ঢাকা ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৯
ডেস্ক প্রতিবেদন: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে সদ্য নিয়োগ পাওয়া মিয়া গোলাম পরওয়ার ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৫ আসন (ফুলতলা ও ডুমুরিয়া) থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। একই সংসদীয় আসনে গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে স্থানীয় নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে হওয়া মোট ২৬টি মামলার উল্লেখ আছে। তবে এসব মামলার মধ্যে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের কোন মামলা নেই।
নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালের নভেম্বরে জমা দেয়া হলফনামা অনুসারে এসব মামলার মধ্যে তার বিরুদ্ধে ২৩টি মামলা চলমান ছিল। আর বাকি তিনটি মামলা আগেই নিষ্পত্তি করেছিল খুলনার আদালত। যাতে তিনি খালাস পেয়েছিলেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়।
হলফনামায় উল্লেখ করা মামলাগুলোর মধ্যে প্রথম মামলাটি করা হয়েছে দ্রুত বিচার আইনের ৪/৫ ধারায়। ২০১৮ সালে ১৯ নভেম্বর স্বাক্ষর করা এই হলফনামায় মামলাটির ফলাফলের ঘরে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মামলাটি ‘স্বাক্ষীর জন্য’ আছে।
পরের দুটি মামলা আছে সিএমএম, খুলনা মহানগরীতে। যার প্রথমটি ‘স্বাক্ষীর জন্য’ এবং দ্বিতীয়টি ‘চলমান’ বলে ফলাফলের ঘরে উল্লেখ করা হয়েছে। একইভাবে চতুর্থ ও পঞ্চম নম্বরে থাকা মামলা দুটির ফলাফলের ঘরেও লেখা হয়েছে ‘চলমান’। মামলা দুটি করা হয়েছে রাজধানীর মতিঝিল থানায়।
এর পরের তিনটি মামলাও করা হয়েছে রাজধানীর মতিঝিল থানায়। যেগুলোর ফলাফলের ঘরে লেখা আছে যথাক্রমে ‘স্থগিত’, ‘স্বাক্ষীর জন্য’ এবং ‘চার্জের জন্য’। আর ৯ নম্বর ক্রমিকে থাকা মামলাটি করা হয়েছে দণ্ডবিধির ১৪৩ / ১৪৭ / ১৪৮ / ১৪৯ / ৩৩২ / ৩৩৩ / ৩৫৩ / ৪২৭ ধারায়। রাজধানীর রামপুরা থানার এই মামলাটি রয়েছে ‘চার্জের জন্য’।
দশ ও এগারো নম্বর ক্রমিকে থাকা পল্লবী থানার মামলা দুটি ‘তদন্তাধীন’। বার ও তের নম্বরে থাকা কদমতলী থানার মামলা দুটি ‘স্থগিত’ আছে। ১৪ ও ১৫ নম্বরে থাকা মামলা দুটি হয়েছে খুলনায়। এই নালিশী মামলা দুটিও ‘তদন্তাধীন’। আর বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ / ১৬ (২) / ২৫ ধারায় করা একটি মামলা আছে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, কয়রা, খুলনাতে। ১৬ নম্বরে থাকা এই মামলাটিও ‘তদন্তাধীন’।
১৭ থেকে ২০ নম্বরে থাকা মামলাগুলো আছে ‘স্বাক্ষীর জন্য’। মামলা চারটিই আছে খুলনার আদালতে। আর ২১ নম্বরে থাকা বিশেষ ক্ষমতা আইনের নালিশী মামলাটিও আছে খুলনার আদালতে। যা ‘তদন্তাধীন’ বলে ফলাফলের ঘরে উল্লেখ করা হয়েছে। চলমান মামলাগুলোর তালিকার শেষ দুটি মামলা করা হয়েছে রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায়। ২২ ও ২৩ নম্বর ক্রমিকে থাকা মামলা দুটির ফলাফলের ঘরে লেখা আছে যথাক্রমে ‘অব্যাহতি’ এবং ‘কোয়াসড’।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে তাকে ২০২০-২০২২ কার্যকালের জন্য ‘সেক্রেটারি জেনারেল’ হিসেবে শপথবাক্য পাঠ করান দলের আমির। বৃহস্পতিবার জামায়াতের প্রচার বিভাগ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘মিয়া গোলাম পরওয়ার ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৫ আসন (ফুলতলা ও ডুমুরিয়া) থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭৪ সালে তিনি জাসদ ছাত্রলীগে যোগ দেন।
প্রচার বিভাগ থেকে জানানো হয়, ১৯৭৭ সালের শেষার্ধে ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াত পেয়ে তিনি ইসলামী আদর্শভিত্তিক ছাত্র রাজনীতিতে শরিক হন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যুক্ত হন। এরপর তিনি বিভিন্ন মেয়াদে ছাত্রশিবিরের ফুলতলা থানা সভাপতি, খুলনা সদর থানা সভাপতি, বিএল কলেজ সভাপতি, কমার্স কলেজ সভাপতি ও ১৯৮৪-৮৫ সেশনে খুলনা মহানগরীর সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রজীবন শেষ করে তিনি সাংবাদিকতা ও অধ্যাপনা পেশার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। দৈনিক সংগ্রামের খুলনা প্রতিনিধি হিসেবে তিনি কয়েক বছর দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় খুলনা প্রেসক্লাব নির্বাচনে সর্বাধিক ভোট পেয়ে তিনি কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। দুই বছর তিনি খুলনা ইসলামিয়া কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ছাত্রজীবন শেষ করেই তিনি জামায়াতে যোগ দেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ নভেম্বর জামায়াতের নতুন আমির হিসেবে ডা. শফিকুর রহমানের নাম ঘোষণা করে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। গত ৫ ডিসেম্বর তিনি আমির হিসেবে শপথগ্রহণ করেন।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech