তাহিরপুর উপজেলায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাজারে ময়লার ভাগাড়

প্রকাশিত: ২:৪৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০২০

তাহিরপুর উপজেলায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাজারে ময়লার ভাগাড়

তাহিরপুর প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাট বাজারের পয়েন্ট থেকে ইউনিয়ন পরিষদ সড়কের প্রবেশমুখ। বাদাঘাট হরমানীয়া আওয়ামী দাখিল মাদরাসা ও বাদাঘাট বাজার জামে মসজিদ, বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়। তাছাড়া বাদাঘাট সরকারি প্রাথকি বিদ্যালয়ের মূল গেইটের সামনের খোলা অংশটি ও স্কুল মাদরাসার বাউন্ডারীর ভিতর ময়লা আবর্জনায় সয়লাব হয়ে গেছে।
এ যেন দেখার কেউ নেই? এই ময়লা-আবর্জনার আর দুর্গন্ধে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজার হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ, অভিভাবক, পথচারীসহ এলাকাবাসীকে। পাশাপাশি, তাদেরকে পড়তে হচ্ছে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। বাদাঘাট বাজারে পয় নিস্কাশনের জন্য ডাস্টবিন ও সুষ্ঠ ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বাজারের পরিচন্ন কর্মীরা ও ব্যবসা প্রতিষ্টানে সকল ময়লা আর্বজনা ওই রাস্তার দুই পাশসহ স্কুল মাদরাসার মূল গেইটের সামনে ও বিতরে ফেলার কারনে হাজার হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ বাজারে আগত জনসাধারণের দূর্গন্ধে অতি কষ্টেও বাধ্য হয়েই ওই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে।
এমনকি এই ময়লা-আর্বজনার দূর্গন্ধে এখন বাদাঘাট রহমানীয়া আলীয়া দাখীল মাদরাসার ক্লাস কারও এখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। একটু বৃষ্টি হলে ওউ রাস্তাটি কাদা জলে হাটু পাতি ঠইটুম্বুর হয়ে পরে। স্কুল মাদরাসার গেউটের সমানে পচা দূর্গন্ধ যুক্ত ময়লা অর্বজনা ফেলার কারেন সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত প্রায় অর্ধমতাধিক বেওয়ারিশ কুকুরে উপদ্রুপ চোখে পড়ার মত।

যার ফলে ওইসব বেওয়ারিশ কুকুর অতঙ্কে রয়েছে স্কুল মাদরাসার কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীসহ শিক্ষক গন। অথচ, এই এলাকায় রয়েছে, বাদাঘাট পুলিশ ফাড়িঁ, বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ, বাদাঘাট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বাদাঘাট জামে মসজিদ. আলীয়া মাদরাসা, বাদাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় সহ অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সরকারী-বেসরকারী অফিস থাকার কারণে বাদাঘাট বাজারের ওই এলাকা অতি গুররুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচিত হয়। শনিবার সরেজমিনে ঘুরে জানাযায়, সুনামগঞ্জ জেলা সদরে পর জেলার সর্ববৃহৎ বাজার ও বাণিজ্যিক এলাকা বাদাঘাট।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় কতিপয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসা-বাড়ির ময়লা নিয়মিতই এখানে ফেলা হয়। বিশেষ করে, রাতের বেলাই ময়লা ফেলা হয় বেশী। যারা ময়লা ফেলে, বাদাঘাট আওয়ামী রহমানীয়া দাখীল মাদরাসার ভারপ্রপ্ত সুপার তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করাসহ, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও বাদাঘাট বণিক সমিতির সভাতি ও সম্পাদকে বারবার জানানোর সহ তাদেরকে একাধিকবার মাদ্রসা ও স্কুল কর্তৃপক্ষ নিষেধ করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাদের উল্টো প্রশ্ন, এখানে ময়লা না ফেললে, তা ফেলব কোথায়? বাজারের আর কোথাও তো ময়লা ফেলার জায়গা নেই।
বাদাঘাট রহমানীয়া আওয়ামী দাখিল মাদরাসার বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হয়। বাতাসের মাধ্যমে এই দুর্গন্ধ বিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও চলে আসে।
অথচ, এসব ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা যাদের দায়িত্ব, তারা একেবারে নির্বিকার। কয়েকজন পথচারী বলেন, স্থানটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হওয়ায় এর পাশ দিয়ে যাতায়াত করা দুরুহ হয়ে পড়েছে। উপজেলার সচেতন মহলের প্রশ্ন, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় ময়লার ভাগাড় তৈরী হলেও এগুলো অপসারণে কর্তৃপক্ষ কেন নিশ্চুপ? তারা মনে করেন, যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে না ফেলে আপাতত ওই জায়গাতেই একটা নির্দিষ্ট বড় গর্ত করে যদি ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়, তাহলে কিছুটা হলেও দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
বাদাঘাট বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি সেলিম হায়দার বলেন, তাহিরপুর উপজেলা অতি গুরুত্বপূর্ণ বাদাঘাট বাজারে এতদিনেও ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা নেই। এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি। তিনি ওইসব ময়লা অপসারনের জন্য উপজেলা পরিষদের ফান্ড থেকে আমাদের ৫০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন। আশা করছি আমরা অচিরেই ওইসব ময়লা স্কুল মাদরাসার সামন ও রাস্তার পাশ থেকে অপসারন করে পেলব। বাদাঘাট রহমানীয় আওয়ামী দাখিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোওলানা তাজুল ইসলাম বলেন, এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা।
প্রতিষ্ঠানটির একেবারে প্রবেশমুখে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় থাকার ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আসা-যাওয়া করতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়ে। শুধু তাই নয়, একটু বৃষ্টি হলেই সেখানে অতিরিক্ত দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। ফলে ক্লাসেও অসুবিধা হয়। এই দূর্গন্ধের কারণে শিক্ষার্থীদের নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হবারও ঝুঁকি রয়েছে। বাদাঘাট হসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমার বলেন, আমরা ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে আছি। বাজারের সব ময়লা আর্বজনা শুধু স্কুল গেইটের সামনেই নয়! এখন স্কুলের বিতরেও ফেলা হচ্ছে। যার কারনে স্কুলের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা এর দূর্গন্ধে বিভিন্ন রোগ বালাইয়ে আসঙ্কায় আছে। আমরা এর দ্রুত প্রতিকার চাই।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণ সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, এটা বাদাঘাট বাসীর র্দীঘদিনের সমস্যা। তবে ইতি মধ্যেই আমি উপজেলা পরিষদ থেকে এর জন্য কিছু টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। স্কুল মাদরাসার সামনে থেকে ওইসব ময়লা আর্বজনা পরিস্কার করার জন্য।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর