ছাতকে সংঘষের্র ঘটনায় নিহত ১ আটক ৩, এলাকায় পুলিশ মোতায়েন

প্রকাশিত: ৭:৫৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩১, ২০২০

ছাতকে সংঘষের্র ঘটনায় নিহত ১ আটক ৩, এলাকায় পুলিশ মোতায়েন

ছাতক প্রতিনিধি : ছাতকে খেলার মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে এক স্কুল ছাত্র নিহতের ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। গত বুধবার উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের ছোট মায়েরকুল গ্রামের খেলার মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন কিশোর পাভেল আহমদ (১৫) কে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধিন অবস্থায় বৃহম্পতিবার গভীর রাতে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। সে উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের খুরমা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র ও ছোট মায়েরকুল গ্রামের ফারুক মিয়া একমাত্র পুত্র পাভেল। এ নিহতের ঘটনায় পুলিশ সুপারে নিদেশে তাৎক্ষনিক পুলিশ ৩জন কে আটক করতে সক্ষম হয়। উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের ছোট মায়েরকুল গ্রামে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আলী নুর, সাবাজ আলী ও হাবিবুর রহমানকে আটক করে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মায়েরকুল গ্রামের দাদন ব্যবসায়ী আব্দুল কদ্দুছ ও কাদির মিয়ার নেতৃত্বে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে স্কুল ছাত্র পাভেলের উপর অতকিত হামলা চালায়। এ হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মুখামুখি সংঘর্ষ বাধেঁ। স্কুল ছাত্র পাভেল নিহতের ঘটনায় গত বৃস্পতিবার সকাল থেকে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়ায় এ ঘটনার খরব পেয়ে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে এসে তার গাড়ি থেকে নেমে খেলার মাঠে শ’শ’জনতাকে শান্ত থাকার আহবান জানিয়ে বলেন কিশোর হত্যার সঙ্গে জড়িত অপরাধি যেই হোক না কেন তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে বলে এলাকাবাসিকে প্রতিশ্রুতি দেন। এসময় তার সঙ্গে ছাতক দোয়ারাবাজার জোনের সার্কেল বিল্লাল আহমদ, ছাতক থানার অফিসার ইনর্চাজ মোস্তফা কামাল ও জাউয়াবাজার পুলিশ ফাড়ি ইনচাজ নির্মল দেব। পরে ঘটনাস্থলে খেলার মাঠে এলাকাবাসি লোকজনকে নিয়ে পুলিশ সুপার এক মত বিনিময় সভা অনুষ্টিত হয়।

.
উপস্থিত জনতা ও পুলিশ সুপার কাছে এলাকাবাসি ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল মছবিরের নেতৃত্বে একটি ক্যাডার বাহিনী গড়ে উঠে। এ বাহিনীর অত্যাচার নিযার্তনে গ্রাম ও ইউনিয়নবাসি অতিষ্ট। তার অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে হত্যার হুমকি ও প্রশাসন দিয়ে সায়েন্তা করার হুমকি দেয়। গ্রামের খেলার মাঠ রক্ষা নামে চেয়ারম্যান একাধিক বার কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেন গ্রামবাসি।

.
মায়ের গ্রামের প্রবাসি আব্দুল আহাদের স্ত্রী ফুলমতি বেগম পুলিশ সুপারের কাছে চেয়ারমান মছবির বিরুদ্ধে খেলার মাঠ রক্ষা নামে দফা-দফা দলিল করে বিরোধ সৃষ্টি করে আসছে। যে বেশী টাকা তাকে দেবে তার পক্ষে চেয়ারম্যান থানার গিয়ে কাজ করে। গ্রামের বাসিন্দা মাফিজ আলী জানান,দাদন ব্যবসায়ী ভুমিখেকো কদ্দুছ ও কাদির ও মুহিবের শেল্টারদাতা হচ্ছেন স্থানীয় চেয়ারম্যানের প্রধান সহযোগি বলে এলাকায় পরিচিত নাম। নিহত পাভেলের দাদা সুনামাল বিবি (৭৫) খেলার মাঠে কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন আমার নাতি স্কুল থেকে বাড়িতে এসে এক গরু নিয়ে খেলার মাঠে দিকে বের হলে তার উপর ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমার একমাত্র দাদাভাইয়ের উপর হামলা চালায়। এ হামলায় সে মারা যায়। এ ঘটনার নির্দেশকারি ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শান্তি দাবি করেন।
গ্রামের বাসিন্দা নুরউদ্দিন জানান, খেলার মাঠ পাভেলের বাবা নামে রয়েছে। চেয়ারম্যান সে জায়গা নিহতের পিতার নামে দলিল করে দেন টাকার বিনিময়। মানবাধিক কর্মী জমির উদ্দিন জানান, ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ মুখ খোলতে রাজি নয়। তার অদক্ষতার কারনে একটি স্কুল ছাত্রের জীবন অকালে জড়ে গেল। এ ঘটনার জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শান্তি দাবি করেন।
এব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মছবির তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন আমি অসুস্থ হয়ে ডাক্তার দেখানো জন্য সিলেটে থাকায় সময় মতো ঘটনাস্থলে আসতে পারেনি।

.
এব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন এ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নিদেশ দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহতের লাশ সিলেটে ওসমানি হাসপাতালে পোষ্ট মডেম চলছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর