ঢাকা ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:৩৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৮, ২০১৯
ডেস্ক প্রতিবেদন
কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বেসরকারি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা বিষয়ে নেপাল সরকারের প্রকাশিত প্রতিবেদন অস্বীকার করছে না বাংলাদেশ।
তবে, নেপালের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) চাইলে এই দুর্ঘটনা এড়াতে পারত, যেটি এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করেনি দেশটি।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্ঘটনার বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য ও এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন গ্রুপ অব বাংলাদেশের (এএআইজি-বিডি) প্রধান ক্যাপ্টেন সালাহ উদ্দিন এম রহমতউল্লাহ বলেন, ‘আমরা নেপালের প্রতিবেদন অস্বীকার করছি না। ইউএস-বাংলা’র পাইলটের দোষ ছিল। অবতরণের সময় সঠিক পথে তিনি উড়োজাহাজ রাখতে পারেননি। তবে, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসির) চাইলে দুর্ঘটনা এড়াতে পারত।’
তিনি বলেন, ‘এটিসি যখন দেখছে, এয়ারক্রাফট সঠিক পথে নেই, তখন তাদের দায়িত্ব সঠিক নির্দেশনা দেয়া। বড় ভূমিকা রাখা, যাতে দুর্ঘটনা রোধ করা যায়। কিন্তু, দুঃখের বিষয় এটিসি এক্ষেত্রে তেমন ভূমিকা রাখতে পারেনি।’
সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘ফ্লাইট পরিচালনার আগে ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান ধূমপান করেছিলেন। এটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়, নিষেধাজ্ঞাও নেই। তার মৃত্যু সনদে কিন্তু ধূমপানের কোনো প্রভাব পাওয়া যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘পাইলট মানসিকভাবে দুর্বল ছিলেন। উড়োজাহাজ অপ্রোচ মিস করেছিল। তবে এটিসি চাইলে সঠিক নির্দেশনা দিতে পারতো।’
নেপাল সিভিল এভিয়েশন গঠিত তদন্ত কমিটির একমাত্র বাংলাদেশি সদস্য সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘তারা চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরির আগে আমাকে ড্রাফট পাঠান। সেগুলো দেখে আমি বেশকিছু সুপারিশ করেছি। গতকাল (রোববার) ফাইনাল প্রতিবেদন দেয়ার আগেও আমাকে কপি দেয়া হয়। সেখানে আমি আমার সুপারিশ দেখতে পাইনি। এটিসি পুরোপুরি এড়িয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি এটিসির দুর্বলতা ও প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন দিক সুপারিশে তুলে ধরে, তা চূড়ান্ত প্রতিবেদনে অন্তর্ভূক্ত করার অনুরোধ করেছি। এখন সেটি করা না হলে আমরা আইকাওতে অভিযোগ করব।’
সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘নেপালের প্রতিবেদনেই স্পষ্ট, এয়ারক্রাফটে কোনো সমস্যা ছিল না। আবহাওয়া স্বাভাবিক ছিল। এয়ারক্রাফট নিজেই চালাচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন আবিদ এবং এটিসিতে তিনিই কথা বলেন।’
সংবাদ সম্মেলনে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল নাইম হাসান বলেন, ‘আমরা নেপালের প্রতিবেদন অস্বীকার করছি না। তবে এটিসি নিয়ে আমাদের সুপারিশগুলো আসলে প্রতিবেদন পূর্ণতা পেত।’
উল্লেখ্য, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের ড্যাশ-৮ কিউ৪০০ মডেলের প্লেনটি ২০১৮ সালের ১২ মার্চ ৭১ জন আরোহী নিয়ে নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়। এতে পাইলটসহ মোট ৫১ জন নিহত হয়। এর মধ্যে ২৭ জনই বাংলাদেশের।
ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনা তদন্তে নেপাল সরকার ৬ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। বাংলাদেশ থেকেও তদন্তে যুক্ত হয় ৬ সদস্যের একটি দল। ৩৩ বছর পর বাংলাদেশি কোনো প্লেনের এটাই সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা।
সম্পাদক : জে.এ কাজল খান
স্বত্ত্ব: দৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ (প্রিন্ট ভার্সন)
০১৭১৮৩২৩২৩৯
Design and developed by syltech