ফেঞ্চুগঞ্জে এসে নিজের সম্পর্কে যা বললেন ইত্যাদি অনুষ্ঠানের নাতি

প্রকাশিত: ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১০, ২০২১

ফেঞ্চুগঞ্জে এসে নিজের সম্পর্কে যা বললেন ইত্যাদি অনুষ্ঠানের নাতি

মো. হাবিবুর রহমান
কাগুজে নাম শওকত আলী তালুকদার। ডাক নাম নিপু। মাথায় কোকড়ানো ঝাঁকড়া বাবরি চুল। উচ্চতা প্রায় আড়াই ফুট। কথা কিংবা চলনে-বলনে প্রকাশ পায় পূর্ণাঙ্গ পুরুষালী ব্যক্তিত্ব। বয়সের হিসাবে ৪০ বসন্ত অতিক্রম করেছেন এরই মধ্যে। হোমিও ডাক্তার বাবার তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় তিনি। পড়াশোনায় গ্রাজুয়েশন (বিএ)। বসবাস ঢাকার উত্তরায়। ১৯৯০ সাল থেকে নন্দিত নির্মাতা হানিফ সংকেতের সঙ্গে আছেন। ইত্যাদির বদৌলতে দেশ এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে যার অবস্থান এখন এক নম্বর স্যাটায়ার তারকা হিসেবে। আমজনতার কাছে যিনি সর্বাধিক পরিচিত আদরের নাতি নামে। চলমান জীবনে নানা ভুলভ্রান্তি চোখে আঙুল দিয়ে ধরিয়ে দেয়ার জন্য যিনি এরই মধ্যে পরিণত হয়েছেন ভুল শুধরানোর আইকন হিসেবে।

 

সেই নিপু রবিবার (৭ মার্চ) ফেঞ্চুগঞ্জে কথার ভঙ্গিতে মঞ্চ মাতালেন। ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশ কর্তৃক আয়োজিত আনন্দ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিপু।

 

অনুষ্ঠান চলাকালে নানা বিষয়ে প্রতিবেকের সঙ্গে কথা হয়ে তার। নিপু জানান, মুখে কথা ফোটার পর থেকেই তার স্টেজ শো’র যাত্রা শুরু। টানা চার পাঁচ বছর সেই স্টেজ শোগুলোতে একজন ক্ষুদে কমেডিয়ান কিংবা ক্ষুদ্র সাইজের মানুষ হিসেবেই তার অবস্থান এবং পারফরমেন্স সীমাবদ্ধ ছিল। সে জীবন মোটেও সুখকর ছিল না। তবুও শুরুর সেই জীবনটাকে পরম শ্রদ্ধায় এখনও স্মরণ করেন তিনি। বলেন, ওই স্টেজ শোগুলোই আমাকে আজকের নাতিতে পরিণত করেছে। উপরওয়ালার ইচ্ছা আর সংকেত দা’র দিকনির্দেশনায় টানা দুই যুগ বছর ধরে এখনও আমি ইত্যাদির খাতায় সগৌরবে আছি। এর চেয়ে বড় সৌভাগ্য আর কি হতে পারে?

 

নানার সঙ্গে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জুটি হয়ে স্যাটায়ার (ব্যঙ্গাত্মক অভিনয়) করার পর খানিক পরিবর্তনের ছোঁয়া নিয়ে নাতি এখন নানীকে জ্বালিয়ে মারছেন কথার মারপ্যাঁচে। নানী-নাতির জুটিটাও দর্শক ব্যাপক পছন্দ করছেন। ইত্যাদির বাইরে কয়েকটি বিজ্ঞাপন ছাড়া নাটক কিংবা চলচ্চিত্রে এখনও পাওয়া যায়নি জনপ্রিয় এ মানুষটিকে।

 

এর কারণ জানতে চাইলে একটু দুষ্টুমি করেই নিপু বলেন, আমি স্যাটায়ার আর্টিস্ট, কৌতুক অভিনেতা না। এ বিষয়টি এখনও আমাদের নাটক, ফিল্ম কিংবা বিজ্ঞাপনওয়ালারা পরিষ্কার হতে পারেননি। দুটো সম্পূর্ণ আলাদা কনসেপ্ট। আমি কৌতুক অভিনেতা হতে চাই না। সংকেত দা আমাকে এ শিক্ষাটা দেননি।

 

নিপু খানিক আফসোস করে আরও বলেন, হয়তো বিশ্বাস করবেন না, গেল বিশ বছরে কম হলেও এক কোটি সুযোগ আমি পেয়েছি। নাটক, চলচ্চিত্র, বিজ্ঞাপন তিন মাধ্যম থেকে এখনও প্রতিদিন আমি অফার পাই। কিন্তু দুঃসংবাদ হলো, সব নির্মাতাই আমার সাইজটাকে কাস্টিং করে কাজে লাগাতে চায়। অভিনয় ক্ষমতা কিংবা যোগ্যতাকে নয়। সেজন্যই আমাকে নাটক কিংবা চলচ্চিত্রে দেখতে পান না। সাইজ আমার যেটাই হোক, প্রথমত আমি মানুষ, দ্বিতীয়ত অভিনয় শিল্পী। এই বোধ নিয়ে যদি কোন নির্মাতা নাটক-সিনেমার অফার করেন আমি অবশ্যই করবো। আমি অর্থের লোভে নিজের ব্যক্তিত্ব আর সুন্দর অতীতটাকে ভেস্তে দিতে চাই না।

 

সবশেষে ব্যক্তিগত জীবন প্রসঙ্গে নিপু বলেন, ব্যক্তিগত জীবনে আমাকে নিয়ে আমি শতভাগ সুখী। আমার বৃদ্ধ বাবা আমাকে নিয়ে গর্ব করেন। কোটি মানুষের সমর্থন তো রয়েছেই। ঢাকার ভেতরে বাইরে আউটডোরে শুটিংয়ে গেলে আমি মানুষের মাথার ওপরে থাকি। মাটিতে পা রাখতে হয় না। দোয়া করবেন আমার জন্য।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর