ঢাকা ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:৪০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৬, ২০১৯
নিজস্ব প্রতিবেদন : ৩৩ মামলার খরগ ঝুলে আছে শফিকের উপর। তিনি সিলেটের বাসিন্দা এবং জামায়াতের নতুন আমির। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা – ১৫ আসনে জামায়াতে ইসলাম থেকে ধানের শীষের প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। নির্বাচনে তিনি যে হলফনামা জমা দেন তাতে নিয়ম অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলোর উল্লেখও আছে। গত বছর ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর স্বাক্ষরিত এই হলফনামায় তার বিরুদ্ধে বিচারাধীন ৩৩টি মামলার উল্লেখ আছে।
জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ৯০ বছরের কারাদণ্ড ভোগরত অবস্থায় মারা গিয়েছিলেন। দলের দ্বিতীয় আমির মতিউর রহমান নিজামীও ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর দলের আমির হন মকবুল আহমাদ।
মকবুল আহমাদ দলের আমির হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তুলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রদান আব্দুল হান্নান খান গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, এসব অভিযোগের অনুসন্ধানের জন্য একজন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। বিবিসিকে তিনি আরও বলেছিলেন, ‘‘সে (মকবুল আহমাদ) যে রাজাকার ছিল, সেটা ঐ এলাকার তালিকায় রয়েছে। এটা ঠিক।’’ তবে চতুর্থ আমির মো. শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে হলফনামায় উল্লেখ করা মামলাগুলোর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের কোন মামলা নেই।
হলফনামায় উল্লেখ করা মামলাগুলোর মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলা আমলে নেয় ঢাকার ১ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ। এই মামলার সব কার্যক্রম স্থগিত করেছে হাইকোর্ট। মতিঝিল থানার ০৯(১১)১২ নম্বর মামলাটি তদন্তাধীন আছে। বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইনের ৩ ধারায় করা দুইটি মামলাসহ তালিকায় থাকা পরের তিনটি মামলা চার্জ শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ আছে। আইন শৃঙ্গখলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইনের ৪/৫ ধারায় করা একটি মামলা স্বাক্ষীর জন্য আছে। তালিকার ৭ নম্বরে থাকা মতিঝিল থানার মামলা নং ১২(১১)১২ মামলাটি চার্জ শুনানির জন্য আছে।
তেজগাঁও থানায় দণ্ডবিধির ১৪৩/১৮৬/৩৩২/৩৫৩ ধারায় করা একটি মামলাও চার্জ শুনানির জন্য আছে। তালিকার ৯ নম্বরে থাকা বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইনের ৩ ধারায় করা মামলাটির সব কার্যক্রম হাইকোর্ট স্থগিত করেছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।
তালিকায় ১০ ও ১১ নম্বর ক্রমিকে থাকা মামলা দুইটি করা হয়েছে আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন এর ৪ / ৫ ধারায়। মামলা দুইটি যথাক্রমে ‘স্বাক্ষীর জন্য আছে’ এবং ‘হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক মামলার সকল কার্যক্রম স্থগিত।’ ১২ ও ১৩ নম্বর ক্রমিকে থাকা মামলা দুইটির বর্তমান অবস্থার গড়েও লেখা হয়েছে, ‘হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক মামলার সকল কার্যক্রম স্থগিত।’ ১৪ নম্বরে থাকা রমনা থানা মামলা নং ৩৫(০৯)১১ বর্তমানে তদন্তাধীন।
আর ১৫ থেকে ১৮ নম্বর ক্রমিকে থাকা চারটি মামলারই বর্তমান অবস্থা বিষয়ে হলফনামায় বলা হয়েছে, ‘চার্জ শুনানির জন্য আছে।’ ১৯ ও ২০ নম্বরে থাকা আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন এর ৪/৫ ধারার মামলা দুইটির অবস্থা যথাক্রমে ‘রিভিশনে আছে’ ও ‘হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক মামলার সকল কার্যক্রম স্থগিত।’ ২১ ও ২২ নম্বরে থাকা উত্তরা পূর্ব ও পশ্চিম থানার মামলা দুইটি যথাক্রমে ‘চার্জ শুনানির জন্য আছে’ ও ‘স্বাক্ষীর জন্য আছে।’ ২৩ নম্বরে থাকা ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের মামলাটি ‘হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক মামলার সকল কার্যক্রম স্থগিত।’
২৪ ও ২৬ নম্বরে থাকা বিস্ফোরণ দ্রব্যাদি উপাদানাবলী আইনের দুইটি এবং ২৭ থেকে ২৯ নম্বরে থাকা মামলাগুলো ‘চার্জ শুনানির জন্য আছে।’ ২৫ নম্বরে থাকা কলাবাগান থানার মামলা নম্বর ০৭(১২)১৩ ‘স্বাক্ষীর জন্য আছে।’ আর ৩০ নম্বরে থাকা বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩) মামলাটি ‘চার্জ শুনানির জন্য আছে।’ ৩১ নম্বরে থাকা ১৮৭৮ সনের অস্ত্র আইনের ১৯(ই) তৎসহ ১৯০৮ সনের বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইনের ৪ / ৫ / ৬ ধারার মামলাটি ‘হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক মামলার সকল কার্যক্রম স্থগিত।’ একইভাবে ৩২ নম্বরে থাকা মামলাটিও ‘হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক মামলার সকল কার্যক্রম স্থগিত।’ সর্বশেষ ৩৩ নম্বরে থাকা উত্তরা পূর্ব থানার ০২(১২)১২ নম্বর মামলাটি ‘চার্জ শুনানির জন্য আছে’ বলে হলফনামায় উল্লেখ আছে।
অভিযুক্ত এসব মামলার পাশাপাশি অতীতের আরেকটি মামলার উল্লেখ আছে হলফনামায়। দণ্ডবিধির ১৫৭, ১৫৮, ১৪৯, ৩৫৩ ও ১০৯ ধারায় করা এই মামলায় তিনি খালাস পান বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য গত ১২ নভেম্বর সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে শফিকুর রহমান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নতুন আমির নির্বাচিত হয়েছেন বলে জানানো হয়।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech