যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ মণির জন্মদিন আজ

প্রকাশিত: ১:২২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৪, ২০১৯

যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ মণির জন্মদিন আজ

ডেস্ক প্রতিবেদন : যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মণির ৮১তম জন্মদিন। আজ বুধবার (৪ ডিসেম্বর)। দিনটি উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান অধ্যাপক শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

জানা গেছে, শেখ মণির জন্মদিন উপলক্ষে আজ সকাল ১১টায় বনানী কবরস্থানে যুবলীগ প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মণিসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত সকল শহীদদের কবরে পুষ্পার্ঘ অর্পণ, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। দুপুর ২.০০টায় কাকরাইলস্থ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট হল রুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান। সভাপতিত্ব করবেন যুবলীগ চেয়ারম্যান অধ্যাপক শেখ ফজলে শামস পরশ।

বহুগুণে গুণান্বিত এবং বিরল প্রতিভার অধিকারী শেখ ফজলুল হক মণি ১৯৩৯ সালে ৪ ডিসেম্বর টুঙ্গিপাড়ায় ঐতিহাসিক শেখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে। শেখ মণির পিতা মরহুম শেখ নূরুল হক বঙ্গবন্ধুর নিকটতম আত্মীয় এবং ভগ্নিপতি। মা শেখ আছিয়া বেগম বঙ্গবন্ধুর বড় বোন।

শেখ মণি ঢাকার নবকুমার ইনস্টিটিউট থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা পাস করেন। এরপর তিনি জগন্নাথ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পাস করেন ১৯৫৮ সালে। ১৯৬০ সালে তিনি বরিশাল বিএম কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি একজন তেজস্বী ছাত্রনেতা ছিলেন। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট শেখ ফজলুল হক মণি ও তার স্ত্রী বেগম আরজু মণি (বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নি) শাহাদাৎ বরণ করেন।

শেখ মণি ব্যক্তিজীবনে ২ পুত্র সন্তানের জনক ছিলেন। জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ ফজলে সামস পরশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইংরেজিতে মাস্টার্স এবং পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকেও ইংরেজিতে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ব্র্যাক ইউনির্ভাসিটিতে ইংরেজিতে অধ্যাপনা করছেন।যুবলীগের ৭ম জাতীয় কংগ্রেসে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। কনিষ্ঠ পুত্র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস রাজধানীর ধানমণ্ডি, হাজারীবাগ, নিউ মার্কেট (ঢাকা-১২) এলাকা থেকে দুই বারের নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য। তিনি বঙ্গবন্ধু আইজনীবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অন্যতম আইনজীবী ছিলেন।

শেখ ফজলুল হক মণি ’৬০-এর দশকের সামরিক শাসনবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাহসী নেতৃত্বের মাধ্যমে লৌহমানব খ্যাত পাক প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের গদি কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। ১৯৬০-১৯৬৩ সালে তিনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬২ সালে হামুদুর রহমান শিক্ষা কমিশন রিপোর্টের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য তিনি গ্রেফতার হন এবং ৬ মাস কারাভোগ করেন। ১৯৬৪ সালের এপ্রিল মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর আবদুল মোনেম খানের নিকট থেকে সনদপত্র গ্রহণে তিনি অস্বীকৃতি জানান এবং সরকারের গণবিরোধী শিক্ষানীতির প্রতিবাদে ‘সমাবর্তন বর্জন’ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার ডিগ্রি প্রত্যাহার করে নেয়। পরবর্তী সময়ে তিনি মামলায় জয়লাভ করে ডিগ্রি ফেরত পান। ১৯৬৫ সালে তিনি পাকিস্তান নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার হন এবং দেড় বছর কারাভোগ করেন। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনের দায়ে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয় এবং তিনি কারারুদ্ধ হন। এ সময় বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ৮টি মামলা দায়ের করা হয়। ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনের সময় তাকে মুক্তি দেয়া হয়।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শেখ মণির উদ্যোগে ‘মুজিব বাহিনী’ গঠিত হয়। এ বাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে তিনি ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামে হানাদার পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তার সম্পাদনায় সাপ্তাহিক ‘বাংলার বাণী’ পত্রিকা দৈনিকে রূপান্তরিত করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে তিনি ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি তেজগাঁও আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৭৩ সালের ২৩ আগস্ট তিনি ‘সাপ্তাহিক সিনেমা’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯৭৪ সালের ৭ জুন তার সম্পাদনায় দৈনিক বাংলাদেশ টাইমস প্রকাশিত হয়। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) গঠিত হলে তিনি এর সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মনোনীত হন। তার রচিত গল্পের সঙ্কলন ‘বৃত্ত’ ১৯৬৯ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। তার রচিত বেশ কিছু রাজনৈতিক উপন্যাস পাঠক সমাজে সমাদৃত হয়েছে। একটি উপন্যাস অবলম্বনে ‘অবাঞ্চিতা’ নামে একটি জনপ্রিয় টেলিফিল্মও তৈরি হয়েছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর