এইচআইভি আক্রান্তদের উপযুক্ত সেবা প্রদানে সিওমেক হাসপাতাল’র অনন্য নজির

প্রকাশিত: ৩:১৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২০, ২০১৮

এইচআইভি আক্রান্তদের উপযুক্ত সেবা প্রদানে সিওমেক হাসপাতাল’র অনন্য নজির

ডেস্ক প্রতিবেদন
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এইচআইভি আক্রান্তদের বিনামূল্যে সব ধরনের চিকিৎসা দেয়ার উদ্যোগ নেয়ায় সিলেটের এইচআইভি আক্রান্তদের মধ্যে সেবা গ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

জাতীয় এইডস/এসটিডি প্রোগ্রাম এর তত্ত্বাবধানে এবং ইউনিসেফ এর সহয়তায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাস্তবায়িত এইচআইভি সেবা জোরদারকরণ কার্যক্রম কর্তৃক আয়োজিত ষন্মাসিক স্টেকহোল্ডার মিটিংএ এ তথ্য ওঠে এসেছে।

সিলেটের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সমূহ, ডায়েবেটিক হাসপাতাল, রেডক্রিসেন্ট হাসপাতালসহ বিভিন্ন এনজিও সমূহের প্রতিনিধিদের সাথে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই সভায় অংশগ্রহণ করেন।

সভায় অংশ গ্রহণকারী দল এইচআইভি কার্যক্রম ও এআরভি সেন্টারের সেবাপ্রদান সংক্রান্ত তথ্য আরো বেশি মানুষের কাছে পৌছে দেয়ার পরামর্শদেন এবং সেক্ষেত্রে বিভিন্ন সংগঠন সমূহের ভূমিকার উপর গুরুত্ব প্রদান করেন।

সিওমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (ডাঃ) এ কে মাহবুবুল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভার শুরুতে পরিচিতি পর্ব ও স্বাগত বক্তব্যের পর প্রকল্পের বিগত ছয়মাসের কার্যক্রমের অগ্রগতি প্রতিবেদন পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ মোতাহের হোসেন।

এরপর মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তাগণ সিলেটের এইচআইভিসেবা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যের পর্যালোচনা করেন।

আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন- সিওমেক এর সাবেক অধ্যক্ষ এবং পার্ক ভিউ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ অছুল আহমেদ চৌধুরী, সিলেটের সিভির সার্জন ডাঃ হিমাংশু লাল রায়, শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক প্রভাত রঞ্জনদে, হৃদরোগ বিশেজ্ঞ অধ্যপক ডাঃ সাহাব উদ্দীন, রক্তপরিসঞ্চালন বিভাগের প্রধান, সিওমেক উপপরিচালক ডাঃদেবপদ রায়, সহকারী পরিচালক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সিনিয়র অধ্যাপকগন, হাসপাতালের বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসকগন এবং বিভিন্ন সংস্থা থেকে আগত প্রতিনিধিবৃন্দ।

উল্লেখ্য, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সব গর্ভবতী মহিলাদের এবং স্বেছায় আগত যে কোন ব্যক্তির বিনামূল্যে এইচআইভি পরীক্ষা করা হয়। পাশা পাশি এইচআইভি আক্রান্তদের ঔষধসহ সবধরনের স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে প্রদান করা হয়ে থাকে।

সভায় সিলেটের সিভিল সার্জন ডাঃ হিমাংশু লাল রায় বলেন, গত ছয় মাসে ওসমানী মেডিকেলের গাইনী বিভাগে পাঁচজন গর্ভবতী নারীকে এইচআইভি আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নত হওয়ার যে তথ্য আমরা দেখতে পেলাম, তা আমাদের জন্য মোটেই সুখকর নয়। আমাদের এখনই এব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন কার্যক্রম চালু আছে, আমাদের উচিত সবার কাছে এর তথ্য সমূহ পৌছে দেয়া।

সভাপতির বক্তব্যে হাসপতালের পরিচালক বলেন, আমারা আমাদের হাসপাতাল হতে এইচআইভি আক্রান্তদের বৈষম্যহীনভাবে সবধরনের সেবা প্রাপ্তির পরিবেশ নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে এখান থেকে ৪৭৮ জন এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তি নিয়মিত এআরভি ঔষধ গ্রহণ করেছেন। আমরা চাই অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা দানকারী সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান সমূহ এই তথ্য জানুক এবং সংশ্লিষ্ট রোগী সমূহকে সেবার আওতায় আনতে সহয়াতা করুক।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও এইচআইভি লাইন ডিরেক্টর ডাঃ ইহতেশামুল হকের উদ্যোগে ২০১৭ সালে যখন আমরা সরকারি ব্যবস্থাপনায় এইচআইভি আক্রান্তদের সেবা প্রদান শুরু করি, তখন অনেকের মধ্যে অনেক সংশয় ছিল এর সফলতা নিয়ে। কিন্ত এখন আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি যে, সরকারি ব্যবস্থাপনায় এইচআইভি আক্রান্তদের উপযুক্ত সেবা দেয়া সম্ভব।

২০১৩ সাল থেকে শুরু হওয়া উক্ত প্রকল্পের আওতায় এপর্যন্ত পূর্ণ চিকিৎসা গ্রহণ করে যে ৪২ জন মা সন্তান জন্মদান করেছেন, তাদের সবার সন্তানই এইচআইভিমুক্ত আছে। আরো কায়েকজন মা সন্তান জন্মদানের অপেক্ষায় আছেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর