ঢাকা ৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:০৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০১৮
ডেস্ক প্রতিবেদন
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের তারিখ পেছানো হয়েছে। ২৩ ডিসেম্বরের পরিবর্তে আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ পদ্ধতি প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।
কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘স্বস্তির বিষয় বিএনপি, ঐক্যফ্রন্টসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা তাদের সিদ্ধান্তর অপোয় ছিলাম। কারণ আমাদের বিশ্বাস ছিল সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। তারই আলোকে নির্বাচন কমিশন তফসিল পুনঃনির্ধারনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
সোমবার সকালে তফসিল পুনঃনির্ধারণের বিষয়ে কমিশনের বৈঠক হয় উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘গতকাল পর্যন্ত আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি, কারণ তাদের লিখিত প্রস্তাব পেতে আমাদের দেরি হয়েছে। সেটা নিয়ে আমরা আজ সকালে বসেছিলাম।’
সিইসি আরও বলেন, ‘আমরা কেবল মনোনয়নপত্র দাখিল এবং নির্বাচনের অনুষ্ঠানের তারিখ বলব। মাঝখানের যে তারিখগুলো সেগুলো কমিশন বসে আগামী কালকের মধ্যে জানাতে পারব। মনোনয়পত্র দাখিলের শেষ দিন ২৮ নভেম্বর এবং ভোট গ্রহণের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর।’
জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে গত ৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি কে এম নূরুল হুদা। তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৩ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের কথা ছিল।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে সংসদ নির্বাচন পেছানোর দাবি জানিয়েছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ বিভিন্ন জোট। এই দাবির প্রেেিত নির্বাচন পেছানো হবে কি না, তা সোমবার জানানো হবে বলে ১১ নভেম্বর, রবিবার সন্ধ্যায় সিইসি জানিয়েছিলেন।
জাতীয় ঐক্যফন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বারিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি রবিবার ইসিতে জমা দেয় জোটটি।
এ ছাড়া বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী স্বারিত এক চিঠিতেও ইসির কাছে নির্বাচন পেছানোর দাবি জানানো হয়।
আ.লীগের সন্তুষ, ঐক্যফ্রন্টের আপত্তি :
বাংলাদেশে একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের নতুন তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
মতাসীন আওয়ামী লীগ এ ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
জোট থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না দিলেও ফ্রন্টের একজন নেতা বলছেন, এক মাস না পেছালে বিদেশী পর্যবেকের সংখ্যা কমে আসার আশঙ্কা রয়েছে।
রোববার নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার সময় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এ তফসিল এক মাস পেছানোর দাবি জানিয়েছিল।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, কমিশনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে তাদের দাবির প্রতিফলন ঘটেনি এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজই তারা বৈঠকে বসবেন।
তিনি বলেছেন, ‘এটা আরও অনেক পিছাতে পারতেন। তাদের আইনগত কোন বাধা ছিল না এবং কোন তাড়াহুড়াও ছিল না। কেন তারা মাত্র সাতদিন বাড়ালেন এটা বোঝা মুশকিল। আমরা দলীয়ভাবে এটার একটা প্রতিক্রিয়া জানাবো।’
গত আটই নভেম্বর জাতীর উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে ২৩শে ডিসেম্বরকে ভোট গ্রহণের তারিখ রেখে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।
গতকাল সেটি পরিবর্তন করে ৩০শে ডিসেম্বরকে নির্বাচনের নতুন তারিখ হিসেবে ঘোষণা করেছেন তিনি।
সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের প্রোপট হিসেবে সিইসি বলেন বিএনপি, বিকল্প ধারা ও ঐক্যফ্রন্ট সহ অন্যান্য দল নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন তারা এ সিদ্ধান্তের অপোয় ছিলেন এবং তাদের বিশ্বাস ছিল সব দল অংশ নিবে।
সে আলোকেই নির্বাচন কমিশন তফসিল পুন:নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আরেকজন নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বিবিসি বাংলাকে বলছেন তার ভাষায় দুটি যৌক্তিক কারণেই নির্বাচন এক মাস পিছিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তারা।
কমিশনের সেটি মেনে নেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
মান্না বলেন, ‘তিনশোটা আসনে মনোনয়ন দেয়া, বিভিন্ন দল মিলে একটা সমন্বিত কিছু করা, আসনগুলো বণ্টন করা, এগুলো সময় সাপে ব্যাপার। সাতদিন পিছিয়ে দেয়াটা যথেষ্ট নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘দ্বিতীয় আরেকটা বিষয় আমাদের বিবেচনায় ছিল যে যেহেতু একটা খুবই প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের পরে আমরা চাচ্ছি একটা প্রশ্ন মুক্ত, গ্রহণযোগ্য হয়। সেই জন্য যাতে বিদেশি পর্যবেকরা অবাধে আসতে পারেন, পর্যবেণ করতে পারেন। কিন্তু এরকম একটা সময় নির্বাচন হচ্ছে যখন ওদের বড়দিন শেষ করে তাদের আসবার সুযোগই খুব বেশি থাকবে না।’
কিন্তু নির্বাচন কমিশন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলছেন, কোনোভাবেই নির্বাচন আর পেছানো ঠিক হবে না।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বাস্তব সম্মত। ৩০ শে ডিসেম্বরের পরে আমাদের সরকারের সময় থাকে মাত্র ২৮ দিন, ২৮শে জানুয়ারি পর্যন্ত। এর মধ্যে কোন নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচন স্থগিত হতে পারে। আবার পুনঃ নির্বাচন হতে পারে। সেজন্য একটা সময়ের প্রয়োজন। আমার মতে ৩০ তারিখ বাস্তব সম্মত হয়েছে। এর পরে যাওয়া বাস্তবসম্মত হবে না।’
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech