ঢাকা ৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৩৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০২১
ক্রীড়াকণ্ঠ ডেস্ক
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০৬ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচ জয়ে রাঙিয়েছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। আজ (বৃহস্পতিবার) নিজেদের শততম ম্যাচে প্রতিপক্ষ সেই জিম্বাবুয়েই। এবারও শেষ হাসি হাসলো বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১৫৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে গিয়ে বিন্দুমাত্র পরীক্ষায় পড়তে হয়নি বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের। পেয়েছে ৮ উইকেটের বড় জয়।
হারারের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বোলারদের চমৎকার বোলিংয়ে ২০ ওভার খেলতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। ১৯ ওভারে তারা অলআউট হয় ১৫২ রানে। সেই লক্ষ্য নাঈম শেখ ও সৌম্য সরকারের হাফসেঞ্চুরিতে ৭ বল আগে ২ উইকেট হারিয়ে টপকে যায় বাংলাদেশ।
শেষ দুই ওভারে ১১ রান প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। ক্রিজে থাকা নাঈম ও নুরুল হাসান সোহান মিলে কাজটা সহজেই সেরে নিয়েছেন। টেস্ট ও ওয়ানডের পর ক্রিকেটের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটেও সাফল্য দিয়ে শুরু করলো বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে সৌম্য-নাঈমের রেকর্ড জুটিতে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। গত বছর ঢাকায় এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ওপেনিংয়ে ৯২ রানের জুটি গড়েছিলেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। বৃহস্পতিবার সৌম্য-নাঈম সেই রেকর্ড (১০২) নিজেদের করে নিয়েছেন।
নাঈমের সঙ্গে সৌম্যও দারুণ ব্যাটিং করেছেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক রান-আউট হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। এর আগে অবশ্য টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ৪৫ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় সৌম্য তার ইনিংসটি সাজিয়েছেন। তিন নম্বরে নামা মাহমুদউল্লাহও রান-আউটের শিকার। ফেরার আগে ১২ বলে ১ চারে করেন ১৫ রান।
তখনও জয় থেকে বেশ দূরে ছিল সফরকারীরা। কিন্তু নাঈম ও সোহানের চমৎকার ব্যাটিংয়ে ৭ বলে আগেই জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ওপেনিংয়ে নামা নাঈম ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। ৫১ বলে ৬ চারে খেলেছেন হার না মানা ৬৩ রানের ইনিংস। অন্যদিকে প্রমোশন পেয়ে ওপরে নামা সোহান ১ চার ও ১ ছক্কায় মাত্র ৮ বলে ১৬ রানের ইনিংস খেলেছেন।
জিম্বাবুয়ের কোনও বোলারই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলতে পারেননি। দুটি উইকেটই বাংলাদেশ হারিয়েছে রান-আউটে।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে মোস্তাফিজুর রহমান-শরিফুল ইসলামদের তোপে ১৯ ওভারে ১৫২ রানে অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। তবে শুরুতে উইকেট হারলেও দ্বিতীয় উইকেটে দারুণ ক্রিকেট খেলছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু রেগিস চাকাভার বিদায়ের পর (৪৩) পাল্টে যায় দৃশ্যপট। দ্রুত ৪ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের বোলাররা ঘুরে দাঁড়িয়ে চেপে ধরে স্বাগতিকদের। চাকাভার ব্যাটে যদিও রানে গতি পেয়েছিল তবে এই উইকেটকিপারের বিদায়ের পর ভেঙে পড়ে প্রতিরোধ। তার আউট হওয়ার ৪ বল পর শূন্যহাতে ফিরে যান অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। অর্থাৎ, এক ওভারে ২ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। এরপর সৌম্য সরকারের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে মাত্র ৬ রান করে তারিসাই মুসাকান্দা ফিরে গেলে বিপদ বাড়ে।
যদিও এক প্রান্তে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে আশা জাগিয়ে যাচ্ছিলেন ডিয়ন মায়ার্স। কিন্তু তিনিও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। শরিফুল ইসলামের দ্বিতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। বাঁহাতি পেসারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরার আগে ২২ বলে ২ বাউন্ডারিতে করেন ৩৫ রান। শেষ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের আর কোনও ব্যাটসম্যান দেয়াল হয়ে দাঁড়াতে পারেননি। ফলে ৬ বল আগেই অলআউট হতে হয় ১৫২ রানে।
বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেওয়া মোস্তাফিজ হলেন সবচেয়ে সফল বোলার। প্রথম উইকেটের পর শেষটাও মুড়ে দিয়েছেন বাঁহাতি এ পেসার। ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে তার শিকার ৩ উইকেট। আলো ছড়িয়েছেন আরেক বাঁহাতি শরিফুলও। ৩ ওভারে ১২ রান খরচায় তার শিকার ২ উইকেট। মিতব্যয়ী ছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও। নতুন বল হাতে তুলে নেওয়া ডানহাতি এ পেসার ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। সাকিব আল হাসান ও সৌম্য সরকার নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ১৯ ওভারে ১৫২ (চাকাভা ৪৩, মায়ার্স ৩৫; মোস্তাফিজ ৩/৩১, শরিফুল ২/১৭, সাইফউদ্দিন ২/২৩, সাকিব ১/২৮, সৌম্য ১/১৮)।
বাংলাদেশ: ১৮.৫ ওভারে ১৫৩/২ (নাঈম ৬৩*, সৌম্য ৫০, সোহান ১৬*, মাহমুদউল্লাহ ১৫; মুজারাবানি ০/১৯, মাসাকাদজা ০/২০)
ফল: বাংলাদেশ ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: সৌম্য সরকার।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech