জেলা বিএনপির ১৮ ইউনিটের কমিটি ঘোষণা চলতি সপ্তাহে

প্রকাশিত: ৭:৩৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২০

জেলা বিএনপির ১৮ ইউনিটের কমিটি ঘোষণা চলতি সপ্তাহে

নিজস্ব প্রতিবেদন : ৪ মাসের অধিক সময় পেরিয়ে গেছে সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির। একটি সফল কাউন্সিলের লক্ষ্যে গেলো বছরের ২ অক্টোবর কেন্দ্র থেকে কামরুল হুদা জায়গীরদারকে আহ্বায়ক করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর কেটে গেছে ৪ মাসেরও বেশী সময়। এই দীর্ঘ সময়ে জেলা বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সকল ইউনিটে পৃথক মতবিনিময় সভা করলেও কোন ইউনিটেরই কমিটি ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি।
১১ জানুয়ারী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির এক সভায় ১৭ ইউনিটের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শুধু আহ্বায়কের নাম ঘোষনা করার প্রস্তুতি থাকার পরও অনিবার্য কারণে তা ঘোষনা করা হয়নি। সর্বশেষ ৯ ফেব্রুয়ারী বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করে ১৮ ইউনিটের আহ্বায়ক কমিটি প্রস্তুত করা হয়েছে বলে বিএনপির নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র থেকে জানা গেছে। ঐ সূত্র জানায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি প্রস্তুত রয়েছে এই সপ্তাহের যে কোন দিনই সকল ইউনিট কমিটি এক সাথে ঘোষনা করা হবে। পূর্বে শুধু আহ্বায়কের নাম ঘোষনা করার সিদ্ধান্ত হলেও এখন ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হবে বলেও জানা যায়।

সূত্রে জানা যায়, জেলা বিএনপির কার্যক্রম গতিশীল করতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সিলেট জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের সাথে দুই দফায় স্কাইপি এপসের মাধ্যমে মতবিনিময় করেন। দলের চেয়ারম্যানের নির্দেশনা মোতাবেক জেলা বিএনপিকে ঢেলে সাজানো, তৃনমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে ও ত্যাগীদের সমন্বয়ে তৃনমূল বিএনপিতে নতুন গতি আনার লক্ষ্যে বিস্তারিত পদক্ষেপ নেয়া হয়। তৃনমূলকে চাঙ্গা করতে ও একটি সফল কাউন্সিল অনুষ্ঠান আয়োজনের লক্ষ্যে সর্বশেষ জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কামরুল হুদা জায়গীরদারকে আহ্বায়ক করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির টীম লিডার হিসেবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী ডা: এজেডএম জাহিদ হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি কয়েক দফায় জেলা বিএনপি ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন। এদিকে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে প্রথমেই ১৮ টি উপজেলা ও পৌর শাখা গঠনের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়। এলক্ষ্যে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে পৃথকভাবে প্রায় ১৫দিন ব্যাপী সকল ইউনিটের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এসব সভায় তৃনমূল নেতাকর্মীদের মতামত নেয়া হয়। ১১ জানুয়ারী জেলা বিএনপির একটি সভায় ১৭টি ইউনিটের আহ্বায়কের নাম নির্ধারিত করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ঘোষনা করা হয়নি। তবে বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যমে সেইসব কমিটির আহ্বায়কের নাম প্রকাশিত হয়। ঐ সভার পরপরই শুধু আহ্বায়কের নাম ঘোষণার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বিএনপি। ফলে আর কমিটি ঘোষনা করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত বিএনপির পক্ষ থেকে সকল ইউনিটে ২১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এই সপ্তাহের যে কোন সময় এক সাথে জেলার আওতাধীন ১৮টি ইউনিটের কমিটি ঘোষনা করা হবে বলে জানিয়েছেন আহ্বায়ক কমিটির একাধিক নেতৃবৃন্দ।
জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ১৮ ইউনিটের আহ্বায়ক কমিটির ঘোষনার পরপরই এসব ইউনিটের অধীনস্ত উপজেলার আওতাধিন সকল ইউনিয়ন এবং পৌরসভার আওতাধীন সকল ওয়ার্ডের নতুন কমিটি দেয়া হবে। তারপর ওয়ার্ড থেকে শুরু হবে দল পুনর্গঠন কার্যক্রম। পর্যায়ক্রমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা ও পৌর শাখা সমুহের কাউন্সিল সম্পন্ন করা হবে। উপজেলা ও পৌর ইউনিটের কাউন্সিল সম্পন্ন হওয়ার পরই জেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। যেহেতু ৪ মাসের বেশী সময়ে জেলা বিএনপি ১৮ ইউনিটের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি। সেখানে জেলার কাউন্সিল অনুষ্ঠান আয়োজন করতে কতটুকু সময় লাগবে এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেন নি কেউ। তবে তারা বলেছেন জেলা বিএনপির কাউন্সিলের প্রথম প্রক্রিয়া হচ্ছে উপজেলা কমিটিগুলা। এই কমিটিগুলা ঘোষিত হলে তৃনমূলের কাজ দ্রুত গতিতে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির একাধিক শীর্ষ স্থানীয় নেতা।
এব্যাপারে সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, বিএনপি একটি বড় দল। এছাড়া সরকারের সীমাহিন জুলুম নিপীড়নের কারনে সর্বত্র ভীতিকর পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে। এমন অবস্থায় দ্রুত গতিতে কোন কাজ করলে তা বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারে। তাই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনার আলোকে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে তৃনমূল নেতাকর্মীদের মতামত নেয়া হয়েছে। কমিটি গঠনে সব ধরনের বিতর্ক এড়াতেই মূলত একটু বেশী সময় লেগেছে। আমাদের বিশ^াস এই সপ্তাহেই বিতর্কমুক্ত ১৮টি ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনা করা হবে। পর্যায়ক্রমে তৃনমূল গঠনের পর সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় জেলা বিএনপির সফল ও সার্থক কাউন্সিল সম্পন্ন হবে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার বলেন, আমরা দলে কোন বিভক্তি চাইনা। তৃনমূল নেতাকর্মীরাই বিএনপির প্রাণ। তাই দলের চরম দুর্দিনে তৃনমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে ত্যাগীদের সমন্বয়ে আমরা জেলার আওতাধীন সকল ইউনিটকে সাজাতে চাই। এই মহৎ লক্ষ্যের কারণে আমাদেরকে ধীরগতিতে কাজ করতে হয়েছে। তবে আমরা পুরোপুরিভাবে ইউনিট কমিটি ঘোষনা করতে প্রস্তুত রয়েছি। যে কোন সময়ে আমরা কমিটি ঘোষনা করবো।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর