ঢাকা ১১ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:১৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৮
ডেস্ক প্রতিবেদন
গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন রাজশাহীর সংসদীয় আসনগুলোর ধানের শীষের প্রার্থীরা।
সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা এসএম আবদুল কাদেরের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ দাবি জানান তারা।
দুপুরে নিজ দফতরের সম্মেলন কক্ষে প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ সময় নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক পারভেজ রায়হান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জুলকার নায়ন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নজরুল ইসলাম এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর কবির উপস্থিত ছিলেন।
সভায় রাজশাহী-২ (সদর) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী মিজানুর রহমান মিনু বলেন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও নগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের বাড়ি ঘিরে অবস্থান নেয় সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে তিনি সেখানে গেলে তারা সরে যায়।
রিটানিং কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে মিনু বলেন, বুলবুলকে আপনার কাছে রেখে যাচ্ছি। নির্বাচন পর্যন্ত তিনি আপনার কাছে থাকবেন। নির্বাচনের জন্য যাদের হুমকি মনে করবেন, আমাদের বলবেন, আমরা তাদের আপনাদের হাতে তুলে দেব। এ সময় নেতাকর্মী ছাড়াও তাদের স্বজনদের হয়রানির শিকার হচ্ছেন উল্লেখ করে তা বন্ধের দাবি জানান মিনু।
সভায় অংশ নেন রাজশাহী-১ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান। তিনি অভিযোগ করেন, গত তিন-চার দিন ধরে আমাদের এলাকায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছে। কোথাও পোস্টার রাখতে দিচ্ছে না। নির্বাচনী অফিসগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। গণগ্রেফতার করছে পুলিশ। আবার আমরা পথসভা করতে গেলেও প্রতিপক্ষের লোকজন নানাভাবে বাধা দিচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধ হওয়া দরকার।
এ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর নিবাচনী এজেন্ট অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান বলেন, আামাদের প্রার্থীর জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। আমরা প্রার্থীর জন্য সাজন গাণম্যান চেয়েছি। কাজেই আমরা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটায়নি। উল্টো তারাই এসব করছে।
রাজশাহী-৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী শফিকুল হক মিলন বলেন, আমার এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রার্থীর লোকজন ও প্রশাসন যেন ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছে। প্রধান নির্বাচনী এজেন্টসহ নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার চলছে। হামলা-বাধা এবং নানাভাবে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন ধানের শীষের লোকজন। এসব দ্রুত বন্ধ হওয়া দরকার। এ সময় পক্ষপাতি আচরণের অভিযোগ এনে মোহনপুর থানার ওসির অপসারণ চান মিলন।
রাজশাহী-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আবু হেনা অভিযোগ করে বলেন, গত ১৯ ডিসেম্বর আমার প্রচারণায় হামলা করেছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন। আমাদের নেতাকর্মীকে আটকের জন্য ৫ মাস আগেই তালিক করেছে ওসি। এত বড় সাহস তার হলো কি করে? আমি ওসি নাছিম আহমেদ ও সহকারী পুলিশ কমিশনার সুমন দেবের অপসারণ চাই।
তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করেন এ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের নির্বাচনী এজেন্ট মোসলেহ উদ্দিন। তিনি দাবি করেন, এখন পর্যন্ত এলাকায় নির্বাচনী পরিবেশ স্বাভাবিক। প্রার্থীরা স্বাচ্ছন্দ্যে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাছাড়া দীর্ঘদিন পর ধানের শীষের প্রার্থী এলাকায় ফেরায় জনরোষে পড়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
রাজশাহী-৬ আসনের ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আব্দুস সালাম অভিযোগ করে বলেন, আমাকেও এলাকায় পোস্টার লাগাতে দিচ্ছে না নৌকা প্রার্থীর লোকজন। এমনকি মাইকিংয়েও বাধা দেয়া হচ্ছে। এই পরিবেশ বন্ধ করার দরকার।
রাজশাহীর এ আসন নিয়ে বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনু অভিযোগ করে বলেন, রাজশাহী-৬ আসনে বিএনপি প্রার্থী নাই। তিনি কারাগারে আছেন। তার প্রার্থিতা স্থগিত করেছেন আদালত। কিন্তু তার পরিবারের লোকজনকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে। পরিবারের ওপর পুলিশের এমন নির্যাতন কাম্য নয়।
সভায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা এসএম আবদুল কাদের প্রত্যেক প্রার্থীকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে, সেগুলো বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা তদন্ত করবেন।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech