ঢাকা ১৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৪০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯
বানিয়াচং প্রতিনিধি : পিতার সফলতার পথ ধরে ১৫ বছর ধরে সবজি চাষে স্বাবলম্বী বানিয়াচংয়ের মোহাম্মদ আলী। আশপাশের লোকজনের কাছে সফল চাষি হিসেবে এক নামে পরিচিত। তিন একর বর্গা জমিতে লাউ, টমেটো, বাঁধা কপি, করলা ও খিরার অভ‚তপূর্ব ফলনের দৃশ্যে চোখ জুড়িয়ে যায়। মাচার নিচ দিকে হাজার হাজার লাউ ঝুলে থাকার অপরূপ সৌন্দর্যে যে কারো নজর কাড়বে। পরিশ্রম ও ইচ্ছাশক্তি দিয়ে ঢেলে সাজিয়েছেন সবজির বাগান। প্রতি বছরই বাড়তে থাকে চাষকৃত জমির পরিধি।
মোহাম্মদ আলী বানিয়াচং উপজেলা সদরের মজলিশপুর গ্রামের আমীর আলীর পুত্র। ৮ ভাই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। লেখাপড়ায় প্রাইমারির গন্ডি না পেরোলেও ভাই বোনদের উচ্চ শিক্ষায় প্রতিঙ্গাবদ্ধ। এক ভাই ইংরেজি বিভাগে অনার্স লেভেলে পড়ছে। বাকিরা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। মাত্র ১২ বছর বয়সে বাবার সঙ্গে সবজি চাষের পেশায় যোগ দেন মোহাম্মদ আলী। পরিবারের ভরণপোষণ ও লেখাপড়ার যাবতীয় ব্যয় বহনের প্রধান উৎস তার সবজি চাষের আয়।
সরেজমিন দেখা যায়, বানিয়াচং আইডিয়াল কলেজ ক্যাম্পাস সংলগ্ন প্রায় তিন একর বর্গা জমিতে এবার আগাম জাতের লাউ, বাঁধাকপি, টমেটো, খিরা, করলা, চিচিঙ্গাসহ সাত থেকে আট রকমের সবজির চাষ। শীতকালীন ছাড়াও সারা বছরই মৌসুমি সবজি চাষে ব্যস্ত থাকতে হয় মোহাম্মদ আলীকে। তার দেখাদেখি সবজি চাষে এলাকার দশ থেকে ১৫ জন তরুণ উদ্যোক্তাও সৃষ্টি হয়েছে। মোহাম্মদ আলী জানায়, আমার জন্মের পূর্ব থেকেই বাবা ধান চাষের সঙ্গে সবজিও চাষ করতেন।
বাবার কাছ থেকে চাষের সব নিয়মকানুন ও পদ্ধতি শিখেছি। বর্তমানে আমি নিজে ১৫ বছর ধরে ফসল ফলাই। বাবাকে এখন কাজ করতে দেই না। নিয়মিত চার থেকে পাঁচজন শ্রমিক নিয়ে সারা দিন কাজ করি। ফসলের ভালো ফলনে ক্ষতিকর সার বা অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে স্বাস্থ্যকর ও রাসায়নিকমুক্ত আমার সবজির বাগান। এ কারণে আশপাশের এলাকাসহ দুরের গ্রামের লোকজন বাগান থেকে সবজি কিনতে আসেন। এবার ফলন হয়েছে, দামও ভালো। আশা করি আল্লাহর রহমতে লাভবান হব। এ অঞ্চলে এক সময় সবজি চাষে কেউ উদ্বুদ্ধ হতো না। এখনঅনেকেই এ পেশায় ঝুঁকছে। এলাকাটি এখন সবজির জোনে পরিণত হয়েছে।
সমস্যার কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয় না। রোগ বালাইয়ের আক্রমণ সহজে বোঝা যায়। ক্ষতির সম্ভাবনাও কম। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া সবজি নষ্ট হয় না। কিন্তু আশানুরূপ ফলন হলে সবজির দাম অনেক নিচে নেমে যায়। গ্রাম এলাকায় বড় আড়ত না থাকায় বাজারজাত করতে অনেক বেগ পেতে হয়। মজুদ ব্যবস্থার অভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
বানিয়াচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. দুলাল উদ্দিন জানান, মোহাম্মদ আলী একজন সফল ও স্বাবলম্বী চাষি। মাঝে মধ্যে তার বাগান পরিদর্শন করি। তার সফলতা দেখে এলাকায় দিন দিন কৃষি উদ্যোক্তার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরামর্শসহ তার যেকোনো সমস্যায় সহযোগিতা করতে কৃষি কর্মকর্তারা এগিয়ে যান।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech