শমশেরনগরে রেলওয়ের ভূমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু

প্রকাশিত: ১২:৪৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৬, ২০১৯

শমশেরনগরে রেলওয়ের ভূমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু

কমলগঞ্জ সংবাদদাতা
সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনের জনগুরুত্বপূর্ণ শমশেরনগর স্টেশন সংলগ্ন রেলওয়ের ভূমিতে অবৈধভাবে স্থাপিত পাকা দেয়ালের স্থাপনা সমুহে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কৃষি লিজ নিয়ে পাকা গৃহ নির্মাণ, স্টেশনের প্লাটফর্ম ঘেষে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের অভিযোগে এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।

বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগ উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করে। বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য (আরএমপি), শমশেরনগর ফাঁড়ির পুলিশ, শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়া জিআরপি থানা পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়।

বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযানে রেলওয়ের ঢাকাস্থ সহকারী ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা অহিদুন নবী, কানুনগো আমিন উদ্দীন, রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনী সিলেট এর মো. মাহতাব উদ্দীনসহ কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সরজমিনে দেখা যায়, শমশেরনগর রেল স্টেশনের পশ্চিম পার্শ্বের কৃষিজমি লিজ নিয়ে ইটের তৈরি পাকা দেয়ালের গৃহ নির্মাণ করে ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোক। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে মঙ্গলবার রাতে প্রচারণা চালায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তবে বুধবার সকালে উচ্ছেদ অভিযানের সময়ে বসবাসরত লোকদের মধ্যে আতঙ্ক ও উৎকন্ঠা দেখা দেয়। কেউ কেউ তড়িঘড়ি মালামাল নিয়ে রাস্তার আশপাশে অবস্থান নেন। অভিযানকালে নবনির্মিত পাকা দেয়ালের তিনটি বসত ঘর, স্টেশনের রেলক্রসিং এলাকায় ছোট ছোট কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সিএনজি-অটোরিক্সা চালক সমিতির অফিস উচ্ছেদ করা হয়।

অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়ে শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ বলেন, বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কৃষি লিজের নামে রেলওয়ের জমি অধিগ্রহণ করে প্রলোভন দিয়ে নিরিহ গরিব মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। শমশেরনগর রেলওয়ের জমিতে প্রায় শতাধিক গরিব পরিবার রয়েছে। এসব গরিব লোকেরা সহায় সম্বল হারিয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছে। তবে উচ্ছেদ অভিযানের পূর্বে নিরিহ গরিব লোকদের পুনর্বাসন এবং তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া টাকা উদ্ধারের প্রতি সংশ্লিষ্টদের কাছে তিনি দাবি জানান।

রেলওয়ের কুলাউড়া অঞ্চলের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, ইতিপূর্বে সরেজমিন পরিদর্শন করে এ বিষয়ে অভিযোগ এবং সংবাদপত্রে রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ঢাকা-সিলেট রেলপথে ডবল লাইন নির্মাণ করা হবে। পর্যায়ক্রমে এই সেকশনের সবগুলো অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।

অভিযান বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম বলেন, কৃষিজমি লিজ নিয়ে অবৈধভাবে বাসাবাড়ি স্থাপন, জমি নিয়ে মামলা এবং সংবাদ মাধ্যমে এ সম্পর্কিত সংবাদ প্রকাশের পর এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে অভিযানের পূর্বে বসবাসরতদের মালামাল সরিয়ে নিতে জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অবৈধভাবে স্থাপিত উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। জনবল ও বোলডোজার সংকটের কারণে পর্যায়ক্রমে সবক’টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর