মর্যাদাশীল উন্নত দেশ গঠনে অর্থনৈতিক কূটনীতি গ্রহণ করেছি : ড. মোমেন

প্রকাশিত: ১২:৩০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০১৯

মর্যাদাশীল উন্নত দেশ গঠনে অর্থনৈতিক কূটনীতি গ্রহণ করেছি : ড. মোমেন

ডেস্ক প্রতিবেদন
সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে সোনার বাংলা গড়তে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। তাই প্রধানমন্ত্রী আমাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার পর আমি ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি গ্রহণ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর আস্তা ও বিশ্বাসের মর্যাদা যাতে রক্ষা করতে পারি, সে জন্য আমি সবার সহযোগিতা কামনা করছি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারী) বিকেল ৪টায় সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি কর্তৃক আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে সিলেট ফেরার পর সিলেট চেম্বার অব কমার্সের উদ্যোগে সর্বপ্রথম এই সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

বিপুল ভোটে তাঁকে নির্বাচিত করায় সিলেটবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞা ও ধন্যবাদ জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, গত দশ বছরের উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি জনমনের যে প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে তারই ধারাবাহিকতায় দেশের মানুষ আবারও শেখ হাসিনার দলকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছে। তিনি বলেন, মানুষের সেই প্রত্যাশা পূরণে শান্তিময়, স্থিতিশীল সোনার বাংলা অর্জনে আপনাদের দোয়া ও সহযোগিতা চাই। তিনি বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী জননেতা মরহুম আব্দুস সামাদ আজাদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরহুম হুমায়ুন রশিদ চৌধুরীর স্মৃতি স্মরণ করে বলেন, তাদের উত্তরসুরী হিসেবে আমি যেন সফল হতে পারি, দেশ ও জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারি সেজন্য আমি সবার সহযোগিতা চাই। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বিশাল এই দায়িত্ব অর্পন করেছেন। আমি দায়িত্ব নিয়ে দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের স্বার্থে অর্থনৈতিক কূটনীতি গ্রহণ করেছি। আমরা দেশকে সমৃদ্ধ, উন্নত ও মর্যাদাশীল আসনে নিয়ে যেতে চাই। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৩০ সালের মধ্যে সবসূচকে উন্নত ও ২০৪১ সালে বঙ্গবন্ধুর সেই সোনার বাংলা গড়তে চাই। এজন্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছাড়া আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয় বলেই আমি ইকোনমিক ডিপলোমেসি গ্রহণ করেছি। ২০২০ সালে জাতির জনকের শততম জন্মবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার অর্ধশতবার্ষিকীসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আমাদের সামনে রয়েছে। তাই সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও সফলতার সাথে আমার দায়িত্ব যাতে পালন করতে পারি সেজন্য আপনাদের সকলের সার্বিক সহযোগিতা আমি কামনা করি।

তিনি বলেন, বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের ৫ জন সংসদ সদস্য মন্ত্রীপরিষদে রয়েছেন। এবার সবচেয়ে বড় সুযোগ আমাদের সামনে। আশা করি বড় প্রত্যাশা অর্জনে আমরা সক্ষম হবো।

সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেটের কৃতী সন্তান ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন-কে নগরবাসীর পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আমাদের সব প্রত্যাশার কথা মাননীয় মন্ত্রীর জানা আছে। আমরা সম্মিলিতভাবে সিলেট-কে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবো এবং সিলেটকে একটি মডেল ও শান্তির নগর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বারের সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সিলেট ফিরে প্রথমেই সিলেট চেম্বারে সংবর্ধনা গ্রহণ করায় সিলেটের ব্যবসায়ীদের পক্ষ আমরা আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আপনার নেতৃত্বে ব্যবসায়ীরা সমৃদ্ধ দেশ গঠনে সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করবে বলে আমরা দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করছি। তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রী পরিষদকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বর্তমান সরকার বিগত দিনের মতো ব্যবসায়ীদের কল্যাণ, ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের অগ্রগতিতে কাজ করে যাবেন।

নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিগত দিনের কর্মকান্ডের ভূঁয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, দেড়যুগ পর সিলেট থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আপনাকে পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। জাতিসংঘে দায়িত্ব পালনকালে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের ভূমিকা সর্বমহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। আশা করি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও অত্যন্ত দক্ষতার সাথে প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বার্থ সংরক্ষণে আপনার কর্মতৎপরতায় বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হবে। আপনার পরিকল্পিত, আলোকিত ও উন্নত সিলেট গড়তে সিলেট চেম্বার সহযোগিতার হাত প্রসারিত করবে। ইতিপূর্বে সিলেট চেম্বারের অভিভাবক হিসেবে আপনাকে যেভাবে কাছে পেয়েছি, ভবিষ্যতেও আপনার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিদেশে বাংলাদেশীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণ ও নতুন শ্রমবাজারের সন্ধান, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার নিশ্চিতকরণ, বিদেশীদের অনএরাইভ্যাল ভিসার মেয়াদ ৯০ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধিকরণ, সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে বিমানের ফাইট চালু, রেলসেবার মান উন্নয়ন ও সিলেট-চট্টগ্রাম, সিলেট-ঢাকা রুটে আধুনিক এসি কোচ সংযোজন, শ্রীমঙ্গলে স্থাপিত চা নিলাম কেন্দ্রের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা, সিলেট শ্রম আদালত দ্রুত স্থাপন সহ বিভিন্ন দাবী উত্থাপন করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- রূপালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবির, কাস্টম্স, এক্সাইজ এন্ড ভ্যাট কমিশনারেট সিলেট এর কমিশনার গোলাম মোঃ মুনীর, কর কমিশনার আবুল হান্নান দেলোয়ার হোসেন, সিলেট সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট চেম্বারের নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান বিজিত চৌধুরী, সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোঃ আজবাহার আলী শেখ, পিপিএম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মোঃ আসলাম উদ্দিন, কাস্টম্স এর যুগ্ম কমিশনার মোঃ মিনহাজ উদ্দিন পাহলোয়ান, যুগ্ম কর কমিশনার শাহেদ আহমদ চৌধুরী, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক সৈয়দ এফতার হোসেন পিয়ার, বিডা’র সহকারী পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শরফুদ্দিন, সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি মাসুদ আহমদ চৌধুরী, সহ সভাপতি মো: এমদাদ হোসেন, পরিচালক মো: হিজকিল গুলজার, জিয়াউল হক, মোঃ সাহিদুর রহমান, পিন্টু চক্রবর্তী, নুরুল ইসলাম, মো: ওয়াহিদুজ্জামান (ভূট্টো), মুশফিক জায়গীরদার, পরিচালক আমিরুজ্জামান চৌধুরী, এহতেশামুল হক চৌধুরী, মুকির হোসেন চৌধুরী, আব্দুর রহমান, চন্দন সাহা, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, মোঃ আব্দুর রহমান (জামিল), পরিচালক হুমায়ুন আহমেদ, মুজিবুর রহমান মিন্টু, সিলেট কাস্টম্স এর সহকারী কমিশনার মোঃ জাকারিয়া ও মোঃ আহসান উল্লাহ, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমেদ সেলিম এবং প্রেস ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার প্রতিনিধিবৃন্দ ও সিলেট চেম্বারের সদস্যবৃন্দ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর