বানিয়াচংয়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দু’গ্রামের সংঘর্ষ : শতাধিক আহত

প্রকাশিত: ৬:০৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০২০

বানিয়াচংয়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দু’গ্রামের সংঘর্ষ : শতাধিক আহত

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে জলাশয়ে বাঁধ নির্মাণকে কেন্দ্র করে কামালখানী ও মজলিশপুর গ্রামের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষ শুক্রবার সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বেলা ১ টা পর্যন্ত চলমান ছিল। এতে উভয় পক্ষের প্রায় শতাধিক লোক আহত হন।

 

এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা, থানা পুলিশ ও দাঙ্গা পুলিশসহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিগণ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তাদের অনুরোধে সংঘর্ষ থামায় উত্তেজিত জনতা।

 

সংঘর্ষে উভয় পক্ষের গুরুতর আহতরা হলেন- আবিদুর (৩০), লাল মিয়া (৩৫), মনছুর(৪০), অলি হোসেন (৩৭), জমির (৩৬), অপু সরকার (৩০), নিপু (৩০), সাজিদ (২৩), নূরুল আমীন (৪০), সাজলু (৩১), ফজলু (৪২), জিলু (২৮), নাজমুল (২৮), হারুন (৩৮), জসিম (৪০), আনসার মিয়া(৩৭)।
মজলিশপুর গ্রামের নজির মিয়া (২৫) কে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ১ নং উত্তর-পূর্ব ইউপি’র চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আহমেদ (৫৯) আহত হয়েছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সব হতাহতের পরিচয় জানা যায়নি।

 

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্র জানায়, উপজেলার কানিভাঙা নামক জলাশয়ে বাঁধ নির্মাণ করেন কামালখানী গ্রামের লোকজন। শুক্রবার ভোরে ওই বাঁধটি ভেঙে ফেলেন মজলিশপুর গ্রামের লোকজন। বাঁধ ভাঙার কারণ জানতে চেয়ে কামালখানী গ্রামের লোকজন মজলিশপুর গ্রামের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নি। এতে মজলিশপুর গ্রামের লোকজনকে বাঁধ এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেন কামালখানী গ্রামের লোকজন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মজলিশপুর গ্রামের লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাদের লোকজনকে অস্ত্রসহ ঘটনাস্থলে জমায়েত হওয়ার আহŸান জানান।

 

এ দিকে কামালখানী গ্রামের লোকজনও মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাদের লোকজনকে ঘটনাস্থলে জমায়েত হওয়ার আহŸান জানালে দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মাইকের ঘোষণা শুনে উভয় গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঘটনাস্থলে জড়ো হতে থাকেন। এক পর্যায়ে এটি রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। খবর পেয়ে পুলিম ঘটনাস্থলে পৌছে উভয় পক্ষকে ছত্র ভঙ্গ করে দেয়। পরে দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হন গ্রামবাসী।

 

ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা, থানা পুলিশ ও দাঙ্গা পুলিশসহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিগণ। তারা উভয়পক্ষকে বার বার সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তাদের অনুরোধে সংঘর্ষ থামায় উত্তেজিত জনতা।

 

বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরান হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, দুর্গম হাওরের মাঝে দু‘দল গ্রামবাসী বাঁধ নির্মাণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বর্তমানে সম্পূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

 

আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, থানা পুলিশ, জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয় পক্ষকে শান্ত করেছেন। সব কিছু এখন প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর