সুনামগঞ্জে জেলা সম্মেলন পীর মিসবাহ : মেধা বিকাশে শিশুদেরকে খেলাঘর’র ছায়াতলে আসতে হবে 

প্রকাশিত: ১০:০৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৫, ২০১৯

সুনামগঞ্জে জেলা সম্মেলন পীর মিসবাহ : মেধা বিকাশে শিশুদেরকে খেলাঘর’র ছায়াতলে আসতে হবে 

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : উৎসব মুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে সুনামগঞ্জে খেলাঘরের জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত, র‌্যালি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুক্রবার দিনব্যাপী শিল্পকলা একাডেমিতে ঝাঁকঝমক পরিবেশে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে খেলাঘর সুনামগঞ্জ শাখার ১১ উপজেলার নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। সকাল সাড়ে ১১ টায় শিল্পকলা প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা ও খেলাঘরের পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সংগীত পরিবর্তি উদ্বোধকের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সম্মলনের উদ্বোধন করেন খেলাঘরের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আবু সাঈদ। পরে বর্ণাঢ্য র‌্যালি শেষে শিল্পকলা একাডেমির হাছন রাজা মিলনায়তনে আলোচনা সভায় মিলিত হন আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।

.
খেলাঘর সুনামগঞ্জ শাখার সভাপতি বিজন সেন রায়ের সভাপতিতেত্ব ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এনাম আহমদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- বিরোধী দলীয় হুইফ সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। তিনি বলেন, একসময় খেলাঘরের জৌলস ছিল সুনামগঞ্জে। আজও তা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে খেলাঘর দেশের বড় শিশু সংগঠনে রূপ নিয়েছে। মুক্তিযদ্ধের চেতনায় শিশুদের মেধা বিকাশে শিশুদের খেলাঘরের ছায়াতলে আশা জরুরী বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন,আজ শিশুদের শৈশব হত্যা করছি আমরা। যেভাবে তুহিনসহ অনেক শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। শিশুকে ঘরের মধ্যে বন্ধি করছি। আমাদের অভিভাকরা অসুস্থ্য হয়ে পড়েছি। প্রতিবেশির শিশু সাথে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে মানসিকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়ছি আমরা। সকলের শিশুকে সর্বশ্রেষ্ঠ করতে চাচ্ছি। যা শিশুদের মেধা বিকাশকে বাঁধাগ্রস্থ করছে। আমরা আমাদের স্বার্থে শিশু কে ব্যবহার করতে চাই। আমরা অতৃপ্ত স্বপ্ন সন্তানের উপর জোর করে চাপিয়ে দিতে চাই। শিশুকে তাঁর স্বপ্নের সমান বড় করতে হবে। এখানে কেবল স্বপ্ন বাস্তবায়নের পরিবেশ করে দিবেন অভিভাবরা। শিশুকে মানবিক দায়বদ্ধশীল শিশু হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

.
খেলাঘরের প্রেসডিয়াম সদস্য অধ্যাক ড. আবু সাঈদ বলেন, আমাদের বাবা মা আমাদের দুধে ভাতে গড়ে তুলতে চান। এটি একটা দুষ্টবৃত্ত। যা থেকে বের হতে পারছি না। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে বুঝতে পারলাম যে মানুষ আমাকে শিক্ষিত করেছেন। তাদের তরে আমি। আমার চিন্তা ভাবনা মানুষের স্বার্থে ব্যবহার হবে। নিজের সন্তানকে দুধে ভাতে রাখার দুষ্ট বৃত্ত ভাঙ্গতে হবে।তিনি বলেন, অন্যকে ফাঁসাতে নিজের সন্তানকে মারছি। অন্যকে শাস্তি দেয়া বা পরাজিত করার মানুষিকতা কখনও মনুষত্বে শিক্ষা হতে পারে না। অন্যকে হেয় পতিপন্ন করা থেকে বের হয়ে আসতে হবে । আপনার শিশু অন্য শিশু থেকে বড় ভাববেন না। বড় ভাবার শিক্ষা দিবেন না। আজকের সমাজ ব্যবস্থায় নিজেকে বড় ভাবার প্রতিযোগিতা চলছে। যা শিশুদের সংকীর্ণ করে তুলছে। সমাজ যে নেতিবাচক শিক্ষা দিচ্ছে তা থেকে বের হতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, আমরা উন্নয়নে অগ্রযাত্রায় আসীন হয়েছি তবে কিছু ক্ষেত্রে আরো অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন। আমরা যান্ত্রিক মানুসিকতার মধ্যে অবস্থান করছি। আমরা শিশুদের উচ্চ শিক্ষার প্রতিযোগিতা করাতে গিয়ে মন মানুনিকতার দিক দিয়ে পিচিয়ে পড়ছি। প্রযুক্তির যাঁথাকলে আবদ্ধ করছি। এটার পরিবর্তন দরকার।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মুতিউর রহমান বলেন, আমরা দীর্ঘদিন পরাধিনতার শৃংখলে বন্ধি ছিলাম। আমরা যুদ্ধকরে দেশ স্বাধীন করেছি। এখনও বিভিন্ন অরাজকতায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে দেশ। খেলাঘরের আজকের শিশুরা হবে অরাজকতা ভাঙ্গার যোদ্ধা।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মাহবুবুর রহমান, বাদল রায়, বিধান চন্দ্র দেব, শাখাদাত হোসেন, জেলা শাখার সহ সভাপতি অ্যাড. অলক ঘোষ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু আহমেদ।

.
দুপুরের পরে আসরের বিভিন্ন উপজেলা ও শাখা ইউনিটকে নিয়ে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। বিকালে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর