বড়লেখায় থমকে আছে কালভার্ট নির্মাণ কাজ : ভোগান্তিতে পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ

প্রকাশিত: ১০:০৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৯, ২০২৫

বড়লেখায় থমকে আছে কালভার্ট নির্মাণ কাজ : ভোগান্তিতে পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ

এমরান আহমদ, বড়লেখা
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাঘমারা গ্রামের মধ্যবর্তী রাস্তায় দীর্ঘ এক বছরেও শেষ হয়নি কালভার্ট নির্মাণ কাজ। প্রায় ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দের এ কালভার্টের কাজ ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হলেও এখনো ব্যবহারের উপযোগী হয়নি, ফলে চার-পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
জানা গেছে, উপজেলার উত্তর বাঘমারা, দক্ষিণ বাঘমারা, বারহালি, নাজির খাঁ ও আমবাড়ি গ্রামের মানুষের যাতায়াত সুবিধার জন্য দাসেরবাজার-বাছিরপুর সড়কের আজিমগঞ্জ-বাড্ডা পাকা রাস্তার দক্ষিণ বাঘমারা গ্রামের ফারুকের বাড়ির সামনে খালের ওপর কালভার্ট নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরের এই প্রকল্পের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুমন এন্টারপ্রাইজ। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার শর্ত থাকলেও এখনো তা অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে।
কাজের নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার পরও অসমাপ্ত থাকায় আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ২৫ মে পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু বর্ধিত মেয়াদ শেষ হওয়ার নয় মাস পরও কালভার্টের উভয় পাশে (এপ্রোচ) মাটি ভরাট, ৩০ মিটার ইটসলিং, রঙের কাজসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষ হয়নি। ফলে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার মানুষ এই ব্রিজ ব্যবহার করতে পারছেন না। বিশেষ করে বর্ষাকালে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের চলাচল আরও কঠিন হয়ে পড়ে। জরুরি প্রয়োজনে কোনো যানবাহন এই পথে যেতে পারে না, ফলে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুমন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সুমন আহমদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সূত্র জানায়, বিভিন্ন মামলার কারণে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, গত বছরের ২৫ জুন ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে লিখিত নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নোটিশ দেওয়ার আট মাস পরও কাজ শেষ হয়নি। তিনি বলেন, বিধি মোতাবেক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছি। প্রায় দুই শতাধিক পরিবার ও আশপাশের ৪-৫ গ্রামের মানুষ প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবাই ভোগান্তিতে আছেন। জরুরি প্রয়োজনে যানবাহনও ঢুকতে পারে না। বর্ষার আগে যদি মাটি ভরাট করা না হয়, তাহলে আমাদের দুর্ভোগ আরও ভয়াবহ হবে।’
তারা দ্রুত কালভার্টের অসমাপ্ত কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন, যাতে বর্ষার আগেই তারা নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারেন। এখন দেখার বিষয়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কত দ্রুত ব্যবস্থা নেয় এবং ভুক্তভোগী মানুষের দুর্ভোগ কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে কি না।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর