ঢাকা ৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:১২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০১৮
সাকিব আল হাসান-তামিম ইকবালকে ছাড়া প্রথমবারের মতো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। তবুও প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে বলে হয়তো খানিকটা নির্ভার ছিল বাংলাদেশ শিবির থেকে শুরু করে ভক্ত-সমর্থকরাও। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও ম্যাচের আগে জানিয়েছিলেন, সাকিব-তামিমকে ছাড়া প্রস্তুতি নেওয়ার কথা। ব্যক্ত করেছিলেন জয়ের আশবাদ। কিন্তু ম্যাচের শুরুতে যেন উল্টে যেতে থাকে গতিপথ।
নিয়মিত বিরতিতেই বাংলাদেশের উইকেট তুলে নিতে থাকেন জিম্বাবুইয়ান বোলাররা। জিম্বাবুয়ের বোলিংয়ের সামনে অসহায় আত্মসমর্পন করেন লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো ব্যাটসম্যানরাও। কিন্তু খেই হারাননি ইমরুল কায়েস। উইকেটের একপ্রান্ত আগলে লড়াই চালিয়ে গেছেন ব্যাট হাতে। কখনো পাশে পেয়েছেন মুশফিক, কখনো মোহাম্মদ মিথুনকে। কিন্তু তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই।
তাতেও খেই হারাননি ইমরুল। উইকেটের একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলেন ওয়ানডেতে নিজের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। শেষ মুহূর্তে পাশে পেয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে। আর তাতে বাংলাদেশ পেয়েছে লড়াই করার মতো পুঁজি। অবশ্য ম্যাচের ৪০ ওভার শেষে মনে হচ্ছিল, আড়াইশোর কাছাকাছি যাবে বাংলাদেশের ইনিংস। তবে শেষ মুহূর্তে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন ইমরুল-সাইফউদ্দিন দুজনই।
ওই ঝড়ে শেষের ১০ ওভারে বাংলাদেশের স্কোরকার্ডে জমা হয় ৮৫ রান। সব মিলিয়ে বড় সংগ্রহই দাঁড় করায় স্বাগতিকরা। নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৮ উইকেটে ২৭১ রান।
২১ অক্টোবর, রবিবার মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতে কিছুটা হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ১৫ রানেই বিদায় নেন ওপেনার লিটন কুমার দাস। তার আগে ব্যক্তিগত ২ রানে জীবন পান তিনি। কিন্তু সেটাকে কাজে লাগাতে পারেননি ডানহাতি এই ওপেনার।
এরপর ব্যক্তিগত ৭ রানে জীবন পান ইমরুল। সেটাকে বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন তিনি। তুলে নিয়েছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। ১১৮ বলে ৮ চার ও ৩ ছক্কায় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। এর মধ্যে প্রথম ৫০ রানের জন্য ইমরুল খেলেছেন ৬৪ বল। বাকি ৫০ রান পূর্ণ করার জন্য তার লেগেছে ৫৪ বল।
সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পথে তৃতীয় উইকেটে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৪৯ রানের জুটি গড়েন ইমরুল। এরপর চতুর্থ উইকেটে মোহাম্মদ মিথুনের সঙ্গে ৫১ রানের জুটি গড়েন তিনি। কিন্তু কেউ তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি। মুশফিক ১৫ ও মিথুন ৩৭ রানে সাজঘরে ফেরেন।
এর আগে রানের খাতা খোলার আগে সাজঘরে ফেরেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি। এই ম্যাচ দিয়ে ১২৯তম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে অভিষেক হলেও ম্যাচটা ব্যাট হাতে রাঙাতে পারেননি বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। চার বল খেললেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। একই পথে হেঁটেছেন মাহমুদউল্লাহ। ৪ বল খেললেও রানের খাতা খুলতে পারেননি অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।
উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার মিছিলে শামিল হওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ বিদায় নিয়েছেন মাত্র ১ রানে। তখন ১৩৯ রানে নেই বাংলাদেশের ৬ উইকেট। এরপর সাইফউদ্দিনকে নিয়ে ব্যাট হাতে প্রতিরোধ গড়েন ইমরুল। সপ্তম উইকেট জুটিতে দুজন মিলে যোগ করেন ১২৭ রান। শুরুতে কিছুটা ধীর গতিতে রান তুললেও শেষদিকে রীতিমতো তাণ্ডব চালায় এই জুটি।
ক্যারিয়ার সেরা ১৪৪ রানের ইনিংস খেলে ৪৯তম ওভারে সাজঘরে ফেরেন ইমরুল। এটা বাংলাদেশের পক্ষে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস। পরের ওভারের প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন সাইফউদ্দিন। তার আগে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরির স্বাদ পান এই তরুণ অলরাউন্ডার। ৬৮ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় প্রথম হাফ সেঞ্চুরিটি তুলে নেন তিনি। শেষ দিকে ২ রানে অপরাজিত থাকেন মাশরাফি।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নেন কাইল জারভিস। এ ছাড়া তেন্ডাই চাতারা তিনটি ও ব্রেন্ডন মাভুতা নেন একটি উইকেট।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech