চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ৪:৪৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০১৯

চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শেখ হাসিনা

ডেস্ক প্রতিবেদন
চতুর্থবারের মতো এবং টানা তৃতীয় বার দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার তিনি সর্বসম্মতিক্রমে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের নেতা পুনর্র্নিবাচিত হয়েছেন। সংসদীয় দলের প্রথম সভা শেষে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা, যিনি বিশ্বের বিশিষ্ট একজন রাজনীতিবিদ। তিনি চতুর্থবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। কেননা, আমরা সর্বসম্মতিক্রমে তাকে আমাদের সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত করেছি।’

তিনি জানান, আজ জাতীয় সংসদ ভবনে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নিয়ে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভা হয়। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৈঠকে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের নেতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম প্রস্তাব করেন। এতে দলের জ্যেষ্ঠ সদস্য আমির হোসেন আমু সমর্থন করেন। সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচনের পরে সকল সংসদ সদস্য তুমুল করতালির মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান।
এদিকে বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে সংসদীয় দলের নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মতাকে কেউ ব্যক্তিগত মতা কিংবা সম্পদ অর্জনের হাতিয়ার বানাবেন না।’

জাতীয় সংসদ ভবনে বৃহস্পতিবার দুপুরে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথগ্রহণ শেষে এ কথা বলেন তিনি।

শপথ নেয়া একাধিক সংসদ সদস্য জানান, আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভার শুরুতে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নাম সংসদীয় দলের নেতা হিসেবে প্রস্তাব করেন। পরে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও প্রবীণ সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু ওই প্রস্তাবে সমর্থন করেন।

সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর সংসদ সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা আমাকে সংসদীয় দলের নেতা বানিয়েছেন এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। তবে এটাই যেন শেষ হয়।’ এ সময় সংসদ সদস্যরা সমস্বরে নো নো বলে ওঠেন। সংসদ সদস্যরা বলেন, ‘আপনি যতদিন আছেন আপনিই আমাদের সংসদীয় দলের নেতা, দলের নেতা, বাংলাদেশের নেতা এবং আমাদের অভিভাবক।’

এ সময় শেখ হাসিনা সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘জনগণ যদি সঙ্গে থাকে তাহলে কেউ আমাদের রুখতে পারবে না। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা জনগণের সঙ্গে থাকবেন। তাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকবেন। মনে রাখতে হবে, মতা চিরস্থায়ী নয়, এখানে মতাকে কেউ ব্যক্তিগত সম্পদ মনে করবেন না। আমরা আজকে আছি, কিন্তু মতা কোনোভাবেই চিরস্থায়ী নয়।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী ১৯৭৫ সাল-পরবর্তী তার প্রবাস জীবনের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি জার্মান গেলাম ওখান থেকে ভারত আসলাম, সেখানে মিসেস গান্ধী আমাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন, তখন আমাদের দল বলতে কিছুই ছিল না, তারপর আমি লন্ডন গিয়েছি, সেখান থেকে আস্তে আস্তে দল গোছাতে শুরু করি। লন্ডনে থাকাকালীন টাকার অভাবে জয়ের সেমিস্টার ড্রপও করতে হয়েছিল, আবার টাকা জোগাড় করে সেমিস্টার শুরু করতে হয়েছে। কিন্তু আল্লাহর রহমতে সেদিন আর নেই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে ভালোবাসে।’ এ সময় সংসদ সদস্যদের পার্লামেন্টের কার্যপ্রণালি বিধি ভালোভাবে জানার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আগামী ১৫ দিন পরে অধিবেশন বসবে, সবাই ভালো করে প্রস্তুতি নেবেন। সংসদ লাইব্রেরিতে যাবেন, সেখানে বসে লেখাপড়া করবেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন আর কেউ ঢাকায় বসে থাকার দরকার নেই। শপথ হয়ে গেছে। সবাই এলাকায় গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেন, দেখা করেন। জনগণ আপনাদের বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছে, ফলে জনগণের প্রত্যাশাও অনেক বেশি থাকবে।’

মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূলে অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর