ঢাকা ২০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:০৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৮, ২০১৯
ডেস্ক প্রতিবেদন : রেমিট্যান্স বাড়াতে নগদ প্রণোদনাসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ ও ডলারের বিপরীতে বেশি টাকা পাওয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলে বাড়ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের (জুলাই-নভেম্বর) প্রথম পাঁচ মাসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ৪৫০ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে) প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরে প্রথম পাঁচ মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে ৭৭১ কোটি ৪১ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে থাকা প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৪৪৯ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। যা মোট আহরিত রেমিট্যান্সের ৫৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর বিশ্বের অন্য দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৩২১ কোটি ৬২ লাখ ডলার।
তথ্য বলছে, প্রবাসী আয় পাঠানোর শীর্ষে থাকা ১০ দেশের মধ্যে ৬টি হলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশ। এর মধ্যে গত পাঁচ মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। চলতি অর্থবছরে দেশটি থেকে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৬১ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। যা মোট আহরিত রেমিট্যান্সের প্রায় ২০ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রেমিট্যান্স পাঠানোয় শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে অন্য দেশগুলো হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ওমান, কাতার, ইতালি ও বাহরাইন।
অর্থবছরের পাঁচ মাসে রেমিট্যান্স আহরণের দ্বিতীয় স্থানে থাকা মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ১১০ কোটি ৪৬ লাখ ডলার, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৮৯ কোটি ৩৭ লাখ ডলার, কুয়েত থেকে ৬০ কোটি ৯৯ লাখ ডলার, যুক্তরাজ্য থেকে ৬০ কোটি ২৫ লাখ ডলার, মালয়েশিয়া থেকে ৫২ কোটি ৯৮ লাখ ডলার, ওমান থেকে ৫২ কোটি ৭৯ লাখ ডলার, কাতার থেকে ৪৫ কোটি ৭৬ লাখ ডলার, ইতালি থেকে ৩৩ কোটি ৪২ লাখ ডলার এবং বাহরাইন থেকে ১৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
এদিকে রেমিট্যান্সের প্রণোদনার অর্থ যেন সহজে প্রবাসীরা পায় বিভিন্ন শর্ত শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি এক সার্কুলারে দেড় লাখ টাকার রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার কাগজপত্র লাগবে না। আগে ১৫০০ মার্কিন ডলার বা সমমূল্যের অন্য বৈদেশিক মুদ্রা পাঠালে বিনা প্রশ্নে প্রণোদনার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রবাসীদের বুঝার সুবিধার্থে টাকার পরিমাণ উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি দেড় লাখ টাকার ওপরে রেমিট্যান্সের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের সময়সীমাও বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে দেড় লাখ টাকা বা দেড় হাজার ডলারের বেশি রেমিট্যান্সে প্রেরণকারীকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করার নিয়ম ছিল। সেটা বাড়িয়ে ১৫ কার্যদিবস করা হয়েছে।
জানা গেছে, দেড় লাখ টাকার বেশি রেমিট্যান্সের নগদ প্রণোদনা পাওয়ার জন্য রেমিট্যান্স প্রদানকারী ব্যাংকের শাখায় পাসপোর্টের কপি এবং বিদেশি নিয়োগদাতার দেয়া নিয়োগপত্রের কপি জমা দিতে হয়। রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ব্যক্তি ব্যবসায় নিয়োজিত হলে ব্যবসার লাইসেন্সের কপি দিতে হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড হয়েছে। ওই অর্থবছরে প্রবাসীরা ১ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ।
রেমিট্যান্সের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত চার বছরের মধ্যে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। ওই সময় রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। এরপর ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আসে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আসে এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরের আসে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার। যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech