ডেস্ক প্রতিবেদন
প্রগতিশীল আন্দোলনের অগ্রপথিক ‘মানবিক বিপ্লবী’ হাওর জনপদের ‘পরাণ পাখি’ মইনুদ্দিন আহমদ জালাল সস্ত্রীক ভ্রমণে গিয়ে গত ১৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের মেঘালয়রাজ্য শিলংয়ের উডল্যান্ড হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আকস্মিকভাবে অকালেই মৃত্যুবরণ করেন।

সমাজ প্রগতি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল বাংলাদেশ বিণির্মানের অগ্রপথিক প্রয়াত মইনুদ্দিন আহমদ জালাল’র স্মরণে এক নাগরিক শোকসভা সিলেটের জেলা পরিষদ মিলনাতয়নে শনিবার বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত হয়। এই নাগরিক শোকসভায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জসহ ঢাকা থেকে আগত বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

নাগরিক শোকসভা কমিটির আহবায়ক বিশিষ্ট বাম রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মো. আরশ আলীর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব খায়রুল হাছান ও অ্যাডভোকেট সৈয়দ মনির হেলাল যৌথভাবে শোক সভাসঞ্চালনা করেন।

নাগরিক শোকসভা শুরুর পূর্বে প্রয়াত মইনুদ্দিন আহমদ জালাল’র প্রতিকৃতিতে ফুলদানে গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয় শোক সভা আয়োজক কমিটির প থেকে। আনুষ্ঠনিক ভাবে সভার শুরুতে কমিটির সদস্য সচিব বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন সিলেটের সভাপতি খায়রুল হাছান শোকসভায় পারম্ভিক বক্তব্য রাখেন।

শোকসভায় প্রয়াতের সংপ্তি জীবনী পাঠ করেন আয়োজক কমিটির পে সিলেট যুব ইউনিয়নের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মনির উদ্দিন। শোকসভায় ঢাকা থেকে উপস্হিত থেকে ছিলেন- প্রয়াত মইনুদ্দিন আহমদ জালালের রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ঘনিষ্ঠ বন্ধু বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের প্রাক্তন প্রেসিডিয়াম মেম্বার এক সময় আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনকারী যুবনেতা কামরুজ্জামান ননী, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক যুব নেতা হাফিজ আদনান রিয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শিশির চক্রবর্ত্তী।

নাগরিক শোকসভায় সিলেটের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন উপস্থিত হয়ে প্রয়াত এই নেতাকে স্মরণ করে শুরু থেকে প্রর্যায় ক্রমে বক্তব্য দেন- সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট সিলেটের সভাপতি পাপ্পু চন্দ, ছাত্র ইউনিয়ন সিলেটের সরোজকান্তি, ছাত্র মৈত্রি সিলেটের মাসুদ রানা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট মহানগরের সভাপতি রেজাউর রহমান রানা, খেলাঘর সিলেটের তপন চৌধুরী টুটুল, সিলেট জেলা ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা, সিপিবি সুনামগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনাম আহমদ, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, যুব ইউনিয়ন হবিগঞ্জ জেলার সভাপতি আব্দুল হাকিম, মদন মোহন সরকারি কলেজের অধ্য আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন মৌলভীবাজার জেলা সংসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুম মিয়া, বাংলাদেশ উদীচীর সিলেটের সভাপতি কবি এ.কে. শেরাম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনিম জোয়ার্দার, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের রাক্তন, সহ সাধারণ সম্পাদক ইশরাকুল হোসেন সুইট, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত, সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ জিয়াউল ইসলাম, জাসদ মহানগর সিলেটের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাকির আহমদ, প্রয়াত মইনুদ্দিন আহমদ জালালের প্রতিবেশী আইনজীবী ওবায়দুর রহমান, আটাব সিলেটের সভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল, সিপিবি সিলেটের প্রাক্তন সভাপতি অ্যাডভোকেট বেদানন্দ ভট্রাচার্য, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর রেজোয়ান আহমদ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক ত্রিদিব দেবনাথ, জ্যেষ্ঠ অ্যাডভোকেট রাজউদ্দিন, সিলেট শিা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এ.কে.এম. গোলাম কিবরিয়া তাপাদার, উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান আইডিয়া’র নির্বাহী পরিচালক নজমুল হক, কবি তুষার কর, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ লালা, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সিলেট এর সমন্বয়ক আবু জাফর, সাম্যবাদী দলের নেতা মোশাহিদ আলী, বাসদ মার্কসবাদী নেতা কমরেড উজ্জ্বল রায়, বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির নেতা কেন্দ্রীয় নেতা সিকন্দর আলী, গণতন্ত্রী পার্টি সিলেটের সভাপতি মো. আরিফ মিয়া, প্রগতিশীল আন্দোলনের নেতা জাসদ সিলেটের সভাপতি লোকমান আহমদ, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আদনান রিয়াদ, আওয়ামী লীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিনসিরাজ, প্রয়াত জালালের সহধর্মিনী শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক ড. নাজিয়া চৌধুরী, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের প্রাক্তন আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনকারী নেতা প্রয়াত মইনুদ্দিন আহমদ জালাল স্মরণে শোকসভা জাতীয় কমিটির আহবায়ক কামরুজ্জামানননী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক জননেতা কমরেড সৈয়দ আবু জাফর আহমদ, সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রবীণ নেতা অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান।

নাগরিক শোকসভায় উপস্থিত বক্তারা বলেন-অধিকাংশ বক্তাই তাঁর কাছে ঋনী ছিলেন বলে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। প্রয়াত মইনুদ্দিন আহমদ জালাল কেনির্মোহ ভাবে অধ্যয়ন করলে দেখা যায়, তিনি আপাদমস্তক এক অনন্য প্রগতিশীল ব্যাক্তি ছিলেন। আজীবন সমাজ প্রগতির কাজে নিজেকে সমর্পণ করেছিলেন। বাংলাদেশের প্রতিটি ন্যায্য ও যৌক্তিক আন্দোলনে তিনি নিবেদিত প্রাণ হিসেবে সারাজীবন কাজ করেছিলেন। মেধা-বুদ্ধি,শ্রম, নীতিনিষ্ঠা, সততা ও সাম্যবাদী আদর্শিকতার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে নিজেকে তিনি একটি প্রগতিশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন। তিনি প্রকৃত মানুষ হতে পেরেছিলেন। তাঁর মতো মানুষ হওয়া আজ খুবই প্রয়োজন। তাকে ধারণ করতে, তাঁর মতো কাজ করতে হবে। সবাইকে মইনুদ্দিন আহমদ জালালের আদর্শ ও জীবন থেকে শিাগ্রহণ করা দরকার বলে বক্তারা তাদের বক্তব্যে অভিমত ব্যক্ত করেন। প্রয়াত মইনুদ্দিন আহমদ জালালের মতো মানুষ হতে হবে। এরকম মানুষ বাংলাদেশের জন্যে অতি প্রয়োজন।

তাঁর অবদান স্বীকার করতেই হবে। তিনি তাঁর করে যাওয়া কৃত কর্মের মধ্য দিয়ে মানুষের কাছে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তাঁর থেকে শিা নেওয়া, তাকে পাঠ করা বিশেষ প্রয়োজন। রেড স্যালুট প্রিয় কমরেড মইনুদ্দিন আহমদ জালাল।

মইনুদ্দিন আহমদ জালাল নাগরিক শোকসভা কমিটির আহবায়ক প্রবীন রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মো. আরশ আলীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শোক সভার সমাপ্তি হয়।