তাহিরপুরে খেয়াঘাটের মাঝি আত্মনির্ভরশীল সদর আলী

প্রকাশিত: ৩:০৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১, ২০২০

তাহিরপুরে খেয়াঘাটের মাঝি আত্মনির্ভরশীল সদর আলী

তাহিরপুর সংবাদদাতা: দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট টাংগুয়ার হাওর পাড়ে আশি উর্ধ আত্মনির্ভরশীল ব্যক্তি সদর আলী খেয়াঘাটের মাঝি। তিনি বোঝা হয়ে থাকতে চান না কারো। তাই তিনি গতর কাটিয়ে চলে যেতে চান পরপারে । এই আত্ম নির্ভরশীল ব্যক্তি সদর আলী সুনামগঞ্জ তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের গোলাবাড়ি গ্রামের ছোট্ট কুটিরে ছেলে মেয়ে নিয়ে সংগ্রামী জীবন সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন। চোখে তেমন দৃষ্টি নেই, কানে কম শোনেন । তবুও জীবন যুদ্ধে সফল সৈনিক। কারো করুনা নয়, হাত পেতে গ্রহণ করবেননা কারো সাহায্য। তিনি বলেন আমি সরকারি সাহায্যের উপযুক্ত হলে আমাকে দিবে। আমি কেনো চাইতে যাব?

সুনামগঞ্জ দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট টাংগুয়ার হাওরের প্রবেশ পথে খেয়া পারাপাড় করেই খেয়ে না খেয়ে চলে উনার সংসার।

টাংগুয়ার হাওর পাড়ে গোলাবাড়ি গ্রামে ভাঙ্গা একটি ঘরে সদর আলীর সুখের রং মহল। সদর আলী জীবনের বেশিরভাগ সময় এই নদী ঘাটের খেয়া পারাপার করে জীবনের এই অন্তিম সময় লগ্নে,নেমে আসলো এক ভয়ানক সময়।বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ আকারে আঘাত করেছে ভয়ংকর করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসের আঘাতে অনেক উন্নত দেশ ইতিমধ্যে কাবু হয়ে গেছে। এতে বাংলাদেশে করোনার প্রভাবে পুরো দেশ রয়েছে অলিখিত লকডাউন।

সরেজমিনে দেখাযায় করোনা পরিস্থিতিতে সারা দেশের মানুষ যখন ঘরবন্দী তখনও উনি ক্ষুধার যন্ত্রণায় সাত সকালে বৈঠা হাতে অপেক্ষায় রয়েছেন বৃদ্ধ বয়সী এই সদর আলী। কেউ আসলেই নৌকা বেয়ে পারাপার করবেন।তবে স্থানীয় কিছু লোকজন আসলেও করোনা পরিস্থিতিতে বহিরাগত কেউ আসছে না। বিচ্ছিন্ন ভাবে দুএকজন আসছে।এতেকরে বৃদ্ধবয়সী এই সদর আলী সংসারে নেমে আসে এক চরম দুর্দশা।না পারছে চাউল কিনতে না পারছে ডাউল কিনতে। কোনভাবে খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন করছে।

এই পরিস্থিতিতে নিম্ন ও শ্রমজীবি মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তার বরাদ্দের চাউল আসলেও এই আত্ম নির্ভরশীল ব্যক্তি সফর আলী নাম বরাদ্দের তালিকা উঠেনি ।

স্থানীয়দের তথ্যমতে জানাযায় করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া হতদরিদ্র অসহায় গরিব দুঃখী জন্য যে বরাদ্দের খাদ্য সামগ্রী এসে সেখানে বিতরনের ক্ষেত্রে হয়েছে স্বজন প্রীতি ও অনিয়ম ।

কথা হয় বৃদ্ধ বয়সী এই চাচার সাথে। উনি বলেন, বাবারে এই শেষ বয়সে সবকিছু হারাইয়া পেটের ক্ষিধায় বাঁচাতে সকালে খেয়া ঘাটে মানুষ পার কইরা যাই পাই,নুন ভাত খেয়ে না খেয়ে জীবনটাকে বাচাই। কিন্তু এখন তাও সমস্যা। কি এক রোগ আইছে ডরাইয়া কেউ আয়না।মইরা যাইবো। আমিতো রোগে না বাবা, না খাইয়া মইরা যাইমু। মানুষ ভয়ে না আইলে আমি বাচমো কিবায় বাবা। শুনছি সরকার চাউল দিতাছে, কেউ কেউ আনছেও আমারেত দিলনা বাবা। মানুষ আসলে আমাদের মতো মানুষদের কেউই মুল্য দেয়না কথা বলতে বলতে এইখানেই এসে নীরব হয়ে যান বৃদ্ধ বয়সী এই খেয়াঘাটের মাঝি।

বৃদ্ধ বয়সে সদর আলীর নৌকা চালানোর এই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেইজ বুকে ভাইরাল করেন সাংবাদিক আহম্মদ কবির ।

স্থানীয় এনজিও কর্মী ফয়েজ মিয়া বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জনবান্ধব সরকার শেখ হাসিনা জানলে উনাকে একটা ভাল ব্যবস্থা করে দিতেন এটা আমার বিশ্বাস । কিন্তু জানানোর মত কোন মাধ্যম নাই। তাই আত্ম নির্ভরশীল সদর আলীর এই অবস্থা ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ ২৪ খবর