কুলাউড়ায় সম্মেলন ১০ নভেম্বর : গুরুত্ব বাড়ছে কাউন্সিলরদের

প্রকাশিত: ৯:৩৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৬, ২০১৯

কুলাউড়ায় সম্মেলন ১০ নভেম্বর : গুরুত্ব বাড়ছে কাউন্সিলরদের

স্বপন দেব, মৌলভীবাজার : ১৫ বছর পর কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ১০ নভেম্বর। দলের এই সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীরা বেশ চাঙ্গা। দলীয় পদ পেতে নেতারা ছুটছেন নেতাকর্মীদের বাড়ি অর্থাৎ বিভিন্ন ইউনিয়নের কাউন্সিলরদের কাছে। রাজনৈতিক সচেতন এলাকা হিসেবে পরিচিত কুলাউড়া উপজেলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সুসংঘটিত ও বৃহৎ দল। সম্মেলনকে ঘিরে তাই ব্যস্ত কুলাউড়ায় ছাত্রলীগ নেতা, দেখা পেলে বলেন ভাই আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে খুবই ব্যস্ত। যুবলীগতো আরও মহাব্যস্ত। ঘুম নেই খাওয়া দাওয়া সঠিক মত করতে পারছেন না নেতারা। আর আওয়ামী লীগ নেতাদের যেন কথা বলার সুযোগ নেই। নেতারা ছুটছেন বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির নেতাদের কাছে। আসন্ন সম্মেলনে অনেকে আবার অর্থের বিনিময়ে পদ পাবারও তদবির করছেন বলে জানা গেছে।
এর আগে ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়। এরপর কমিটির অনেক দায়িত্বশীল পদের লোকজন মারা গেছেন। আবার অনেকে প্রবাসে গেড়েছেন স্থায়ী নিবাস। ফলে বিগত কমিটির সিংহভাগ নেতাদের কোন অস্থিত্ব নেই। এরমধ্যে দলের বয়ে গেছে অনেক ঝড়ঝাপটা। একটা সময় দলীয় কোন্দলে বিপর্যস্থ ছিলো দলের অবস্থা। সমস্ত প্রতিকূলতা কাটিয়ে আওয়ামী লীগ যেন নতুন করে জেগেছে। সর্বত্রই সাজ সাজ রব। আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে কারা আসছেন নতুন নেতৃত্বে নাকি পুরাতনেই আস্থা রাখছে কেন্দ্র। দলের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী আছে আবার প্রার্থী নেই এমন খেলা চলছে সর্বত্র। নেতাদের জিজ্ঞেস করলে বলেন, দলের কাউন্সিলররা এবং জেলা ও কেন্দ্র যে দায়িত্ব দেবে, সেই দায়িত্ব পালন করবো। এমন কথা এর আগে বললে দল আরও সুসংগঠিত হতো বলে তৃণমুল নেতাকর্মীরা জানান।
দলের সম্মেলন নিতে সবচেয়ে বেশি সোচ্ছার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক। সেখানে বিজ্ঞাপন দিয়ে জুনিয়র নেতারা বড় ভাইকে সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক পদে দেখতে চাই বলে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। তৃণমুল নেতাকর্মী ও নামপ্রকাশ না করার শর্তে বর্তমান কমিটির অনেকেই জানান, তারা চান দলে অনুপ্রবেশকারীদের যেকোন মুল্যে ঠেকানো। এছাড়া সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা ধানের শীষের পক্ষে কাজ করেছেন, তাদের চিহ্নিত করে দলের সাথে বিশ^াসঘাতকদের বাদ দিয়ে নিবেদিত প্রাণ কর্মীরা যাতে স্থান পায় কমিটিতে। তবে যে যাই বলুক না কেন- দলের জন্য সবচেয়ে নিবেদিত প্রাণ ও দু:সময়ের কান্ডারি কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রেনুর অবদানের কথা নেতাকর্মীরা স্বীকার করছেন নির্দ্বিধায়। তিনি বিগত ১৯৭৩ সাল থেকে ২৮ বছর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। দলের সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক পদে তাকে মেনে নিতে কারো কোন দ্বিমত লক্ষ্য করা যায়নি।
এছাড়া দলের সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন, লন্ডন প্রবাসী মোস্তফা আব্দুল মালিক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান শফি আহমদ সলমান রয়েছেন আলোচনা।
সাধারণ সম্পাদক পদে নেতাকর্মীরা বা কর্মিসমর্থকরা যাদের দেখতে চান কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমেরিকা প্রবাসী তোফায়েল আহমেদ, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক ফজলু, কেন্দ্রিয় কৃষক লীগ নেতা শফিউল আলম শফি, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কামাল হাসান, সাবেক কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আসম কামরুল ইসলাম ও উপজেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহবায়ক সিপার উদ্দিন আহমদ।
ইতোমধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় যেসব উপজেলায় আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে, সবক’টি উপজেলায় সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে কেন্দ্র থেকে ঘোষিত নাম নির্ধারিত হয়ে এসেছে। ফলে কুলাউড়া উপজেলায়ও প্রার্থীরা কাউন্সিলদের চেয়ে পদ পেতে জেলা ও কেন্দ্রে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে আর্থিক লেনদেন করে পদ লাভের জন্য চেষ্টা তদবিরও চালিয়ে যেতে শোনা গেছে।
দলের সম্মেলন প্রসঙ্গে কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রেনু জানান, দলের সম্মেলন যাতে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় সেজন্য ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে বর্ধিত কর্মীসভা হয়েছে এবং হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও এর সকল অঙ্গসঙ্গঠন যাতে ঐক্যবদ্ধ থেকে সম্মেলনকে সফল করে সেজন্যে সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। নিজের প্রার্থীতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কাউন্সিলররা, সেই সাথে জেলা ও কেন্দ্র আমাকে যে দায়িত্ব দেবে, সে দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে কাজ করে যাবো।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর