সুনামগঞ্জে কন্যা সন্তানকে খুনের দায়ে পিতার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ৫:০৬ অপরাহ্ণ, মে ৫, ২০১৯

সুনামগঞ্জে কন্যা সন্তানকে খুনের দায়ে পিতার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের বেড়াজালি বাজারের হাওরের কিত্তায় ৬ মাসের কন্যা সন্তান রিনা বেগমকে খুনের দায়ে পাষন্ড পিতা মোস্তাক আহমদ চৌধুরীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে এই রায়ে ১০ হাজার অর্থ দণ্ড অনাদায়ে আরও দুই মাসের স্বশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

রোববার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় প্রদান করেন।

আদালত সুত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জের বাসিন্দা ঘাতক মোস্তাক চৌধুরী সিলেট ঝর্নারপাড়স্থ বাবুলের কলোনীতে থাকাবস্থায় জনৈক বিধবা রাবেয়াকে বিয়ে করতে চান। এতে বাধা দেন তার স্ত্রী। ক্ষীপ্ত হয়ে মোস্তাক একই সাথে স্ত্রী সন্তানকে খুন করার ফন্দি আটতে থাকেন। এক পর্যায়ে স্ত্রী সন্তানদের সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসার কথা বলে সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের বেড়াজালি বাজারের কাছে বেড়াজালি হাওরের কিত্তায় তাদের খুন করার চেষ্টা করেন। ঘটনার সময় স্ত্রীসহ অন্যান্য সন্তানরা বেঁচে গেলেও রিনা বেগম (৬মাস) নামের কন্যা সন্তানটি ঘটনাস্থলেই মারা যায়। ১৯৯৮ সালের ২৩ নভেম্বর রাত ৯টায় এমন ঘটনার জন্ম দেয় পাষণ্ড মোস্তাক। নিজ ঔরষজাত সন্তান রিনা বেগম (৬মাস) কে মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে ছুরিকাঘাত ও আছড়ে ফেলে খুন করে সে। এ সময় আরও দুই সন্তান খোদেজা, সাইদুর এবং স্ত্রীকে ছুরি দিয়ে বুকে পিঠে আঘাত করে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই শিশু রিনা মারা যায়। গুরুতর আহত দুই সন্তান ও স্ত্রীকে স্থানীয়রা সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান এবং নিহত শিশুর লাশ স্থানীয় ইউপি সদস্য ও দফাদারের সহযোগিতায় থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশের সুরতাহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।

এ ঘটনায় পরদিন সকালে সুনামগঞ্জ সদর থানায় স্ত্রী বাদী হয়ে ঘাতক মোস্তাক আহমদ চৌধুরী ওরফে মুস্তাকিম ওরফে হান্নানকে আসামী করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করেন। যার মামলা নং ২১, তারিখ. ২৪/১১/৯৮। জিআর মামলা নং ২৪৫/১৯৯৮(সদর) এবং দায়রা মামলা নং ৩৫/৯৮। ঘাতক পিতা মোস্তাক আহমদ চৌধুরী জেল হাজতে আছেন। রোববার এই মামলার রায় প্রদান করে আদালত তাকে যাবজ্জীন কারাদণ্ডাদেশ দেন।

আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মতিলাল দাস এবং রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সোহেল আহমদ ছইল মিয়া।

রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি সোহেল আহমদ ছইল মিয়া দণ্ডাদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘাতক পিতা মোস্তাক চৌধুরী ওরফে মুস্তাকীম ওরফে হান্নানকে সাক্ষ্য প্রমানাধির ভিত্তিতে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ের আরও দুই মাসের স্বশ্রম দণ্ডাদেশ দিয়েছেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর