সাধারণ সম্পাদক নিয়েই সবার কৌতূহল

প্রকাশিত: ২:০৯ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২১, ২০১৯

সাধারণ সম্পাদক নিয়েই সবার কৌতূহল

ডেস্ক প্রতিবেদন : শুরু হয়েছে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা দেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের দু’দিনব্যাপী ২১তম জাতীয় কাউন্সিল। শুক্রবার সম্মেলন উদ্বোধন করেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ সকাল ১০টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেখানে আওয়ামী লীগের আগামী নেতৃত্ব নির্ধারণ করবেন ৭ হাজার ৭৩৭ কাউন্সিলর।

সভাপতি পদে শেখ হাসিনাই থাকছেন-তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে দলমত নির্বিশেষে সবার কৌতূহল সাধারণ সম্পাদক পদে কে আসছেন। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরই থাকছেন, নাকি অন্য কেউ আসছেন- তা দলটির প্রায় সব পর্যায়ের নীতিনির্ধারকরা একেবারেই অন্ধকারে। শুধু তাই নয়, নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে কারা আসছেন অথবা বর্তমান কমিটির কাদের বাদ দেয়া হচ্ছে সে ব্যাপারেও তেমন কোনো সুনির্দিষ্ট ধারণা নেই নীতিনির্ধারকদের। তবে সবকিছু স্পষ্ট হতে অপেক্ষা করতে হবে আজকে কাউন্সিল অধিবেশন শেষ হওয়া পর্যন্ত।

শীর্ষ নেতারা বলছেন, গত তিনটি সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে কিছু পরিবর্তন এলেও এবার বেশ কিছু ক্ষেত্রে রদবদলের খবর পাওয়া যাচ্ছে। নিষ্ক্রিয় ও বিতর্কিতদের কমিটি থেকে বাদ দেয়া হবে। সে ক্ষেত্রে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসবে নতুন মুখ। তবে দলের দ্বিতীয় শীর্ষপদ সাধারণ সম্পাদক কে আসছেন, সেই আলোচনাই এখন রাজনৈতিক অঙ্গনসহ দেশের সব মহলে। সম্মেলনস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে শুরু করে রাস্তার পাশের চায়ের দোকান, পত্রিকার পাতায়, টেলিভিশনের স্ক্রিনে, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একই আলোচনা- সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক যুগান্তরকে প্রায় এ ধরনের তথ্য দিয়ে বলেছেন, সাধারণত জাতীয় সম্মেলনের ৩-৪ দিন আগে থেকেই দলের সাধারণ সম্পাদক পদে কে আসছেন তা প্রায় নিশ্চিত হওয়া যেত।

কিন্তু এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। নানা আলোচনায় ঘুরেফিরে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সম্ভাবনার কথা বলা হলেও কেউই বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারছেন না। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরাও এ ব্যাপারে একেবারেই নীরব ভূমিকা পালন করছেন। তাদের মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীনের মৃত্যুর পর থেকে মর্মাহত হয়ে আছেন। এ কারণেই আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পদে কে আসছেন, তার কোনো পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে না।

তবে সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদের ছাড়া যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন- সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আইন সম্পাদক ও গণপূর্তমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি দেখতে গিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসছে কিনা জানতে চাইলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমকে বলেন, এ বিষয়টা নেত্রী আর আল্লাহ জানেন। আমি কিছু জানি না।

নতুন কমিটি নিয়ে আলাপকালে আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, এটা একান্তই আমাদের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এখতিয়ার। যারা কাউন্সিলর, আমরা যারা থাকব, আমরা প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানকেই এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে অনুরোধ করব।

কারণ তিনি তার দীর্ঘ ৩৮ বছরের পথচলার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে দেখেছেন, বুঝেছেন, পর্যবেক্ষণ করেছেন। এর থেকে বেশি পর্যবেক্ষণ এ দলের মধ্যে আর কারও নেই বরং তিনি অতীতে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা সঠিক ছিল। দলকে গতিশীল করার ক্ষেত্রে যুগোপযোগী ছিল। সভানেত্রী যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই চূড়ান্ত বলে দলের সবার কাছে বিবেচিত হবে।

এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ১০ জন। সবচেয়ে বেশি চারবার করে হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিল্লুর রহমান। তাজউদ্দীন আহমদ তিনবার, আবদুর রাজ্জাক ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী দু’বার করে। এছাড়া প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক, আবদুল জলিল এবং ওবায়দুল কাদের একবার করে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সূত্র : যুগান্তর।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর