বাবু সোনা হত্যায় স্ত্রী দীপার ফাঁসির আদেশ

প্রকাশিত: ২:৩২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯

বাবু সোনা হত্যায় স্ত্রী দীপার ফাঁসির আদেশ

ডেস্ক প্রতিবেদন
রংপুরের আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা হত্যা মামলার রায়ে তার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ওরফে দীপাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার দুপুরে রংপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ বি এম নিজামুল হক এই আদেশ দেন।

রায় ঘোষণার সময় এই মামলার একমাত্র জীবিত আসামি নিহত বাবু সোনার স্ত্রী দীপা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার আগে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসা হয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডে বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দীপা ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফা ইয়াসমীন মুক্তার আদালতে চার্জশিট দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের এসআই আল-আমিন। পরে মামলাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়।

ওই বছরের ২১ অক্টোবর অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে বিচারকাজ শুরু করেন বিচারক। মামলায় মোট ৩৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। এর পর মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করা হয়।

মামলার চার্জশিটভুক্ত দুই আসামির মধ্যে একমাত্র জীবিত ছিলেন নিহত বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দীপা। তার প্রেমিক কামরুল ইসলাম গত বছরের ১০ নভেম্বর ভোরে কারাগারে আত্মহত্যা করেন।

রংপুরের জজ আদালতের পিপি আব্দুল মালেক জানান, গত বছরের ২৯ মার্চ রাতে বাবু সোনাকে ১০টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর তার লাশ তাজহাট মোল্লাপাড়ায় প্রেমিক কামরুলের ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়ির ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা হয়।

ওই বছরের ৩ এপ্রিল মধ্যরাতে বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ওরফে দীপাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব আটক করে। তিনি এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন এবং লাশের অবস্থান সম্পর্কে জানালে ওই দিন রাতে মোল্লাপাড়ার ওই বাড়ির মেঝে খুঁড়ে নিহত বাবু সোনার গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় নিহত বাবু সোনার ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিক বাদি হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন।

পরে বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ওরফে দীপা, প্রেমিক কামরুল ইসলাম, বাবু সোনার সহকারী মিলন মোহন্ত, ছাত্র মোল্লাপাড়া এলাকার সবুজ ইসলাম ও রোকনুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন দীপা ও কামরুল। সেই সঙ্গে মিলন মোহন্তও হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পুলিশকে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন।

ওই বছরের ১৩ এপ্রিল রাতে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মিলন মোহন্ত। হত্যাকাণ্ডে দুই শিক্ষার্থী রোকন ও সবুজের সম্পৃক্ততা খুঁজে না পাওয়ায় এবং মিলন মোহন্ত মারা যাওয়ায় তাদেরকে বাদ দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী বসুনিয়া মো. আরিফুল ইসলাম।

আদালতের পিপি আবদুল মালেক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আদালতের এ রায়ে সন্তুষ্ট। এখন দ্রুত এই রায় কার্যকর দেখতে চাই।’

অন্যদিকে মামলার বাদি সুশান্ত ভৌমিক সুবল বলেন, ‘আমি ও আমাদের পরিবার এই রায়ে সন্তুষ্ট। কামরুল মাস্টার বেঁচে থাকলে আদালত তার বিরুদ্ধেও একই রায় দিতেন।’

এদিকে, রায় ঘোষণার সময় আদালতের কাঠগড়ায় সিগ্ধা বিষণ্নভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর