ঢাকা ১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:২৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৯
ডেস্ক প্রতিবেদন
মতার অপব্যবহারের অভিযোগে সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ দুইজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বেআইনিভাবে মতার অপব্যবহার করে বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশনের (বিজেএমসি) জমি বিক্রি করে সরকারের ৪০ লাখ ৬৯ হাজার টাকা আর্থিক তির অভিযোগে বৃহস্পতিবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) কমিশন বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
মতার অপব্যবহারের অভিযোগে মহাজোট সরকারের সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক সূত্র জানায়, মতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নেত্রকোনায় সরকারের তিনটি গুদামসহ ৯৮ শতাংশ জমি বিক্রির নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অনুসন্ধান শেষে মামলা করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা।
গত বছরের ১ জুলাই দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্ত অনুবিভাগের উপপরিচালক বেনজীর আহমেদ স্বারিত এক চিঠিতে মামলার অনুমোদনের বিষয়টি সংস্থার ঢাকা বিভাগীয় পরিচালককে জানানো হয়। সেখান থেকে অনুমোদনের চিঠি ময়মনসিংহ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে পাঠানোর পর মামলা হওয়ার কথা ছিল।
এর আগে কমিশন অনুসন্ধান কর্মকর্তার কাছ থেকে মামলার সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন পাওয়ার সাত মাস পর কমিশন মামলার অনুমোদন দেয়। অনুসন্ধানে দুদক জানতে পেরেছে, নেত্রকোনা জেলা শহরের সাতপাই মৌজায় অবস্থিত বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশনের তিনটি গুদামসহ ৯৮ শতাংশ জমি নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করা হয়।
দুদকের ময়মনসিংহ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক পাল কমল চন্দ্র দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেন। লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় মামলা রুজু হয়।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজেএমসির তিনটি গুদাম তারেক সালমান ও সুধেন্দু শেখর রায় নামে দুই ব্যক্তির কাছে বার্ষিক ৭২ হাজার টাকায় ভাড়া ছিল। তাঁরা যৌথভাবে এ সম্পত্তি কেনার জন্য পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। সে সময়ের মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেন, বিক্রিতে দেরি করলে অবশিষ্ট জমি বেদখল হতে সময় লাগবে না। তদারকির অভাবে ভাড়া দেওয়া গুদামের ভাড়াটিয়া যে বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরি করে একসময় এগুলোর মালিক বনে যাবেন না, তার কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে না। এর ফলে রাষ্ট্র তিগ্রস্ত হবে। জমি কিনতে চাইলে যৌক্তিক কারণে ভাড়াটিয়াই অগ্রাধিকার পেতে পারেন।
২০০৮ সালের ১৮ মে বিজেএমসির সংশোধিত সম্পত্তি বিক্রির নীতিমালায় বিজেএমসির সব সম্পত্তি বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। লতিফ সিদ্দিকী এর সপে আরও উল্লেখ করেন, এ েেত্র বিচার্য বিষয় হলো, ভাড়াটিয়াদের কাছে তাঁদের প্রস্তাবে সম্পত্তি বিক্রি করা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেতিবাচক হলে টেন্ডারে যেতে হবে। টেন্ডার হলেই যে স্বচ্ছতার সঙ্গে বিক্রয় কার্যক্রম সম্পন্ন হবে, তা ভাবার কারণ নেই।
দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভবিষ্যতে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে, তা জেনে-বুঝেই ১৯৯৪ সালের ৭ জুলাই ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কর্তৃক মূল্যায়িত ওই জমির মূল্যের ৩ গুণ ধার্য করে আবেদনকারীদের কাছে ৯৮ শতাংশ জমি হস্তান্তরের আদেশ দেন লতিফ সিদ্দিকী। সেই হিসাবে জমির দাম ধরা হয় ৫১ লাখ ৮৯ হাজার ৫১৬ টাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯৪ সালে মূল্যায়িত সম্পত্তির তিন গুণ মূল্যে জমিটি হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়ে এবং এ বিষয়ে প্রক্রিয়া গ্রহণের মাধ্যমে নিজ মতার অপব্যবহারের মাধ্যমে লতিফ সিদ্দিকী ১৯৪৭ সনের ২ নম্বর দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অপরাধ করেছেন।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech