রাজনগর উপজেলায় নির্বাচনী হাওয়া : সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিএনপি

প্রকাশিত: ৩:২৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০১৯

রাজনগর উপজেলায় নির্বাচনী হাওয়া : সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিএনপি

রাজনগর সংবাদদাতা
৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত রাজনগর উপজেলা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতেনা কাটতেই আসছে উপজেলা নির্বাচন। তফসিল ঘোষণার আগেই রাজনগর উপজেলায় সর্বত্র বইছে নির্বাচনী গরম হাওয়া। পাড়া মহল্লায়, হাটে বাজারে, চায়ের দোকানে ভোটারদের মধ্যে ভালমন্দ প্রার্থী বাছাইয়ের মুখরোচক গল্প।

নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। প্রার্থী চূড়ান্তে তেমন কোন আগ্রহ নেই দল দুটির নেতা-কর্মীদের মাঝে। বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করছে না বলে সাফ জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত ২২ জানুয়ারী ঢাকাস্থ সাংবাদিকদের দেওয়া এমন বক্তব্যের ভিত্তিতে অনেকটা আশাহত রাজনগর উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা। মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, এ সরকারের অধীনে যে, বিএনপি কোন নির্বাচনে নিবে না শুধু তাই নয়, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে কেউ কোথাও প্রার্থী হলে তাকে বহিষ্কার করা হবে। দলের কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে সেটা তার ব্যক্তিগত এবং তাকে দল থেকে পদত্যাগ করতে হবে। দলের পদে থেকে নির্বাচন করা যাবে না। এমন সিদ্ধান্তের কথা মাথায় রেখে সম্পূর্ণ নিশ্চুপ ভূমিকায় রয়েছেন বিএনপি প্রার্থীরা। সেই সাথে জোটের শরীক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীও নিরব রয়েছে বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করে।

এদিকে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ার খবরে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা রীতিমত দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। তারা কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখছেন নিজের মনোনয়নের ব্যাপারে অনেকটা আশার কথা ভোটারদের সামনে তুলে ধরছেন। শুধু চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রায় এক ডজন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেকে যোগ্যতার মাপকাটিতে জনগণের বিবেচনায় আনতে চাইছেন।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এ হাকিম বক্স বলেন, কেন্দ্র সিদ্ধান্ত দিলে রাজনগরে প্রার্থী দেয়ার চিন্তা করবে দল। একই কথা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর আব্দুল মান্নানেরও। তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠ হয়না। গত একাদশ সংসদ নির্বাচনই তা প্রমান করে। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করা প্রশ্নই আসে না । তিনি বিগত দুইবার উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করে অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরেছিলেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দুই বারের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মিছবাহুদ্দোজা ভেলাই মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় নির্বাচনমুখী দল। তাছাড়া দলে যোগ্য প্রার্থীরও অভাব নেই, ভোটের ও অভাব নেই। তিনি নৌকা প্রতীক পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, চেয়ারম্যান পদে রাজনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক দুই বারের উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. মিছবাহুদ্দোজা ভেলাই, সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান আছকির খান, মনসুরনগর ইউনিয়নের দুই বারের বর্তমান চেয়ারম্যান মিলন বখত, টেংরা ইউনিয়নের টানা দুইবারের বর্তমান চেয়ারম্যান টিপু খান, কামারচাক ইউনিয়নের দুইবারের বর্তমান চেয়ারম্যান নজমুল হক সেলিম, মনসুরনগর ইউনিয়নের দুই বারের সাবেক চেয়ারম্যান ছাদিকুর রহমান, মুন্সীবাজার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাতির মিয়া, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোঃ শাহজান খান।

বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন, রাজনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম হাকিম বকস সুন্দর, সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম সেলুন, জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমীর আব্দুল মান্নান, খেলাফত মজলিসের জেলা সম্পাদক সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আহমদ বিলাল ও এডভোকেট আব্দুল মতিন চৌধুরী।
ভাইস চেয়ারম্যান পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, রাজনগর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিরি চেয়ারম্যান শাহেদুজ্জামান আনসারী মনাই, রাজনগর প্রেসকাবের সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহমান সোহেল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক সদস্য ২নং উত্তরভাগ ইউনিয়ন নিবাসী ছাইফুল আহমদ ছফু ও মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ডলি বেগম, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশিদা জাফর ও সাবেক ইউপি সদস্য মুক্তি চক্রবর্ত্তী মাঠে থাকার সম্ভবানার কথা রয়েছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর