ঢাকা ৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৩৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৪, ২০২১
ক্রীড়াকণ্ঠ ডেস্ক
রোববার অনুষ্ঠিত হয় আনঅফিসিয়াল ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচ। সিরিজ নিশ্চিত হয়েছে আগেই। তাই শেষ ম্যাচে এক ঝাঁক পরিবর্তন নিয়ে আয়ারল্যান্ড উলভসের মুখোমুখি হলো বাংলাদেশ ইমার্জিং দল। এতেও অবশ্য জয় পেতে কোনো সমস্যা হয়নি। আইরিশরা লড়াই করলেও, শেষপর্যন্ত রোমাঞ্চকর জয়ে সব ম্যাচ জিতেই সিরিজ শেষ করেছে সাইফ হাসানের নেতৃত্বাধীন দল।
দেশের হোম অব ক্রিকেট মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের শেষ একদিনের ম্যাচ বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের জয় মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে। শেষ ওভারে দারুণ বোলিং করে দলের জয় নিশ্চিত করেছেন এ ম্যাচেই প্রথম সুযোগ পাওয়া ডানহাতি পেসার রেজাউর রহমান রাজা।
ম্যাচে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভার পুরোটা খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। দুই বল আগে তারা অলআউট হয়ে যায় ২৬০ রানে। লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেন মাহমুদুল হাসান জয়। এছাড়া আর কেউ পঞ্চাশও করতে পারেননি। জবাবে পুরো ৫০ ওভার খেলে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৫ রানের বেশি করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড উলভস।
সিরিজের প্রথম জয় পেতে শেষের ৪ ওভারে আইরিশদের প্রয়োজন ছিল ৩৫ রান, হাতে ছিল ৩টি উইকেট। ইনিংসের ৪৭তম ওভারে ১০ রান খরচ করেন বাঁহাতি পেসার শফিকুল ইসলাম। তবে তিনি আনিসুল ইসলাম ইমনের হাতে ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠান সেট ব্যাটসম্যান নেইল রককে। যিনি ৩৮ বলে ৩৫ রান করে নিজ দলের জয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন।
শেষ তিন ওভারে আইরিশদের বাকি থাকে আরও ২৫ রান। কিন্তু ব্যাটসম্যান ছিলেন না কেউ।এর মধ্যে ৪৮তম ওভারে মাত্র ৪ রান খরচায় এক উইকেট তুলে নেন রেজাউর রাজা। ফলে শেষ উইকেট জুটি চলে আসে আইরিশদের। তবু লড়াইয়ে ক্ষান্ত দেননি পিটার চেজ, বেন হোয়াইটরা।
ম্যাচের পেনাল্টিমেট ওভার করতে এসে ১০ রান খরচ করে বসেন শফিকুল। ফলে শেষ ওভারে আইরিশদের জন্য প্রয়োজন হয় ১১ রানের। দায়িত্ব বর্তায় রাজার কাঁধে। তিনি শেষ ওভারের প্রথম বল করেন ডট। আর শেষের পাঁচ বলে পাঁচটি সিঙ্গেলের বেশি নিতে পারেনি চেজ-হোয়াইটরা। ফলে বাংলাদেশ ইমার্জিং দল পায় ৫ রানের জয়।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত ছিল আইরিশদের। মাত্র ৭ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙলেও, দ্বিতীয় উইকেটে ৯৭ রান যোগ করেন মার্ক এডায়ার ও স্টিফেন ডোহেনি। এডায়ার ৪৫ রান করে ফিরে গেলেও ডোহেনি আগলে রাখেন একপ্রান্ত। কিন্তু অপরপ্রান্তে তেমন সহায়তা পাননি অন্য কারও কাছ থেকে।
শেষপর্যন্ত ডোহেনি সাজঘরের পথ ধরেন ইনিংসের ৩৫তম ওভারে। তার সম্ভাব্য সেঞ্চুরিটি আটকে দেন ডানহাতি অফস্পিনার শামীম হোসেন। আউট হওয়ার আগে ৯ চার ও ১ ছয়ের মারে ৯৯ বলে ৮১ রান করেন ডোহেনি। এছাড়া শেষদিকে রকের ৩৫ রানব্যতীত আর কেউই বলার মতো কিছু করতে পারেননি।
বাংলাদেশ ইমার্জিংয়ের পক্ষে বল হাতে সবচেয়ে সফল দলের অধিনায়ক সাইফ হাসান। তিনি ১০ ওভারে মাত্র ৩১ রান খরচায় নেন ৩টি উইকেট। এছাড়া শফিকুল ইসলাম ও তানভীর ইসলাম নেন ২টি করে উইকেট। শামীম ও রেজাউরের ঝুলিতে জমা পড়ে ১টি করে উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ দলও শুরুতেই হারায় উইকেট। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে মাত্র ৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক সাইফ। তবে তার বিদায়ের ধাক্কা সামাল দেন আজই প্রথম সুযোগ পাওয়া আনিসুল ইমন। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লে’র পূর্ণ ফায়দা নেন ডানহাতি এ ওপেনার।
প্রথম পাওয়ার প্লে’তে বাংলাদেশ ইমার্জিং করে ৫৭ রান। যেখানে ২৬ বলে ৩৬ রান করেন আনিসুল ইমন। তবে নিজের ইনিংসটি বেশি বড় করতে পারেননি তিনি। ইনিংসের ১১তম ওভারের শেষ বলে সাজঘরে ফেরার আগে ৯ চারের মারে ৩১ বলে ৪১ রান করতে সক্ষম হন ২৩ বছর বয়সী এ আগ্রাসী ওপেনার।
বাংলাদেশ ইনিংসের পরের গল্পটা মাহমুদুল জয়ের একার হাতের লেখা। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি করেছেন টপঅর্ডার এ ব্যাটসম্যান, খেলেছেন ইনিংসের ৪৯তম ওভার পর্যন্ত। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৯ চার ও ৩ ছয়ের ১২৩ রানের ইনিংস। মূলত জয়ের ইনিংসে ভর করেই ২৬০ রান পর্যন্ত যায় বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের সংগ্রহ।
পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ব্যাট হাতে ধারাবাহিকতার পরিচয় দিয়েছেন মাহমুদুল জয়। প্রথম ম্যাচে ০ রানে আউট হলেও, পরের চার ম্যাচে তার ইনিংসগুলো যথাক্রমে ৬৬, ১৬, ৮০* ও ১২৩। সবমিলিয়ে ৭১.২৫ গড়ে ২৮৫ রান করে সিরিজসেরার পুরস্কারও জিতেছেন ২০ বছর বয়সী এ তরুণ।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech