শিক্ষকের অবহেলায় জেডিসি পরীক্ষা দিতে পারেনি দোয়ারার মেধাবী ছাত্রী রুকসানা

প্রকাশিত: ৫:০৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৩, ২০১৯

শিক্ষকের অবহেলায় জেডিসি পরীক্ষা দিতে পারেনি দোয়ারার মেধাবী ছাত্রী রুকসানা

দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি : শিক্ষকের অবহেলায় এক শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারেনি জেডিসি পরীক্ষায়। মেধাবী ওই শিক্ষার্থীর নাম রুকসানা আক্তার। তিনি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের সোনালী চেলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। বিদ্যালয়ের যাতীয় পাওনা পরিশোধ করা স্বত্বেও স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষাবোর্ডে নাম পাঠায়নি রুকসানার। রুকসানার এ ঘটনায় গোটা এলাকায় এখন ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষোভ। রুকসানার সহপাঠি এবং অভিভাবক মহলও স্কুলের এমন দায়িত্বহীনতায় শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

.
এদিকে, রুকসানার জেডিসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে না পারায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এক সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন রুকসানা সোনালী চেলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্রী। কিন্তু জেসিডি পরীক্ষায় ঐ শিক্ষার্থীর এডমিট কার্ড শিক্ষা বোর্ড থেকে আসেনি। ফলে বর্তমানে পরীক্ষা দিতে না পেরে রুকসানা মানসিকভাবে ভেঙে পরে।
বক্তারা আরও বলেন, এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকদের অনিয়ম দূর্নীতি মেনে নেওয়া যায় না। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিও বিদ্যালয়ের অনিয়ম দূর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়ে আসছে। তাই জরুরী ভাবে কমিটি দায়িত্বে অবহেলার জন্য প্রধান শিক্ষক সহ সংশ্লিষ্টদের বিভাগীয় তদন্ত করে বিচারের দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, অভিভাবক সদস্য আব্দুর রব, মনফর আলী, ওয়াহিদ আলী মুক্তার আলী, মাওলানা সেলিম আহমদ, শাকাওয়াত হোসেন কবির, মজমধর আলী, আঃ মজিদ, জমির আলী, ফরহাদ হোসেন, আলীমুদ্দিন, আসিক মিয়।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুকসানা আক্তার বলেন, আমি এবার জেডিসি পরিক্ষার্থী ছিলাম। আমার বাবা গরীব হওয়া সত্বেও আমার পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন। জানিনা কেন শিক্ষকরা আমার প্রতি অবিচার করছেন। আমার জেডিসি পরিক্ষার জন্য আমার নাম বোর্ডে পাঠায়নি, কি ছিল আমার অপরাধ?

.
শিক্ষার্থীর বাবা কউছর আহমদ জানান, গত বছর আমার মেয়ে অ্যাপেনডিসাইটিস ব্যথার জন্য পরিক্ষা না দিতে পারলেও এবছর আমার মেয়ে পরিক্ষার জন্য ভাল প্রস্তুতি নেয়। আমি খুবই আশাবাদী ছিলাম আমার মেয়ে পরিক্ষায় ভাল ফলাফল করবে। শিক্ষকদের রোষানলে পরে আজ আমার মেয়ে পরিক্ষা দিতে পারে নাই। আমি প্রধান শিক্ষক সহ সকলের দায়িত্বে অবহেলার জন্য বিচার কামনা করি।
ক্লাস শিক্ষিকা তাসলিমা বেগম বলেন, আমার হাতে রুকসানা পরিক্ষার ফি ও এডমিট কার্ডের টাকা দিলে আমি অফিসে জমা দিয়াছি। অফিস সহকারী রুহুল আমিন বলেন আমি রুকসানার নাম জেডিসি পরিক্ষার তালিকায় দিয়েছি। প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম রুকসানার নাম কেটে দেন।

.
প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমার বিদ্যালয়ে জেডিসি পরিক্ষার্থী রুকসানার আক্তারের নাম জেডিসি পরিক্ষার তালিকায় অফিস সহায়ক পাঠায়নি। আমি প্রধান শিক্ষক হিসাবে সবার নাম জানার কথা নয়, অফিসের খাতা পত্র ও তালিকা তৈরীর দায়িত্ব অফিস সহায়কের।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল হেকিম জানান, শিক্ষকদের এমন অবহেলা মেনে নেওয়া যায় না। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মেহের উল্লাহ বলেন, যে শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে নাই তার সম্পুর্ন দায়ভার বিদ্যালয় প্রধানকে নিতে হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর