ঢাকা ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:২৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৯, ২০১৮
সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সীমান্ত ঘেষা মেঘালয় পাহাড় সংলগ্ন শহীদ সিরাজ লেক (চুনাপাথর খনিজ প্রকল্পের পরিত্যাক্ত কোয়ারী)-টি আকর্শণীয় হয়ে উঠেছে দিন দিন। এবার এই লেকের টানে আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে আকর্শণে জনপ্রিয় ইত্যাদির পরিচালক এবার তাহিরপুরে শহীদ সিরাজ লেকের পারেই ধারণ করছেন বহুল জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর সেনানীদের কবর আছে পাশেই, আর নিজস্ব স্বকীয়তায় সবুজ বনানী, উঁচু নিচু পাহাড়ী, টিলা ও মেঘালয় পাহাড় নিয়ে যেন এর সৌন্দর্য্য আরো আকর্শণীয় করে তুলছে পর্যটকদের কাছে। আর এই সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে এই লেকটির নাম ভিন্ন ভিন্নভাবে ফেইসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে দেখার আগ্রহ বাড়ছে। এই লেক সম্পর্কে জানতে ও সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে প্রতিদিনি ছুটে আসছেন হাজার হাজার সৌন্দর্য্য পিপাসী দর্শনার্থী।
প্রথমে এখানে এসে পর্যটকগণ নিজেরাই কেউ নিলাদ্রী লেক, কেউ বলছেন বাংলার কাশ্মির আবার কেউ বলছেন তাহিরপুর সীমান্ত লেক। আর স্থানীয়রা পাথর কোয়ারী নামে স্থানটিকে ভাইরাল করছেন। কিন্তু এই লেকের পাশের চির নিন্দ্রায় শায়িত আছেন বাংলা বীর সেনানীগণ, তাদের মধ্যে শহীদ সিরাজ অন্যতম। লেক সংলগ্ন তার সমাধি দেখতে আসেন অনেক পর্যটক। তাই স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসীর দাবী ইত্যাদিতে যেন এই লেকটিকে শহীদ সিরাজ নামে প্রচার করা হয়।
জানাযায়, এই লেকটি উপজেলার সীমান্তবর্তী উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ট্যাকেরঘাটে মেঘালয় পাহাড় সংলগ্ন স্থানে অবস্থিত। সীমান্তবর্তী ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্পের পরিত্যাক্ত এই কোয়ারীটি ১৯৪০সালে চুনাপাথর সংগ্রহ শুরু করে। এখান থেকে চুনাপাথর সংগ্রহ করে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় নির্মিত আসাম বাংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটানো হত। ১৯৪৭সালে দেশ ভাগের পর বিভিন্ন সমস্যা ও ব্যয় বৃদ্ধি দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় এর সকল কার্যক্রম। পরে ১৯৬০সালে সিমেন্ট ফ্যাক্টরী চালু রাখার জন্য চুনা পাথরের প্রয়োজনে ভূমি জরিপ চালিয়ে সীমান্তবর্তী ট্যাকেরঘাট এলাকায় ৩২৭একর জায়গায় চুনাপাথরের সন্ধান পায় বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৬সালে খনিজ পাথর প্রকল্পটি মাইনিংয়ের মাধ্যমে র্দীঘদিন পাথর উত্তোলন করে। এরপর ১৯৯৬সালে এই প্রকল্পটি একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোয়ারী থেকে চুনাপাথর উত্তোলন বন্ধ করে দেয়।
পানি জমে একসময় কানায় কানায় পরিপূর্র্ণ হয়ে উঠে এই গভীর কোয়ারী। ছড়িয়ে দেয় তার সৌন্দর্য্য। পর্যটকদের কাছে একটি আকর্শণীয় লেক হিসেবে রূপ পায়। প্রকৃতির এই অপরূপ লীলা স্বচক্ষে দেখতে প্রতিদিনই ছোটে আসেন হাজার হাজার দর্শনার্থী। তবে, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না হওয়ায় পর্যটকদের কাছে এর নিজস্ব সৌন্দর্য্য অনেকটা অধরা রয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূনেন্দ্র দেব জানান, শহীদ সিরাজ লেক হিসেবে ইত্যাদিতে প্রচার হবে লেকটি। সেইভাবে ইত্যাদি কর্তৃপক্ষ অনুমতি নিয়েছে। অনেক পর্যটক এখানে আসতে চাইলে নামের কারণে স্থানীয় লোকজন লেকটি চিনিয়ে দিতে পারে দোটানায় পড়েন। তবে, ইত্যাদিতে এর নাম প্রচার হলে স্থানীয়রাসহ আগত পর্যটকরাও বিভ্রান্তির শিকার হবেন না। ইত্যাদির মাধ্যমে এলাকাটা যেমন পরিচিতি পাবে, তেমনি সবাই লেকটির নাম সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech