নিজস্ব প্রতিবেদক
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা এলাকায় ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে ট্রেনের চালককে দায়ী করছেন আহত মাইক্রোবাস চালক ও নিহতদের স্বজনরা।

আহত মাইক্রোবাস চালক সবুজ মিয়া বলেন, রেললাইন পার হওয়ার সময় আমরা ট্রেনের কোনো আওয়াজ শুনতে পাইনি। ট্রেনটি কোনো হুইসেলও দেয়নি। প্রথম গাড়িটি ঠিকমতো পার হলেও দ্বিতীয় গাড়িটি ট্রেনের সামনে পড়ে যায়। রেলক্রসিং পৌছার আগে ট্রেনের হুইসেল বাজানো উচিত ছিলো।

আহত ও নিহতদের স্বজনদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা এলাকায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তারা সিলেট থেকে রওনা দেন। ভাটেরা এলাকার রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুটি মাইক্রোবাস নিয়ে তারা রওনা দেন। প্রথমটি রেলক্রসিং পার হলেও অপর মাইক্রোবাসটি আর পার হতে পারেনি। রেললাইনে ওঠার পরই এটি ট্রেনের সামনে পড়ে যায়। ট্রেনটি মাইক্রোবাসটিকে টেনে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে নিয়ে যায়। দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসটিতে একই পরিবারের ১০ জন সদস্য ছিলেন। তাদের মধ্যে শিশুসহ তিনজন মারা গেছেন।

নিহতদের মধ্যে দুইজনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- ফরিদ আহমদ (৪৫) ও শিশু নাবিল (৮)। আর আহতদের মধ্যে দুজনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- লিলি (১৩) ও লিজু (১৫)। তারা আপন বোন বলে জানা গেছে।

কুলাউড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, এখন পর্যন্ত তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে পাঠানো হয়েছে।

ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাফায়েত হোসেন বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা একটি টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে সবাইকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ট্রেনটি মাইক্রোবাসটিকে প্রায় আধা কিলোমিটার টেনে নিয়ে যায়।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক জয়নাল বলেন, এখন পর্যন্ত ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত আটজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুজনের মরদেহ এসেছে। হতাহত সবার নাম-পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার ভাটেরা হোসেনপুর নামক স্থানে ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের (নোহা) তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় চালকসহ আরও ৮ জনকে সংকটাপন্ন অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।