ওসমানীনগর সংবাদদাতা
সিলেটের ওসমানীনগরে ট্রাক চালক স্বপ্ন মিয়া হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ওই হত্যা মামলার একমাত্র আসামি শুকুর আলী ওরফে শুভ ইসলাম (২১) কে গ্রেপ্তারের পর হত্যারহস্য বের হয়ে আসে।

গ্রেপ্তারকৃত শুভ গাইবান্ধা জেলার পলাশ বাড়ী থানার জাইতর বালা গ্রামের মৃত জাফর আলীর ছেলে।

বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে জেলা গোয়েন্দা শাখা ও ওসমানীনগর থানার সমন্বয়ে একটি বিশেষ টিম দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানা পুলিশের সহায়তায় ওসমানপুর বাজারে অভিযান চালিয়ে আসামী শুভ কে গ্রেপ্তার করে। আজ শুক্রবার আসামিকে বিজ্ঞ বিচারক অঞ্জন কান্তি দাসের আদালতে সোপর্দ করলে সে ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

এর আগে গত ২৪ মার্চ সকাল অনুমান সাড়ে ৯ টায় ওসমানীনগর থানাধীন গোয়ালাবাজারে পাথর বোঝাই ট্রাকে চালকের আসনের পিছনের কেবিনে অজ্ঞাত এক লোকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পরে মরদেহটি জনৈক স্বপ্ন মিয়া (২৭) এর বলে তার বড় ভাই কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানাধীন আলীরচর গ্রামের মৃত তোতা মিয়ার ছেলে মুজিবুর রহমান (৪২) সনাক্ত করেন। পরদিন ২৫ মার্চ স্বপ্ন মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামীর বিরুদ্ধে ওসমানীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরবর্তীতে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম এর নির্দেশনা পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মীয়া মোহাম্মদ আশীস বিন হাছান পিপিএম এর নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম মামলার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় একাদিক স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। এক পর্যায়ে ঘটনার একমাত্র আসামি ট্রাকের হেলপার শুভ’র অবস্থান সনাক্ত করে রংপুরসহ দিনাজপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবশেষে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় আসামির হেফাজত থেকে ভিকটিমের মোবাইল ফোন সহ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ঘটনার দুই মাস আগে থেকে ভিকটিম মজিবুর রহমানের সাথে চুক্তিভিত্তিক হেলপার হিসেবে যোগ দেয় আসামী শুভ। চুক্তি মোতাবেক নিয়মিত টাকা পরিশোধ না করায় ক্ষোভে গত ২৩ মার্চ সিলেটের ধোপাগুল এলাকা থেকে পাথর বোঝাই করে নারায়নগঞ্জে যাওয়ার পথে রাত ১টার দিকে গোয়ালাবাজারে চালক মুজিবুর রহমান কেবিনে ঘুমিয়ে গেলে হেলপার শুভ হুইল রেঞ্জ দিয়ে মাথায় এবং চাকু দিয়ে গলায় আঘাত করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান জানান, ‘পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম মহোদয়ের নির্দেশনা ও ক্লোজ মনিটরিংয়ে ওসমানীনগরে একজন ট্রাক চালকের ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করল জেলা পুলিশ। অপরাধীরা অপরাধ করে যে কৌশলেই আত্মগোপন করুক না কেন আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসতে বদ্ধ পরিকর।’