ঢাকা ১৩ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:০৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৬, ২০২৫
কামরুল হাসান, বিশ্বনাথ
সরকারি বিধিতে বিনামূল্যের বই বিতরণে কোন নিয়ম নেই টাকা নেয়ার। অথচ অনৈতিক উপায়ে ঘুষের বিনিময়ে বই দিচ্ছেন, বিশ্বনাথ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারি মো. মজিবুর রহমান সরকার। সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বই নিতে এলেই, বইয়ের চাহিদানুযায়ী ঘুষ দিতে হয় তাকে। প্রতি বছর কেবল বই বিতরণ কার্যক্রম থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। এ অভিযোগ খোদ শিক্ষকদেরই।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০২ সালের ১০ জুলাই থেকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারির পদে দায়িত্ব পালন করছেন মো. মজিবুর রহমান সরকার। এরপর থেকেই বই বিতরণে কলে-কৌশলে টাকা আদায় শুরু করেন তিনি। পুরো উপজেলার ৯৯টি সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল, দাখিল মাদরাসা, ইবতেদায়ী মাদরাসা ও কিন্ডারগার্টেনে তিনিই বিতরণ করেন বই। এসব প্রতিষ্ঠানকে, সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার থেকে অন্তত হাজার ১৫শ টাকা উৎকোচ দিতেই হয় তাকে। না হয় সঠিক সময়ে বই দিতে গড়িমসি শুরু করেন তিনি।
সরেজমিন ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের বই বিতরণ কার্যক্রম দেখতে বিশ্বনাথ আলিয়া মাদরাসায় সরকারি বইয়ের গোডাউনে যাওয়া হয়। এসময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আসা লোকজনের মধ্যে বই বিতরণ করছিলেন তিনি। কথা হয়, উপজেলার আমতৈল মাদরাসা, মিসবাহুল হুদা দাখিল মাদরাসা ও দৌলতপুর দারুছসুন্নাহ দাখিল মাদরাসার শিক্ষকদের সাথে।
তারা জানান, প্রতি বছরই সরকারি বই নিতে এলেই ‘মুজিব স্যার’কে টাকা দিতে হয়। এবার দুই ধাপে বই আসায় দুইবারই আমাদের টাকা দিতে হয়েছে।
দৌলতপুর মাদরাসার বই নিতে আসা ব্যক্তি বলেন, এবার প্রথম ধাপের অল্প বই নিতে এসে ৫শ টাকা দিয়েছি। আজ পিকআপ ভ্যানে করে সব বই নিচ্ছি। তাই উনাকে ১২শ টাকা দিতে বলেছেন হুজুর (প্রতিষ্ঠান প্রধান)। অন্যরা জানান, প্রতি বছর দেই। এবারও কিছু একটাতো দিতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রধান বলেন, ৩-৪ হাজার টাকা দিয়ে প্রতি বছরই আমাদের বই নিতে হয়। প্রতিষ্ঠান বেসরকারি হলেতো কথাই নেই। পর্যাপ্ত বই নেই, বরাদ্দ নেইসহ নানা অজুহাত দেখান তিনি। কেবল টাকা দিলেই সবার আগে মিলে বই। অযথা ঝামেলা এড়াতে বাধ্য হয়েই আমরা টাকা দেই।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত অফিস সরকারি মো. মজিবুর রহমান সরকার জানান, ‘আমি কষ্ট করি, লোকজন দেয় তাই নেই, কাউকে জোর করিনা।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বদিউজ্জামান আহমদ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বলেন, ‘এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে, দ্রুত ব্যবস্থা নেবো।
এ বিষয়ে কথা হলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. আবদুল ওয়াদুদ ‘বিজয়ের কণ্ঠ’কে বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত নই। কোন বিধানই নেই টাকা নেয়ার। বিষয়টি সত্য হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech