জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদার ৭ বছরের কারদণ্ড রায় প্রত্যাখান করে কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

প্রকাশিত: ৫:২৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৯, ২০১৮

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদার ৭ বছরের কারদণ্ড রায় প্রত্যাখান করে কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

ডেস্ক প্রতিবেদন
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদ- দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় তাকে ১০ লাখ টাকা অর্থদ-ও করা হয়। অনাদায়ে ভোগে করতে হবে আরো ছয় মাসের কারাদ-। এছাড়া এ মামলায় অপর তিন আসামি হারিছ চৌধুরী, জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খানকেও একই দ-ে দ-িত করা হয়।
একই সাথে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে রাজধানীর কাকরাইলে সুরাইয়া বেগমের কাছ থেকে কেনা ৪২ কাঠা জমি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান আজ সোমবার এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামিপরে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপরে প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজলসহ আরো কয়েকজন প্রসিকিউটর।
সোমবার বেলা সাড়ে এগারটায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। রায় ঘোষণা শেষ হয় দুপুর সোয়া ১২টায়।
আদালত বলেন, এ ঘটনার সময় খালেদা জিয়া দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ছিলেন। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ এ পদে আসীন থেকে তিনি জনগণের অর্থের অপব্যবহার করেছেন। তাই তার সর্বোচ্চ সাজা হওয়া প্রয়োজন। আর এ জন্য তাকে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের সর্বোচ্চ সাজা সাত বছর কারাদ-ে দ-িত করা হলো যেন এটি একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।
রায় প্রত্যাখান করে কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির:
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রায় প্রত্যাখান করে একদিনের প্রতিবাদ বিােভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করছি যে, এই রায় কোনোমতেই ন্যায়বিচার নয়। বেগম জিয়া ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এটা সম্পূর্ণভাবে একটা ফরমায়েশী রায়। সরকার যা বলছে, যা চেয়েছে এবং সরকারের মন্ত্রীরা যা বলছেন, সেগুলোর প্রতিফলন এই রায়ের মধ্য। তাই আমরা এই রায় প্রত্যাখান করছি। একই সঙ্গে আমরা মনে করছি, জনগণ যা চাচ্ছে, তার বাইয়ে আরেকটি নির্বাচন করতে চাচ্ছে সরকার।’
মির্জা ফখরুল বলেন, রায়ের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সারাদেশে জেলা সদর ও মহানগরগুলোতে বিােভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। কর্মসূচিতে বিএনপি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও দেশের সকল মানুষকে অংশগ্রহণ করার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রায়ের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে, বেগম জিয়াকে রাজনীতি ও আসন্ন নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার জন্য একটি সাজানো মামলায় সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে এবং কোনো স্যা-প্রমাণ ছাড়াই তাকে সাজা দেয়া হয়েছে।’ অসুস্থ থাকা অবস্থায় কোনো মামলায় বিচারের রায় দেয়া আইনবিরোধী বলেও মন্তব্য করে তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আরেকটি মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে সাজা দেয়া হয়েছে। এই বিচারকার্য একতরফাভাবে চলছে। অসুস্থ হওয়ার পরে বেগম জিয়া আদালতে আসতে পারছিলেন না। এরপর বেগম জিয়ার বিচার করার জন্য আদালত বসানো হয় কারাগারে!’
পরে রায়ের প্রতিবাদে নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর-বিএনপির নেতাকর্মীরা বিােভ মিছিল করেন। বিােভ মিছিল থেকে বেগম জিয়াকে দেয়া ৭ বছরের সাজা প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তুলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর