ঢাকা ৯ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:০৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০১৮
ডেস্ক প্রতিবেদন
নির্বাচনের কারণে এবার উন্মুক্ত স্থানের পাশাপাশি বাসা-বাড়ির ছাদেও থার্টিফার্স্ট নাইটের অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রোববার থার্টিফার্স্ট ও বড়দিন উপলক্ষে আয়োজিত সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ নিষেধাজ্ঞার কথা জানান।
একইসঙ্গে থার্টিফার্স্ট নাইটে কোনো আতশবাজি, পটকা ফোটানো, বেলুন, ফানুস ওড়ানো যাবে না বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী।
আগের দিনই দেশের একাদশ জাতীয় নির্বাচন হবে এবং পরদিন ইংরেজি বর্ষ বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা। এজন্য কোনো আয়োজন না রাখার তাগিদ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অন্যতম উৎসব বড়দিনে প্রতিটি গির্জায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। থার্টিফার্স্ট নাইটে কোথাও কোনো আতশবাজি বা পটকা ফোটানো যাবে না। পাশপাশি চার্চগুলো নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বিভিন্ন আলোচনার মধ্যে তুলে ধরেছি, এবারের প্রেক্ষাপটটা অন্যরকম। আমাদের জাতীয় নির্বাচন ৩০ তারিখে হতে যাচ্ছে। সেজন্য বিশেষভাবে নিরাপত্তার কথা চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইটের জন্য আমরা কিছু বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। থার্টিফার্স্ট নাইট আমরা প্রথমত নিরুৎসাহিত করবো ওইদিন করার জন্য। কারণ আপনারা জানেন, ৩০ তারিখ আমাদের সাধারণ নির্বাচন, সেটা লক্ষ্য রেখেই আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সবাই সেদিন ইলেকশনের কাজে নিয়োজিত থাকবেন। কাজেই আমরা নিরুৎসাহিত করছি, কোনো ধরনের খোলা জায়গায় যেন থার্টিফার্স্ট নাইটের অনুষ্ঠান না হয়। বিশেষ করে কোনো উন্মুক্ত স্থানে এসব অনুষ্ঠান করা যাবে না এবং বাসার ছাদেও করা যাবে না।
ফাইভস্টার ও আন্তর্জাতিক মানের হোটেল ছাড়া সব ধরনের বার বন্ধ:
এবারের থার্টিফার্স্ট নাইটে ফাইভস্টার ও আন্তর্জাতিক মানের হোটেল ছাড়া সব ধরনের বার বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ৩১ ডিসেম্বর বিকেল থেকে পরের দিন ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্লাবে কোনো বার খোলা থাকবে না। থার্টিফার্স্ট নাইটে কোনো বৈধ অস্ত্র বহন করা যাবে না। ওড়ানো যাবে না কোনো বেলুন, ফানুস, ফোটানো যাবে না আতশবাজি, পটকা।
নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডিজে পার্টি:
এবার রাজধানীসহ সারা দেশের ডিজে পার্টির ওপরও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ৩১ ডিসেম্বর থার্টিফার্স্ট নাইটে কোনো হোটেলে গ্যাদারিং সৃষ্টি করে ডিজে পার্টি করা যাবে না। হোটেলগুলোতে এবং বিভিন্ন জায়গায় ডিজে পার্টি করে একটি বিশেষ আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়; যেহেতু ইলেকশন, সেহেতু আমরা বলছি কোনো হোটেলে ডিজে পার্টি করা যাবে না এবং কোনো গ্যাদারিং সৃষ্টি করা যাবে না। থার্টিফার্স্ট নাইটে হোটেলগুলোতে বৈধ পার্কিংয়ের বাইরে কোনো জায়গায় পার্ক করতে পারবে না। সেটা আমরা নিয়ন্ত্রণ করবো। দেশের পর্যটন এলাকার নিরাপত্তার ব্যবস্থাও থাকবে।
নিয়ন্ত্রণে থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা:
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, প্রতি বছরের মতো এবারো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা নিয়ন্ত্রিত থাকবে। ৩১ ডিসেম্বর দিন ও রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করা যাবে না, যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত হবে।
বড়দিনেও থাকবে ব্যাপক নিরাপত্তা:
খ্রিস্টানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিনকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উপলক্ষে সারা দেশে চার্চগুলোতে নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের যেখানে বড় দিনের অনুষ্ঠান হবে সেখানে তাদের নিজস্ব ভলান্টিয়ার নিয়োগ দেবেন। তারা আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি সহযোগিতা করবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো চার্চ রয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে ৭৫টি। এর মধ্যে বড় চারটি তেজগাঁও, রমনা, মিরপুর ও বনানীতে। প্রতিটি চার্চের দৃশ্যমান নিরাপত্তার পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারিসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা বলয় নিয়ে আসা হবে। প্রতি চার্চে সিসি টিভি লাগানো হবে। বড়দিন উপলক্ষে সারা দেশেই সব চার্চ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা থাকবে। থার্টিফার্স্ট নাইটের মতো বড়দিনেও কোনো ধরনের আতশবাজি ও পটকা ফোটানো যাবে না।
সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, পুলিশ, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ডের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech