ঢাকা ৪ঠা জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:৩২ পূর্বাহ্ণ, মে ২৫, ২০২৩
আরিফ নির্বাচন না করায় আমাদের অনেক নেতাই মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন। তারা ‘ম্যাকানিজম’ করার সুযোগ পাননি। অতীতেও তাদের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এবারো তারা একই পথে হাঁটছিলেন। আরিফ রণে ভঙ্গ দেয়ায় তারা পিছু হটেছেন।’ মানবজমিনের কাছে এসব কথা জানিয়েছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি ও সিনিয়র নেতা বিজিত চৌধুরী। তিনি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতির পাশাপাশি জেলা ফুটবল কমিটির সদস্যও। সিলেট চেম্বার নির্বাচনে তিনি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের ঘনিষ্ঠজনও ছিলেন। বিগত দু’বার বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের কাছাকাছি থেকে নির্বাচন করেছেন। কামরান পরাজয়ের ঘটনাবলী খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেছেন।এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী যে কয়েকজন নেতার কাঁধে ভর দিয়ে সিলেট সিটি নির্বাচনে নেমেছেন তার মধ্যে বিজিত চৌধুরী অন্যতম। শুরু থেকে তিনি আনোয়ারের সঙ্গে রয়েছেন।
এবার আরিফ থাকলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতো বলে সবাই মানছেন। চ্যালেঞ্জ নিতে হতো আওয়ামী লীগকে। কিন্তু এখন সামনের পথ সহজ। আরিফ মাঠে নেই। নির্বাচন বয়কট করে সরে গেছেন। বিজিত চৌধুরী এ নিয়ে ভিন্ন বিশ্লেষণ করেছেন। জানিয়েছেন- ‘সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবারে দলের ইশারা সিলেটের নেতারা বুঝতে পারেননি। এ কারণে তারা আনোয়ারের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এমনকি প্রকাশ্যে অবস্থান নেন। আমরা শুরুতেই দলের হাইকমান্ডের ইশারা বুঝে গিয়েছিলাম। এ কারণে আনোয়ারকে নিয়ে ভোটের মাঠে চ্যালেঞ্জে নেমে যাই। এখন পর্যন্ত যা হয়েছে সবই সফল। আনোয়ার মেয়র হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। সিলেটের মানুষের কাছে আনোয়ার এখন গ্রহণযোগ্য নেতা হয়ে উঠেছেনঅন্তত উন্নয়নের জন্য আনোয়ারকে প্রয়োজন; সেটি সবাই অনুধাবন করতে পারছেন।’ তার মতে; সিলেট আওয়ামী লীগে নৌকার প্রশ্নে এখন গ্রুপিং নেই। সংঘাত, সহিংসতা ছাড়াই চলছে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম। তবে অনেকেই আছেন; নৌকার প্রার্থীর পক্ষে থাকলেও গোপনে গোপনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। তিনি বলেন- সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা নগরে এবারো শক্তিশালী নয়। কয়েকটি ওয়ার্ড কমিটি গঠনের পর হঠাৎ হাল ছেড়ে দেয়া হয়। নতুন যে ১৫টি ওয়ার্ড রয়েছে পর্যাপ্ত সময় পাওয়ার পরও সেগুলোতে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করা হয়নি। যদি তৃণমূলে দল শক্তিশালী থাকে তাহলে নির্বাচনের অর্ধেক কাজই শেষ হয়ে যায়। এবার নগর আওয়ামী লীগের ৪২টি ওয়ার্ডের অর্ধেক ওয়ার্ডই শক্তিশালী নয়। দল গোছানো হয়নি। আমি ৬ মাস আগে থেকেই বলে আসছি নতুন ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করুন।কিন্তু সেটি করা হয়নি। কেন গঠন করা হলো না, জানি না। এখন নেতাদের খুঁজে খুঁজে বের করতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বিজিত চৌধুরী। ২২ শে জানুয়ারি আনোয়ার প্রথম যেদিন নির্বাচনের উদ্দেশ্যে সিলেটে আসেন ওইদিনই এয়ারপোর্টে গিয়ে রিসিভ করেন বিজিত চৌধুরী। তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানকে একজন শক্তিশালী সংগঠক দাবি করে বলেন- আনোয়ার ১৫ বছর ধরে সিলেট-২ আসনে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ছিলেন। বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনি নৌকার পক্ষে গোটা নগরই চষে বেরিয়েছেন। এবার আনোয়ারুজ্জামান সিগন্যাল পেয়েই সিলেট নগরে নির্বাচনের জন্য নেমেছিলেন। সেটি কর্মীরা বুঝলেও নেতারা বুঝেননি। সুতরাং এ থেকেই বোঝা যায় সিলেটে নেত্রীর সিদ্ধান্ত কোন নেতা কতোটুকু মানেন। সিলেটে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি সিটি নির্বাচন চেয়েছিলেন বিজিত চৌধুরী। জানান- প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হলেও জয় হতো নৌকার প্রার্থী আনোয়ারের। কারণ বুঝে কিংবা না বুঝে শেষ মুহূর্তে নেতারা স্রোতের সঙ্গে মিশতে বাধ্য হয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের কঠোর মনিটরিং রয়েছে।
- মানবজমিন থেকে নেয়া
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech