একই স্টেশনে ৬ বছর
অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে টাকার পাহাড় গড়েন হরলাল সরকার

প্রকাশিত: ৭:৩৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪

<span style='color:#077D05;font-size:19px;'>একই স্টেশনে ৬ বছর</span> <br/> অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে টাকার পাহাড় গড়েন হরলাল সরকার

নাহিম মিয়া, কোম্পানিগঞ্জ
সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার উন্নয়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সাদাপাঘর পর্যটন ঘাটের খাস কালেকশনের প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ, আর্থিক অনিয়ম দুর্নীতি, ঘুষ গ্রহন, নিরীহ জনগণকে হয়রানী, স্বজনপ্রীতি ও মিথ্যা মামলাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী একই কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি সময় থাকার বিধান নেই। অথচ সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হরলাল সরকার দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর ধরে একই স্টেশনে কর্মরত। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে মাসে যোগদান করে অধ্যবদি রয়েছেন। দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকার সুবাদে বানিয়েছেন অর্থের পাহাড়।
কেউ তার বিরুদ্ধে গেলে অর্থের লোভ দেখিয়ে মীমাংসা করা যেনো তার চিরাচরিত এক অভ্যাস। এই কর্মকর্তা টানা ০৬ বছর কোম্পানিঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালে খুঁটি গেড়ে বসেছেন। আর সেই খুঁটির জোরে একের পর এক করে যাচ্ছেন অনিয়ম ও দুর্নীতি।
এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সিলেট বিজাগীয় কমিশনার বরাবর সহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বৃন্দ ও ভোক্তভোগীরা।
লিখিত অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর পর্যটন ঘাটের খাস কালেকশনের টাকা উঠানোর দায়িত্ব রয়েছে উপজেলা ভূমি অফিস। ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পান উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা হরলাল সরকার। এর সুবাদে সে ১ বৈশাখ হতে এ পর্যন্ত প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
বিশেষ করে সাদাপাথর নৌকা ঘাটে দৈনিক উত্তোলন ১ লক্ষ টাকা এবং শুক্রবার ও শনিবার ২ দিনে ৪ লক্ষ টাকার মত উত্তোলন হয়, কিন্তু হরলাল সরকার তহসিলদার শামীম আহমদ/ শিবলু দের মাধ্যমে ব্যাংকে নামমাত্র কিছু টাকা জমা দিয়ে হরলাল সরকার তার সহযোগীদের নিয়ে আত্মসাৎ করেন।
বিগত ০৬ বছরে হরলাল সরকার বিভিন্ন দিবসে, অর্থাৎ ১৬ই ডিসেম্বর ও ২৬ মার্চ উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী, ক্রাসার মিল হতে প্রায় লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে হিসাব না দিয়ে অফিস সহকারী নারায়ন দেব নাথ এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা হরলাল সরকার এসব টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
বিগত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে হরলাল সরকার কোম্পানীগঞ্জ থানা সদর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক শংকর চন্দ্র দাস ও উপজেলা নির্বাহী অফিসের অফিস সহকারী নারায়ন দেবনাথ এবং জসিম উদ্দিন অফিস সহকারীকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য সকল হিন্দু অফিসারকে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগদান দিয়ে জনপতি ১ হাজার থেকে ১৫শ টাকা নিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এছাড়াও হরলাল সরকারের কাছে কোন কাজ করতে হলে বিভিন্ন ওজুহাতে টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে হয়রানী করেন। বর্তমানে এম সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজের এডহক কমিটির ফাইল ২৫ দিন হরলাল সরকার আটকাইয়ে রেখেছেন এবং চাটিবহর উচ্চ বিদ্যালয়ের ১জন শিক্ষকের বেতন ৪ মাস যাবত আটকে রেখেছেন।
বিশেষ করে ভোলাগঞ্জ পর্যটনঘাটে খাস আদায়ের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার (সাবেক)সুনজিৎ কুমার চন্দ, লিখিত আদেশ দিয়ে কর্মকর্তা/কর্মচারী নিয়োগদান করেন কিন্তু হরলাল সরকার তার ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিয়োগকৃত কর্মকর্তা/কর্মচারীর মধ্যে তার পছন্দের লোক দিয়ে খাস কালেকশান করান এবং টিকেট জালিয়াতি করেন।
এই অভিযোগের বিষয়ে হরলাল সরকারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি এই বিষয়ে কিছু বলতে ইচ্ছুক নই। তার উর্ধতন কর্তৃপক্কের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলেন তিনি।
সীমানাহীন অভিযোগের সম্রাট কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা হরলাল সরকারকে দ্রুত বদলীসহ তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি কোম্পানিগঞ্জের সচেতন মহলের।

সর্বশেষ ২৪ খবর