ঢাকা ১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৪০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২০
ডেস্ক প্রতিবেদন : জামালগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রভাষক, বাংলাদেশ কলেজ বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সুনামগঞ্জ জেলার সদস্য ও ধর্মপাশা উপজেলা যুবলীগ নেতা আবু তৌহিদ জুয়েল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় দিকে উপজেলার বাদশাগঞ্জ বাজারে এলাকাবাসী ও সচেতন নাগরিক সমাজ এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে। মানববন্ধনে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা প্রভাষক জুয়েলে খুনিদের ফাঁসির দাবির পাশাপাশি মৃত্যুর পর তার ময়না তদন্ত প্রতিবেদন আসামী পক্ষের কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা নিয়ে পরিবর্তন করে আসামীদের পক্ষে দেয়ায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ রফিকুল ইসলামকে আইনের আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি করেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নূর হোসেন এজাহারভুক্ত আসামী বাবলু মিয়ার বয়স কমিয়ে ১৬ বছর করে জন্মনিবন্ধ সার্টিফিকে দেয়। যা আদালতে জব্ধ আছে। তাকেও আইনের আওয়তা এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
এদিকে, একই দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন এলাকাবাসী। স্মারকলিপির অনুলিপি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, আইজিপি, ডিআইজি, বিশেষ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিবিআইকেও প্রদান করা হয়েছে।
অপরদিকে, প্রভাষক জুয়েল হত্যা মামলা তদন্তে করে বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেশস্টিগেশনের (পিবিআই) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারোয়ার জাহান ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আওলাদ হোসেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বাদশাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের অধ্যাপক আব্দুল হাই, মধ্যনগর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন তালুকদার, মদনমোহন কলেজের প্রভাষক ও ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক প্রভাষক মোহাম্মদ সুয়েবুর রহমান, প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমান আফজাল, সেলবরষ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. দুলা মিয়া, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামন মহন, স্কুল শিক্ষক আনোয়ারুল হক, এমদাদুল হক বকুল, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, কলেজ শিক্ষার্থী সালমান, রোজনাল, জহিরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী হারুন মিয়া প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, প্রভাষক আবু তৌহিদ জুয়েল তিনি শুধু একজন আদর্শ শিক্ষকই ছিলেন না। তিনি ছিলেন ধর্মপাশা উপজেলা যুবলীগের একজন পরিচ্ছন্ন নেতা। দুই বছর পূর্বে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তাকে প্রকাশ্যে দিবালোকে পিটিয়ে হত্যা করলেও তার হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে সুবিধা নিয়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম নিহত জুয়েলের ময়নাতদন্ত রিপোর্টটি নয়ছয় করে দোষীদের বাঁচানোর অপচেষ্টা করেন। পরে উক্ত ভূয়া ময়নাতদন্ত রিপোর্টের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দেন মামলার বাদী। আদালত নারাজি গ্রহণ করে পুনরায় সুষ্ঠু ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দাখিলের জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর সকালে উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের কাকিয়াম গ্রামের নিজ বাড়িতে বাড়ির সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজনদের হামলায় প্রভাষক মোহাম্মদ আবু তৌাহিদ ওরফে জুয়েল (৪০) নিহত হন। পরে এ ঘটনায় ওইদিনই নিহত জুয়েলের বড় ভাই মোহাম্মদ শোয়েব রহমান বাদী হয়ে একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ও বিপ্লব মিয়াসহ ১১ জনকে আসামি করে ধর্মপাশা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর পর গত ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি ওই মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পিবিআইকে।
এ ব্যাপারে সিলেট বিভাগের পিবিআইর পুলিশ সুপার মোঃ সারোয়ার জাহান জানান, খুবই গুরুত্বের সাথে এ মামলাটির তদন্তের কাজ চলছে।
মানববন্ধনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ধরনিকন্যা শেখ হাসিনার নিকট মামলার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সকল আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির জন্য জোর দাবি জানানো হয়।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech