ঢাকা ১১ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:২১ অপরাহ্ণ, মে ৭, ২০১৯
মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান
মুমিনের জীবনে আবার এসেছে পবিত্র মাস রমজান। আজ রমজান রহমতের ঝর্ণাধারার দ্বিতীয় দিন। এ মাসের উপস্থিতি আল্লাহ তায়ালার অফুরন্ত নেয়ামতগুলোর অন্যতম একটি। এক মাসের রোজা, তারাবি, সাহরি, ইফতার, ইতিকাফ এবং লাইলাতুল কদর বান্দাকে আল্লাহর সান্নিধ্য ও সন্তুষ্টির চূড়ান্ত স্তরে পৌঁছে দেয়।
এ মাস ইবাদতের ভরপুর এক বসন্ত। রহমত ও জান্নাতের দুয়ার খোলা, জাহান্নাম বন্ধ আর শয়তান বন্দি।
আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত ঘোষণা আসছে ‘হে কল্যাণ অন্বেষী অগ্রসর হও; হে অকল্যাণের পথিক, থেমে যাও।’
অন্যদিকে আল্লাহ তায়ালা ইবাদতের সওয়াব বাড়িয়ে দেন। নফলের সওয়াব ফরজের মতো আর ফরজের সওয়াব ৭০টি ফরজের সমান হয়ে যায়। এখানেই শেষ নয়। এ মাসে আল্লাহ তায়ালা তার ক্ষমা ও অনুগ্রহের মাত্রা বাড়িয়ে দেন। ‘আল্লাহ তায়ালা প্রতিদিন ইফতারের সময় অসংখ্য ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।’ (মুসনাদে আহমাদ-২১৬৯৮)।
এসবের প্রভাবে মানুষের মধ্যে ভালো কাজের প্রতি আগ্রহ বোধ জন্মে। ইবাদতের অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করে। এ মাস সারা বছরের আধ্যাত্মিকতার তাপ কেন্দ্র। রোজার প্রভাবে তাকওয়ার আদলে জীবন গড়ার প্রত্যয় যে মাহে রমজানের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
আল্লাহ বলেন, ‘হে মোমিনরা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বনকারী হতে পার।’ (সুরা বাকারা : ১৮৩)।
আয়াতে তিনটি বিষয় বলা হয়েছে রোজার অপরিহার্যতা, অপরাপর আসমানি ধর্মে রোজার বিধান থাকা ও রোজার বিধান প্রদানের মূল কারণের ব্যাখ্যা। কাজেই রমজানে তাকওয়ার মাধ্যমে আধ্যাত্মিকতার যে উষ্ণতা মোমিন বান্দা অর্জন করবে, তার প্রভাব বছর ধরে পরিলক্ষিত হবে তারই প্রতি পদক্ষেপে।
মুমিন ব্যক্তিরা এ সুযোগকে লুফে নিয়ে রমজান মাসে সারা বছরের তাকওয়া-তাহারত অর্জন করে ঈমানি শক্তিতে উজ্জীবিত হয়। আর অন্যদিকে হতভাগা ব্যক্তিরা এ মাসের মর্যাদাকে উপেক্ষা করে ভোগ আর বিলাসিতায় মেতে উঠে নিজেদের ধ্বংসাত্মক পরিণতির দিকে ঠেলে দেয়।
এজন্যই রাসুল (সা.) বলেছেন, ফেরেশতা জিবরাইল আমাকে এসে বললেন, ‘সে মানুষ ধ্বংস হোক, যে রমজান পেয়েও নিজের পাপ ক্ষমা করাতে পারল না।’
রাসুল (সা.) বলেন, তার কথার সমর্থনে আমি বললাম, ‘আমিন, এমনই হোক।’ (আল আদাবুল মুফরাদ : ২২৫; সহিহ ইবনে হিব্বান : ৯০৮)।
অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) আরও বলেন, এ মাস মুমিনের জন্য গনিমত আর মুনাফিকের জন্য ক্ষতির কারণ। (মুসনাদে আহমাদ ২/৩৩০; মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৩/১৪০)।
কাজেই আসুন, আমরা আল্লাহর দেয়া এসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেদের মোমিন পরিচয় যথার্থ করতে সচেষ্ট হই।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech