ঢাকা ২রা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:০৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ২, ২০২১
বিজয়ের কণ্ঠ ডেস্ক
বিলেতে গবেষণা ও একাডেমিক সাফল্য নিয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটির মুখ উজ্জ্বল করেছেন ড. তাফহিমা হায়দার। তিনি সম্প্রতি ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জনের পর লন্ডনের কুইনমেরী ইউনিভার্সিটিতে একজন সায়েন্টিস্ট হিসেবে যোগদান করেছেন। তিনি লন্ডন কুইনমেরী ইউনিভার্সিটি থেকে বায়োমেডিক্যাল সায়েন্সের ওপর অধ্যয়ন শেষে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ফার্স্ট ক্লাস (অনার্স) ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি লন্ডনের ইউসিএল থেকে ইনফেকশন ইমিউনিটির ওপর মাস্টার্স করেন।
মাস্টার্স শেষ সম্পন্নের পর তাফহিমা হায়দার যখন ইউসিএল-এ যোগদান করেন। এখানে সায়েন্টিফিক রিসার্চে ভালো ফলাফল, তাঁর গবেষণাকর্ম এবং এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অধ্যবসায় ও ধৈর্য্য থাকায় ইউসিএলের বিজ্ঞানীরা তাকে পিএইচডি করার জন্য উৎসাহিত করেন।
অবশেষে তাফহিমা মলিকোলার বায়োরোলজি’র ওপর পিএইচডি করেন। এ বছর বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ‘পিএনএএস’-এ তাঁর গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। তিনি তার এই গবেষণায এইচআইভি-১ এর ইনফেকশন মানুষের শরীরে কীভাবে বন্ধ করা যায় সেই বিষয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
পিএইচডি সম্পন্ন করার পর একজন রিসার্চ সায়েন্টিস্ট হিসেবে ড. তাফহিমা হায়দার দু’টি কাজের অফার পান। এরমধ্যে একটি হচ্ছে, ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি এবং অন্যটি কুইনমেরী ইউনিভার্সিটিতে। তবে তিনি কুইনমেরী’র অফারটিকে স্বাগত জানান। কারণ তিনি একান্ত আগ্রহী এবং দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, এমন একটি ব্যতিক্রমী প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করবেন,যাতে এ গবেষণাকর্ম ভবিষ্যতে মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে বিশ্বের দরিদ্র মানুষগুলোর কল্যাণ বয়ে আনে এ গবেষণা কার্যক্রম।
কুইনমেরী ইউনিভার্সিটিতে তার রিসার্চের মূল বিষয়বস্তুু হচ্ছে, সাউথ আফ্রিকার শিশু-কিশোরদের অপুষ্টি। অপুষ্টির কারণে সেখানকার ছেলেমেয়েরা তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। কেনো তাঁরা বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশনে ভোগে- তা’ নিয়ে গবেষণা করা।
ড. তাফহিমা ভবিষ্যতে একজন স্বাধীন বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করতে আগ্রহী। আর এ মহতি লক্ষ্য বাস্তবায়নে নিজস্ব একটি ইন্ডিপেন্ডেন্ট রিসার্চ টিম গঠন করবেন তিনি। এ রিসার্চ টিমের গবেষণার মাধ্যমে বিশ্বের মা এবং শিশুদের জীবন বাঁচাতে বিভিন্ন পন্থা এবং কার্যক্রম গ্রহণে সফল হবেন বলে একান্ত আশাবাদী তিনি।
ড. তাফহিমা হায়দার বলেন, তার এ উদ্যোগ দেখে নতুন প্রজন্ম উৎসাহিত হবেন। ভবিষ্যতে বিজ্ঞান গবেষণায় আমাদের নতুন প্রজন্মনের মেধাবীরা এগিয়ে আসবেন বলে তাঁর ঐকান্তিক প্রত্যাশা। বিশেষ করে জাতিগত সংখ্যালঘু ব্যাকগ্রাউন্ডের মেয়েরা এ র্ক্ষেত্রে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হবেন এবং মানব কল্যাণে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করবে।
উল্লেখ্য, ড. তাফহিমা হায়দারের গর্বিত পিতা লন্ডন-বাংলা প্রেসক্লাবের সদস্য, যুুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক দেওয়ান রফিকুল হায়দার (ফয়সল) এবং মাতা জোছনা আরা হায়দার। তাঁরা দু’বোন ও এক ভাই। বাংলাদেশে তাদের আদি নিবাস সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলাধীন নবীগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামে।
ড. তাফহিমা হায়দারের এ অর্জন বিলেতে নতুন প্রজন্মকে নিজেদের ভবিষ্যত বিনির্মাণে স্বপ্ন দেখাবে। সেইসাথে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সাহসী ও আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে বলে অনেকেই মনে করেন। তাফহিমা হায়দারের ডাকনাম চাঁদনী। বিলেতে বিজ্ঞান গবেষণা কার্যক্রমে চাঁদনীর অসাধারণ সাফল্যের আরও খবরের আশায় উন্মুখ হয়ে আছেন দেশে-বিদেশে অবস্থানকারী তাঁর অগণন শুভাকাক্সক্ষীরা।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech