সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত আ.লীগ, নেতা নির্বাচন ২১ ডিসেম্বর

প্রকাশিত: ১১:৩১ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯

সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত আ.লীগ, নেতা নির্বাচন ২১ ডিসেম্বর

ডেস্ক প্রতিবেদন : আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় উৎসব জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত। আগামীকাল সকাল ১১টায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সম্মেলন শুরু হবে। দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রথম দিনে থাকছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। সম্মেলন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশপাশে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
.
দ্বিতীয় দিন ২১ ডিসেম্বর শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইইবি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে কাউন্সিল অধিবেশন। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। এই অধিবেশনে কাউন্সিলররা তাঁদের নেতা নির্বাচন করবেন। সারা দেশ থেকে আসা সাড়ে সাত হাজার কাউন্সিলর
.
পরবর্তী তিন বছরের জন্য নির্বাচন করবেন আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃত্ব। রীতি অনুযায়ী কাউন্সিলররা প্রথমে সভাপতি নির্বাচন করবেন। সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা পুনর্নির্বাচিত হবেন—এমনটাই জানিয়েছেন দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। সভাপতি নির্বাচনের পর কাউন্সিলররা সাধারণ সম্পাদকসহ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের ভার তুলে দেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কাঁধে। সে ক্ষেত্রে এই অধিবেশনে সাধারণ সম্পাদকসহ বেশির ভাগ নেতার নাম ঘোষণা করা হবে।
.
আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্মেলনের সব কাজ শেষ করা হয়েছে। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পদ্মা সেতুর পাটাতনে নৌকার আদলে তৈরি হয়েছে মঞ্চ। সম্মেলন সফল করতে গঠিত উপকমিটিগুলো তাদের কাজ শেষ করেছে। দলের গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র এবং পোস্টার ছাপা হয়েছে। অতিথিদের দাওয়াত দেওয়ার কাজ চলছে।
.
আওয়ামী লীগের এবারের জাতীয় সম্মেলনের স্লোগান ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে গড়তে সোনার দেশ, এগিয়ে চলেছি দুর্বার, আমরাই তো বাংলাদেশ।’ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর প্রাক্কালে অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের এই জাতীয় সম্মেলনকে সফল করতে গত প্রায় চার মাস ধরে কাজ করছেন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। এর আগে অক্টোবরে এ সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত ছিল। তার আগেই প্রস্তুতি শুরু হয়।
.
জাতীয় সম্মেলনের অভ্যর্থনা উপকমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘জাতীয় সম্মেলনের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ। আশা করি আমরা সুশৃঙ্খল পরিবেশে এই অনুষ্ঠান শেষ করতে পারব। সে জন্য দলের নেতাকর্মীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একযোগে কাজ করছে।’
.
এই সম্মেলনে ৪০ হাজার নেতাকর্মীকে মোরগ পোলাও খাওয়ানোর প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। খাবারের দায়িত্বে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তিনি বলেন, ‘আট বিভাগের জন্য ১০টি আলাদা বুথে নেতাকর্মীদের খাবার সরবরাহ করা হবে। এ জন্য স্লিপের ব্যবস্থা রয়েছে। সম্মেলনে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় এবং সুষ্ঠুভাবে খাবার বিতরণের জন্য দুই হাজার দলীয় স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবেন।’
.
জানা গেছে, এবারের প্যান্ডেল অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে বড় করা হয়েছে। ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪০ ফুট প্রস্থ প্যান্ডেলের উচ্চতা করা হয়েছে ২৮ ফুট। এতে ৭৭টি চেয়ার রাখার প্রাথমিক পরিকল্পনা রয়েছে। গোটা সম্মেলন স্থলজুড়ে ২৮টি এলইডি পর্দায় অনুষ্ঠান দেখা যাবে। কাউন্সিলর সাড়ে সাত হাজার, ডেলিগেটস ১৫ হাজার ও অতিথিদের জন্য মোট ৩৫ হাজার চেয়ার রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর এসব কাউন্সিলর, ডেলিগেট ও অতিথিদের প্রবেশের জন্য পাঁচটি গেট করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ভিআইপিদের জন্য একটি গেট সংরক্ষিত থাকবে। কাউন্সিলর, ডেলিগেটস ও অতিথিদের পাটের ব্যাগ উপহার দেবে আওয়ামী লীগ। ওই ব্যাগে একটি স্মরণিকা, দপ্তর সম্পাদকের পাঠের জন্য শোক প্রস্তাব এবং সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ভাষণ থাকবে।
.
সম্মেলনের জন্য গঠিত সাংস্কৃতিক উপকমিটির সদস্যসচিব ও আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল বলেন, ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের নেতৃত্বে এই প্রজন্মের শিল্পীরা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে জাতীয় ও দলীয় সংগীত পরিবেশন করবেন। সেখানে সম্মিলিত কণ্ঠে দুই থেকে তিনটি দেশাত্মবোধক গানও পরিবেশন করা হবে। সেই সঙ্গে শামীম আরা নীপা ও শিবলীর নেতৃত্বে গীতি নৃত্য নাট্য আলেখ্য মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক এই আয়োজন থাকবে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট। প্রথম দিন জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধনের পর সন্ধ্যায় রয়েছে দেশবরেণ্য শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নেতাকর্মীরা এই সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা উপভোগ করতে পারবেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর