ঢাকা ১৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৩১ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৯, ২০১৯
গোলাম মর্তুজা বাচ্চু
সিলেটের প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান কিন্টারগার্টেন স্কুলগুলোতে শিক্ষাবাণিজ্য জমজমাট হয়ে ওঠেছে। পাশপাশি চলছে বই ও শিক্ষা উপকরণ বাণিজ্য। কাঁধে বোঝা ভারী হচ্ছে অবুঝ ও নাবালক শিশুদের। সিলেট নগর ও শহরতলীর প্রশাসানিক, আবাসিক এলাকা ও পাড়া-মহল্লা ঘীরে ব্যঙের ছাতার মত গড়ে ওঠেছে বেসরকারি কিন্টারগার্টেন। প্রবাসী অধ্যুসিত সিলেটে ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষার আবশ্যকতার সুযোগে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আগত শিক্ষা ব্যবসায়িরা সিলেটে এসে ভিড় করেছেন। কোন ধরনের পরিচালনা কমিটি ছাড়াই নগরের বিভিন্ন আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকায় গড়ে তুলেছেন কিন্টারগার্টেন। নিজেদের মত ব্যবসায়িক সিলেবাস তৈরী করে বইয়ের বোঝা তুলে দিচ্ছেন শিশুদের কাঁধে। অনেক ক্ষেত্রে শিশুরা বইয়ের বোঝা বহন করতে না পারায় মা-বাবা অথবা কজের ছেলে-মেয়েদের বহন করে নিতে হয়। কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠানগুলোর পাট্যবই সাধারণত বাজারে পাওয়া যায় না।
তাদের নিজস্ব প্রকাশনা থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ বই এনে দিয়ে থাকে এবং ইচ্ছেমত বইয়ের মূল্য গুনতে থাকেন। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশের প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে ও মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের অনুমোদন নেই। তাই শিক্ষার্থীদের পিইিসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা দিতে হয় কোন না কোন এমপিওভুক্ত স্কুলের মাধ্যমে। এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও এ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আদায় করে থাকে মোটা অঙ্কের ফি, আর তা আদায় করে নেয়া হয় শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের কাছ থেকে। সিলেটে নগরে সরকারি ও সরকার অনুমোদিত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি কিন্টারগার্টেন রয়েছে।
সরকারি বা সরকার অনুমোদিত স্কুলে ভর্তির জন্য বয়স ৬ নির্ধারিত থাকলেও কিন্টারগার্টেনগুলোতে বয়সের কোন বাধাবাধ্যকতা না থাকায় ৩ থেকে ৪ বছরের শিশুকেও ভর্তি করে দেয়া হয়। যে সময়ে তার মায়ের মুখের ভাষা বাংলা শিখার কথা, সে সময়ে তার মুখে তুলে দেয়া হয় ভিনদেশী ভাষা। তাইতো দেখা যায় অনেক শিশু তার মায়ের ভাষা বাংলা সম্পর্কে অজ্ঞ হয়ে ওঠে। শুধুমাত্র পশ্চাত্য দেশসমূহে স্থায়ী বসবাসরত নাগরিকদের সুবিধে হলেও অসুধিায় পড়ছেন স্থায়ী বসবাসরত বাংলাদেশী নাগরিকরা। তাদের শিশুদের মধ্যে স্বদেশী বাংলা ভাষার প্রতি গড়ে ওঠছে অনীহা।
এমনও দেখা গেছে অনেক শিশু নবম দশম শ্রেণিতে পড়েও শুদ্ধ করে বাংলা লিখতে ও পড়তে জানে না। ভবিষ্যতে তার পক্ষে বাংলাদেশে সরকার ও বেসরকারি চাকরি করার ক্ষেত্রে বিপত্তি ঘটা স্বাভাবিক। তাই বাংলা ভাষার প্রতি শিশুদের আকৃষ্ট করতে, স্বদেশী বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার্থে এবং পরিবার ও সমাজ জীবনে অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টির আগেই কিন্টারগার্টেন শিা প্রতিষ্ঠানগুলোর লাগাম টেনে ধরা আবশ্যক বলে বিজ্ঞ মহল মনে করেন।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech