ঢাকা ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:২৩ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০১৯
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার হলহলিয়া গ্রামে প্রাচীন লাউড় রাজ্যের রাজধানী খ্যাত হলহলিয়া জমিদার বাড়ি পরিদর্শন করেছেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। শনিবার সকালে তিনি এ জমিদার বাড়ি পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বলেন, এটি প্রতœতত্ত্ব বিভাগের সহযোগিতায় খনন করা হয়েছে যা পতœতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। একে পর্যটকদের নিকট আকর্ষণীয় করা ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, তাহিরপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মুনতাসির হাসান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আক্তার জাহান সাথী ও আসিফ আল জিনাত, উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ, বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইন-চার্জ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে আগত পর্যটকবৃন্দ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের হলহলিয়া গ্রামটি এক কালে প্রাচীন লাউড় রাজ্যের রাজধানী ছিল। লাউড় রাজ্যের চতুসীমা ছিল পশ্চিমে ব্রহ্মপুত্র নদ, পূর্বে জৈন্তায়া, উত্তরে কামরুপ সীমান্ত ও দক্ষিণে বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত। বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এই লাউড় রাজ্যের প্রাচীন নিদর্শন হাওলি জমিদার বাড়িটি প্রকৃতপক্ষে ছিলো রাজবাড়ি। রাজা বিজয় সিংহ আজ থেকে প্রায় ১২’শ বছর পূর্বে এই বাড়িটি তৈরি করেন। হলহলিয়া জমিদার বাড়িটি প্রায় ৩০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত রাজ বাড়িটিতে ছিল বন্দীশালা, সিংহদ্বার, নাচঘর, দরবার হল, পুকুর ও সীমানা প্রাচীর এর কিছু অংশ এখনও বর্তমানে আছে। তাহিরপুর উপজেলার টাংগুয়ার হাওর, বারেকটিলা, যাদুকাটা সহ অন্যান্য দৃষ্টি-নন্দন স্থানের মত পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। যে সকল পর্যটকরা এই প্রাচীন নিদর্শনের খোঁজ জানতে পারে তারা এক পলক দেখার জন্য ছুটে আসেন এখানে। এ রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কেশব মিত্র নামে এক বাম্মণ।
সম্রাট আকবরের শাসনামলে লাউড় রাজ্যের পাশে খাসিয়াদের আক্রমণের শিকার হলে কিছু দিনের জন্য এর রাজধানী বর্তমান হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ে স্থানান্তরিত হয়েছিল। পরে লাউড় রাজ্যের গোবিন্দ সিংহ তা পুনরুদ্ধার করে আবার রাজধানী স্ব-স্থানে পুনঃ স্থাপন করেন। ঐতিহাসিক হান্টারের মতে ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দে মোগল অধিকারের পর লাউড় প্রথম বারের মতো তার স্বাধীনতা হারায় এবং মোগলদের বশ্যতা শিকার করে নিয়ে বসবাস করে। জানা যায়, হলহলিয়া গ্রামে এক কালে প্রাচীন লাউড় রাজ্যের রাজধানী ছিল।
বিলুপ্তপ্রায় লাউড় রাজ্যের প্রাচীন নিদর্শন হাওলি জমিদার বাড়ি। স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় প্রথমে নাম মাত্র মূল্যে লিজ নিয়ে ভবন গুলো ভেঙ্গে বিক্রি করে দেয়। এখন দখল করে আছে স্থানীয় জনসাধারণ ও প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায়। পিএসসির চেয়ারম্যান ড. সাদিক রাজবাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগের লক্ষ্যে একাধিকবার হাওলি রাজবাড়ি সরজমিন পরিদর্শন করেছেন। সেই সাথে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতœতত্ত্ব বিভাগের সহযোগিতায় এর কিছু অংশ খনন করেছে।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech