ঢাকা ১০ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:৪৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২২, ২০১৮
ডেস্ক প্রতিবেদন
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাঠ সব দলের জন্য এখনো সমান নয় বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে ১২ দাবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনপ্রশাসনের শীর্ষ ৯২ কর্মকর্তার বদলি চেয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে চিঠি দিয়েছে এই জোট।
২২ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন কমিশনে একটি তালিকা জমা দেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সই করা চিঠিগুলো ইসিতে জমা দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল।
চিঠি জমাদান শেষে আলাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘনে সরকারের এবং কোনো কোনো েেত্র নির্বাচন কমিশনের কোনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তার জড়িত থাকার বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে উনাদের কাছে কিছু দালিলিক তথ্য উপস্থাপন করেছি। প্রমাণাদিসহ নির্বাচনি তফিসিল ঘোষণার পর সরকার কিংবা নির্বাচনি কোনো কর্মকর্তা যে কাজগুলো করতে পারেন না সেই কাজগুলো অনবরত করা হচ্ছে। তার কয়েকটি উদাহরণ আমরা উনাদের সামনে তুলে ধরেছি এবং এগুলোর প্রতিকার চেয়েছি। ভবিষ্যতে যাতে এসব না ঘটে, আর যারা এসব করেছেন তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির ছেলে একজন এমপি প্রার্থী। তিনি বঙ্গভবনে তার নির্বাচনি এলাকার লোকজন নিয়ে সেখানে বসে নির্বাচনি কাজ করছেন। তাদের আদর-আপ্যায়ন করা হয়েছে, যেটি প্রভাব বিস্তারের অন্যতম উদাহরণ। আর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, চট্টগ্রাম বিভাগের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে সব রিটার্নিং কর্মকর্তারা পুলিশ সুপারদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। ১৬ নভেম্বর এ ঘটনা ঘটে।’
এ রকম আরও বেশ কিছু অভিযোগ ইসির কাছে তুলে ধরে এই জোট। সেগুলো হলো রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন ‘বঙ্গভবনে মনোনয়নপ্রত্যাশী রাষ্ট্রপতিপুত্রের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সভা, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও জন নিরাপত্তা বিভাগের সচিবের সঙ্গে চট্টগ্রাম বিভাগের সব রিটার্নিং কর্মকর্তা (জেলা প্রশাসক) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) বৈঠক, এনটিএমসি ও বিটিআরসির বিতর্কিত দলান্ধ কর্মকর্তদের সরিয়ে নিরপে কর্মকর্তাদের পদায়ন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘দলবাজ’ ৭০ কর্মকর্তার প্রত্যাহার, জনপ্রশাসনের ‘দলবাজ’ ২২ কর্মকর্তর প্রত্যাহার, পুলিশের তথ্য অনুসারে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ না দেওয়া, তফসিল ঘোষণার পরও নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে প্রমাণ্যচিত্র, ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ, সিটি করপোরেশন ও সরকারি মালিকানাধীন ইলেক্ট্রনিক ডিসপ্লে-বোর্ড এবং ডিজিটাল বিলবোর্ডে প্রধানমন্ত্রী/ মন্ত্রী/ এমপিদের ছবি সংবলিত কথিত উন্নয়ন প্রচার বন্ধ, মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের হামলা ও গ্রেফতার প্রসঙ্গে ইসির ভূমিকা ও এক এলাকার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের অন্য এলাকায় দায়িত্ব দেওয়া।
পুলিশের ৭০ কর্মকর্তা প্রত্যাহার চায় ঐক্যফ্রন্ট:
দলবাজির অভিযোগ ওঠা আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর ৭০ কর্মকর্তা হলেন এডিশনাল আইজিপি (প্রশাসন) মোখলেছুর রহমান, র্যাবের ডিজি বেনজির আহমদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, এডিশনাল আইজিপি (টেলিকম) ইকবাল বাহার, ডিআইজি (নৌ পুলিশ) শেখ মো. মারুফ হাসান, ডিআইজি সিলেট রেঞ্জ মো. কামুরুল আহাসান, ডিআইজি চট্টগ্রাম রেঞ্জ খন্দকার গোলাম ফারুক, ডিআইজি খুলনা রেঞ্জ মো. দিদার আহমেদ, ডিআইজি রাজশাহী রেঞ্জ এম খুরশিদ হোসেন, কমিশনার (ডিআইজি কেএমপি) হুয়াহুন কবির, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিনশাল কমিশনার কাউন্টার মো. মনিরুল ইসলাম, কমিশানর (ডিআইজি) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মাহবুবুর রহমান রিপন, অতিরিক্তি পুলিশ কমিশনার (ডিআইজি, ঢাকা) মীর রেজাউল আলম, ডিআইজি (সিটি এসবি ঢাকা) মোহাম্মদ আলী মিয়া, ডিআইজি (রংপুর রেঞ্জ) দেবদাস ভট্টচার্য্য, অতিরিক্ত কমিশনার (ডিআইজি ডিএমপি) কৃঞ্চপদ রায়, ডিআইজি (পুলিশ হেডকোয়ার্টাস) হাবিবুর রহমান, ডিআইজি (অপারেশন পুলিশ হেডকোয়ার্টাস) আনোয়ার হোসেন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাফিস আক্তার, ডিআইজি (ট্রেনিং) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত কমিশনর (ডিএমপি) আবদুল বাতেন, র্যার-৪-এর এডিশনার ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির, যুগ্ম কমিশনার (ডিএমপি) শেখ নাজমুল আলম, এডিশনার ডিআইজি (খুলনা রেঞ্জ) এ কে এম নাহিদুল ইসলাম, এডিশনাল ডিআইজি (খুলনা রেঞ্জ) মো. মনিরুজ্জামান, এডিশনাল ডিআইজি (সিলেট রেঞ্জ) জয়দেব কুমার ভদ্র, এডিশনাল ডিআইজি (ঢাকা রেঞ্জ) মো. আসাদুজ্জামান, জয়েন কমিশনার (ডিবি) মাহবুব আলম, এসপি মোল্যা নজরুল ইসলাম, এসপি (টুরিস্ট পুলিশ, সিলেট) আলতাফ হোসেন, ডিসি (তেজগাঁও) বিপ্লব কুমার সরকার, ডিসি ডিএমপি হারুন অর রশীদ, ডিসি রমনা মো. মারুফ হোসেন সরকার, ডিসি (সিএমপি) এস এম মেহেদী হাসান, ডিসি (ডিবি, উত্তর) খন্দকার নুরুন নবী, ডিসি (সিএমপি) মো. ফারুকুল হক, ডিসি (কাউন্টার টেরিজিম, ডিএমপি) প্রলয় কুমার জোয়ার্দার, ডিসি (ডিএমপি) এস এম মুরাদ আলী, এডিসি (ডিএমপি) শিবলী নোমান, এসপি (ঢাকা) শাহ মিজান শফি, এসপি (নায়ারণগঞ্জ) মো. আনিসুর রহমান, এসপি (মুঞ্জিগঞ্জ) মো. জায়েদুল আলম, এসপি (নরসিংদী) মিরাজ, এসপি (টাঙ্গাইল) সনজিত কুমার রায়,এসপি (মাদারীপুর) সুব্রত কুমার হাওলাদার, এসপি (ময়মনসিংহ) শাহ আবিদ হোসেন, এসপি (শেরপুর) আশরাফুল আজিম, এসপি (সিলেট) মো. মনিরুজ্জামান,এসপি (বরিশাল) সাইফুল ইসলাম, এসপি (ভোলা) মোক্তার হোসেন, এসপি (খুলনা) এস এম শফিউল্লাহ, এসপি (সাতীরা) মো. সাজ্জাদুর রহমান, এসপি (বাগেরহাট) পংকজ চন্দ্র রায়, এসপি (যশোর)মঈনুল হক, এসপি (ঝিনাইদহ) হাসানুজ্জামান, এসপি (কুষ্টিয়া) আরাফাত তানভির, এসপি (চট্টগ্রাম) নূর এ আলম মিনা, এসপি (নোয়াখালী) ইলিয়াস শরীফ, এসপি (ফেনী) এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার, এসপি (কুমিল্লা) সৈয়দ নুরুল ইসলাম, এসপি (রংপুর) মিজানুর রহমান, এসপি (দিনাজপুর) সৈয়দ আবু সায়েম, এসপি (ঠাকুরগাঁও) মনিরুজ্জামান, এসপি (রাজশাহী) মো. শহিদুল্লাহ, এসপি (চাপাইনবাবগঞ্জ) মোজাহিদুল ইসলাম, এসপি (নওগাঁ) ইকবাল হোসেন, এসপি (নাটোর) সাইফুল্লাহ, এসপি (বগুড়া) আশরাফ আলী, এসপি (সিরাজগঞ্জ) টুকুল চক্রবর্তী ও এসপি (পাবনা) রফিক ইসলাম।
জনপ্রশাসনের যে ২২ কর্মকর্তা প্রত্যাহার চায় ঐক্যফ্রন্ট :
দলবাজির অভিযোগ ওঠা জনপ্রশাসনের ২২ কর্মকর্তা হলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহমেদ, জননিরাপত্তা বিভাগরে সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, ভোলার ডিসি মো মাসুদ আলম সিদ্দিকী, চট্টগ্রামের ডিসি মো. ইলিয়াস হোসাইন, কুমিল্লার ডিসি মো. আবুল ফজল মীর, ফেনীর ডিসি ওয়াহেদুজ্জামান, লক্ষ্মীপুরের ডিসি অঞ্জন চন্দ্র পাল, কিশোরগঞ্জের ডিসি সারোয়ার মোর্শেদ চৌধুরী, নরসিংদীর ডিসি সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, টাঙ্গাইলের ডিসি মো শহিদুল ইসলাম, ঝিনাইদহের ডিসি সুরজ কুমার নাথ, খুলনার ডিসি হেলাল হোসাইন, কুষ্টিয়ার ডিসি মো. আসলাম হোসাইন, নড়াইলের ডিসি আঞ্জুমান আরা, ময়মনসিংহের ডিসি ড. শুভাস চন্দ্র বিশ্বাস, জয়পুর হাটের ডিসি মো. জাকির হোসাইন, নওগাঁর ডিসি মিজানুর রহমান, রাজশাহীর ডিসি আবদুল কাদের ও সিলেটের ডিসি কাজী ইমদাদুল।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech