মৌলভীবাজারে কমলার বাম্পার ফলনে আনন্দিত চাষিরা

প্রকাশিত: ২:০২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৮, ২০১৮

মৌলভীবাজারে কমলার বাম্পার ফলনে আনন্দিত চাষিরা

দুরুদ আহমেদ, মৌলভীবাজার থেকে
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার বাগানগুলোতে মৌসুমী ফল কমলার বাম্পার ফলন হয়েছে। আর তাতে পাহাড়ি জনপদের কমলা চাষিদের মুখে বইছে আনন্দের হাসি। কমলার এই বাম্পার ফলন বদলে দিয়েছে চাষিদের জীবন। কমলা পাকতে শুরু করায় ইতোমধ্যে বেচা-কেনা শুরু হয়ে গেছে। কমলা ফলনের পাশাপাশি বাজারদর সন্তোষজনক হওয়ায় চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। গাছ থেকে পাকা, আধা পাকা কমলা সংগ্রহ ও খাঁচাবন্দি করে পাইকারদের হাতে তুলে দিয়ে টাকা গুনতে গুনতে প্রশান্তির হাসি মুখে ঘরে ফিরছেন চাষিরা। এ অঞ্চল থেকে এ বছর প্রায় ২ কোটি টাকারও বেশি কমলা বিক্রি হবে বলে আশা করছেন চাষিরা।

গত বছরের চেয়ে এ মৌসুমের দু’তিনগুন বেশি কমলার ফলন ও বিক্রি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন চাষি ও সংশ্লিষ্টরা। অধিক মুনাফা লাভের আশায় ক্রেতা ও চাষিরা পাকা ও আধা পাকা কমলা স্থানীয় বাজার ছাড়াও রাজধানী ঢাকা, ভৈরব ও সিলেটে পিকআপ ভ্যান ও ট্রাকযোগে নিয়ে বিক্রি করছেন।

উপজেলা গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের লালছড়া, শুকনাছড়া, ডুমাবারই, লাঠিটিলা, লাঠিছড়া, হায়াছড়া, কচুরগুল, সাগরনাল ইউনিয়নের পুটিছড়া, পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের কালাছড়া, টালিয়াউড়া এবং জায়ফরনগর ইউনিয়নের বাহাদুরপুরসহ অন্যান্য গ্রামের টিলা বাড়িগুলোতে কমলার পাশাপাশি বাতাবিলেবু, আদালেবু, শাসনি ও জাড়া লেবুর বাগান রয়েছে। আর এ বাগানগুলোতে পেশা হিসেবে সর্বদা পরিচর্যা করা ওই গ্রামগুলোর মানুষের পেশায় রূপান্তরিত হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এক একটি বাগান থেকে প্রায় ২/৩ লাখ টাকার ফলন পাওয়া যায়। কমলা চাষে যেমন খরচ কম, তেমন শ্রমও দিতে হয়না এমনটাই জানিয়েছেন অত্র বাগানগুলোর কৃষকরা। ফলে, কমলা চাষে অত্রাঞ্চলের কৃষকরা আগ্রহী হওয়ার পাশাপাশি স্বাবলম্বিও হচ্ছেন।

জুড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৯১ হেক্টর জমিতে ৮৪টি কমলা বাগান গড়ে উঠেছে। তন্মধ্যে গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নে শতকার ৮০ ভাগবাগান রয়েছে। অত্রাঞ্চলের অধিকাংশ কমলা খাশি জাতের চাষাবাদ হচ্ছে। ওই বাগানগুলো থেকে চলতি মৌসুমে ৫০০ মেট্রিকটন কমলা লেবুর ফলন প্রাপ্তির আশা রয়েছে।

লালছড়া গ্রামের কমলা চাষি মোরশেদ মিয়া (৪৮) বলেন, কমলাএক বছর বেশি হলে অন্য বছর কম হয়। প্রাকৃতির নিয়ম অনুযায়ী এবারের ফলন ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, এবারে কমলার বাজার মূল্য গত বছরের চেয়ে বেশি, আকারেও বড়। তিনি ইতোমধ্যে ৭০ হাজার টাকার কমলা বিক্রি করেছেন। আরো দেড় লাখ টাকার কমলা বিক্রি করতে পারবেন বলে জানালেন।

জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণ রায় জানান, কমলা একটি ছায়া পছন্দকারী বৃক্ষ। শুধু একক বাগান হলে সানবার্ণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কৃষকরা যদি সঠিকভাবে সুষম সার ব্যবহার করে এবং পোকা-মাকড় ও রোগ বালাই দমনের জন্য নিয়মিত বালাই নাশক স্প্রে/সেক্সফরমুন ফাঁদ ব্যবহার করে, তাহলে ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি আকাড়ও বড় হবে। তাছাড়াও অত্রাঞ্চালের কৃষকরা মাল্টা, আদা, জাড়া ও বাতাবি লেবু ফলনে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর