্পর্কও অত্যন্ত চমৎকার। তিনি বলেন, সিলেটের আমদানিকারকরা ভারতের মেঘালয় ও আসাম থেকে কয়লা, পাথর ইত্যাদি রো-ম্যাটেরিয়াল আমদানি করে থাকেন, কিন্তু সমগ্র ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের জন্য আরো অনেক পণ্য আছে। সিলেটের আমদানিকারকগণ ভারত থেকে এসব পণ্য আমদানি করে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের আরো প্রসার ঘটাতে পারেন। তিনি জানান, শেওলার বিপরীতে অবস্থিত ভারতের সুতারকান্দি এলসি স্টেশনের উন্নয়ন কাজ অচিরেই শুরু হবে, এতে দুই দেশের আমদানি-রপ্তানিকারকগণের সুবিধা হবে।
সোমবার বিকাল ৪টায় চেম্বার কনফারেন্স হলে দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র নেতৃবৃন্দের সাথে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে সিমেন্ট ও খাদ্যদ্রব্য ভারতে রপ্তানি হয়, বাংলাদেশী রপ্তানিকারক ভারতে প্লাস্টিক পণ্যও রপ্তানি করতে পারেন। তিনি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বিরাজমান সমস্যাবলী সমাধানে আগামীতে দুই দেশের আমদানি-রপ্তানিকারক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা আয়োজনের প্রস্তাব করেন। এছাড়াও তিনি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে তার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
চেম্বার সভাপতি তাহমিন আহমদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তাগণ বলেন, বাংলাদেশে ডলার সংকটের কারণে বর্তমানে সিলেট থেকে এলসি ইস্যূ না হওয়ায় ভারত থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ রয়েছে, পাথর আমদানিও প্রায় বন্ধের পর্যায়ে। তাই বক্তাগণ ডলার এর পরিবর্তে রুপির মাধ্যমে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া থেকে এলসি ইস্যূ করে কয়লা, পাথর আমদানি চালু রাখার প্রস্তাব করেন।
বক্তাগণ আরো বলেন, প্রতিবছর ভারত থেকে বাংলাদেশে ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানির বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে মাত্র ১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য ভারতের রপ্তানি হয়ে থাকে। এই বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি পূরণ করে আমাদেরকে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সমতা বজায় রাখতে হবে। বক্তাগণ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধিতে বর্ডারের কাছাকাছি স্থানে কোয়ারেন্টাইন অফিস স্থাপন, ভারতীয় এলসি স্টেশন সমূহের কার্যক্রম সকাল ৯ টা থেকে শুরু করা, বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানিকারকগণকে ৫ বছরের মাল্টিপল ভিসা ইস্যূ এবং সুতারকান্দি এলসি স্টেশনে ব্যবসায়ী ও যাত্রীগণের মালপত্র চেকিং এর সময় সম্মানজনক আচরণ করার অনুরোধ জানান।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ সিলেট চেম্বার কার্যালয় সফরের জন্য ভারতীয় সহকারী কমিশনারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বৃহত্তর সিলেটে ১২টি ল্যান্ড কাস্টম স্টেশন রয়েছে। যা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বড় ভূমিকা পালন করে। এসব এলসি স্টেশনের মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্য সমগ্র বাংলাদেশে সরবরাহ করা হয়। তাই ভারতের নর্থ-ইস্ট ও সিলেটের মধ্যে শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্ক গড়ে তোলা খুবই জরুরী। তিনি দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রসারে জকিগঞ্জ-করিমগঞ্জ সীমান্তে এলসি স্টেশন সংলগ্ন স্থানে কুশিয়ারা নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ, মেঘালয়ের কয়লা আসামের অভ্যন্তর দিয়ে আমদানির অনুমতি প্রদান, ডাউকি ও সুতারকান্দি সহ ভারতের অন্যান্য এলসি স্টেশন সমূহের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং সিলেট থেকে আসামে কৃষিপণ্য আমদানির অনুমতি প্রদানের অনুরোধ জানান।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন- সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, পরিচালক আবু তাহের মোঃ শোয়েব, জিয়াউল হক, মুশফিক জায়গীরদার, মুজিবুর রহমান মিন্টু, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী (রাজিব), দেবাংশু দাস, কাজী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি শাহ আলম, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, জেলা প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি সাঈদ চৌধুরী টিপু, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুর রহমান রিপন, মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মোঃ আবুল কালাম, মোঃ জহির হোসেন, নিয়াজ মোঃ আজিজুল করিম, এস. এম. শায়েস্তা তালুকদার, দেবাশীষ চক্রবর্তী, মোঃ আবুল কালাম, সানজিদা খানম, আব্দুল হাদী পাবেল, জয়দেব চক্রবর্তী জয়ন্ত, নুরুল ইসলাম সুমন, শাহ আহমদুর রব প্রমুখ।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech