ঢাকা ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:০৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪
বিজয়ের কণ্ঠ ডেস্ক:
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, এ ভরা মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা নেই। এরপরও দাম বৃদ্ধি হচ্ছে। এজন্য মিল মালিক, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা একে অপরকে দায়ী করলেও মূলত সবাই দায়ী।
তিনি চাল ব্যবসায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে ‘শেয়ালের চেয়ে ধূর্ত’ আখ্যায়িত করে বলেন, আপনারা ভোক্তাদের কথা ভেবে চালের বাজার স্বাভাবিক রাখুন। এজন্য নতুন আইন হচ্ছে; দুই এক সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদে পাশ হওয়ার পর আইনটি কার্যকর হবে। তখন শুধু জরিমানা নয়; জড়িতদের জেলেও যেতে হতে পারে।
রোববার দুপুরে বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মিলনায়তনে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে করণীয় নির্ধারণে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার দাস, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন, বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, ডিসি ফুড কাজী সাইফুদ্দিন, শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন জিহাদী, চাল ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ, আমিনুল হক, ফরিদ আহম্মেদ মোল্লা, গোলাম কিবরিয়া, ইঞ্জিনিয়ার কেতাউর রহমান, আবদুস সবুর খান, আবদুল হান্নান প্রমুখ।
ধান চাল ব্যবসায়ী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বক্তব্য শোনার পর খাদ্যমন্ত্রী চালের মূল্য বৃদ্ধির জন্য বগুড়ার খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানান।
তিনি উপস্থিত ডিসি ফুডকে বলেন, ইন্সপেক্টর ও অন্য কর্মকর্তারা নিয়মিত বাজার পরিদর্শন করেন না। সরকারি নির্দেশ পাওয়ার আগে মাঠে নামেননি। তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে চালের বাজার অস্থিতিশীল হতোনা। তিনি এ ব্যাপারে আগামী সাত দিনের মধ্যে তাকে অবহিত করতে ডিসি ফুডকে নির্দেশ দেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম না বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এবারের নির্বাচনি ইশতেহারে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য না বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। আর এটি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই আমাদের নির্দেশনা দিয়ে মাঠে নামিয়েছেন। শপথ নেওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করা হয়েছে। তার এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চালকল মালিকদের বিরুদ্ধে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগ্রাসী ব্যবসার সুযোগ প্রদানের অভিযোগ করে বলেন, আপনারা যখন ক্ষতিগ্রস্ত হন তখন মিলগুলো কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করেন। পাশাপাশি নিজেরা চাল উৎপাদন করে তা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির সময় তাদের চাহিদামত বস্তার গায়ে প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি উল্লেখ করেন। এছাড়া আমাদের কাছে খবর আছে, আড়তদার ও মিল মালিকরা নির্ধারিত গুদামের বাহিরে বিভিন্ন এলাকায় গুদাম ভাড়া নিয়ে সেখানে গোপনে ধান মজুদ করছেন। এসব এলাকাতেও অভিযান চলবে।
মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার আরও বলেন, আপনারা চাল সরু করার নামে পালিশ করে ১৬ থেকে ২০ লাখ মেট্রিক টন চাল বাতাসে উড়িয়ে দেন। এতে ৪ থেকে ৫ শতাংশ চাল কমে যায়। এতে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয় না; তারা দাম বাড়িয়ে ভোক্তাদের কাছে আদায় করেন। তাই ভোক্তাদের ভালো না বাসলে অন্য পেশার মানুষও আপনাদের ঠকাবে।
তিনি দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোর দাবি জানিয়ে বলেন, প্রতি উপজেলায় দুজন করে ইন্সপেক্টর আছেন; তারা ১৫ দিন পর পর বাজার পরিদর্শন করবেন। আর খাদ্য বিভাগকে এ ব্যাপারে ক্লোজ মনিটরিং করতে হবে। ডাকার পরও যেসব ধান চাল ব্যবসায়ী এ সভায় উপস্থিত হননি মন্ত্রী তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে প্রয়োজনে স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্টে মামলা দিতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।
সভায় কয়েকজন চাল কল মালিক দাবি করেন, এ ব্যবসা করতে গিয়ে তারা ক্ষতিগ্রস্ত ও নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, ধান চালের ব্যবসা করতে গিয়ে আপনারা ক্ষতিগ্রস্ত হননি। বরং ধান চাল ব্যবসায় নামে ব্যাংক থেকে মোটা অংকের ঋণ নিয়েছেন। ওই টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ না করে ঢাকায় ফ্ল্যাট ও এলাকায় একাধিক গাড়ি বাড়ি করেছেন। আর এ কারণেই আপনারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech